Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোট না দেয়ায় নির্মম নির্যাতন গ্রাম ছাড়ার হুমকি

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

নির্বাচন শেষ হতে না হতেই প্রতিপক্ষকে দমনের খেলা শুরু করে দিয়েছেন বরগুনার বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার। নির্বাচনে ভোট না দেয়ায় এক দরিদ্র হিন্দু পরিবারসহ একাধিক পরিবারকে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছেন তিনি। গ্রাম না ছাড়ায় পুলিশের উপস্থিতিতেই লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন তিনি। একই সময়ে ভুক্তভোগী পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস ছোট্ট চায়ের দোকানটিও ভেঙে গুড়িয়ে দেন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। এমন অভিযোগে গতকাল সকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নির্যাতনের শিকার ওই যুবক অসীম চন্দ্র শীল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অসীম চন্দ্র শীল জানান, বামনা উপজেলোর রামনা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। রাজধানী ঢাকার একটি সেলুনে নরসুন্দরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার দরিদ্র পিতা বিমল চন্দ্র শীল স্থানীয় বৈকালিন বাজারের একজন ক্ষুদ্র চায়ের দোকানী। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার ও তার ক্যাডার বাহিনী ভোট না দেয়ার অভিযোগ তুলে পরিবারসহ গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিতে থাকেন।
অসীম চন্দ্র শীল আরও জানান, গত ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় বৈকালিন বাজারে ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাইতে নজরুল ইসলাম জোমাদ্দারের সাথে দেখা করতে যান। এসময় চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা মিলে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে অসীমের মাথা ফাটিয়ে দেয়। এসময় প্রতিবেশী জহিরুল ইসলাম উজ্জল ও ফকরুল ইসলাম কমল তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেদম মারধর করে হাত ভেঙে দেয় তারা। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে বামনা থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ওসি মো. বশিরুল আলম।
পরে মাথায় জখম নিয়ে অসীম পার্শ্ববর্তী আরএন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে গেলে সেখান থেকে তাকে ধরে এনে চেয়ারম্যান নজরুল নিজেই লোহার পাইপ দিয়ে পুনরায় নির্মম ও নৃশংসভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এসময় এসআই সিদ্দিক ঘটনাস্থলে এবং ওসি বশিরুল আলম ঘটনাস্থল থেকে অল্প কিছু দূরে ছিলেন। একই সময়ে বৈকালিন বাজারে অসীম চন্দ্র শীলের দরিদ্র পিতার চায়ের দোকানটিও ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে রামনা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, অসীম এবং তার সহযোগীরা আমার লোকজনের উপর হামলা চালালে তা প্রতিহত করতে গিয়ে দু’একজন সামান্য আহত হয়ে থাকতে পারে। এর বেশি কিছুই নয়।
বামনা থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বামনা থানার ওসি মো. বশিরুল আলম বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছেন। তবে কেউই এখনও পর্যন্ত মামলা করতে আসেননি বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ