বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চলে গেলেন একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউতে শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত এগারোটার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন একুশে পদক পাওয়া এই শিল্পী।
উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের অনেক ঐতিহাসিক আন্দোলনে গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করা এই শিল্পীর প্রয়ানে ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন।
গুনী এই শিল্পীর চলে যাওয়া ফেইসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছে তাঁর ভক্তকূলসহ সর্বমহলের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফকির আলমগীরকে নিয়ে নানা স্মৃতির কথা তুলে ধরে বিচ্ছেদ-বেদনায় আবেগ-আপ্লুত হচ্ছেন তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সহযোদ্ধারা। কিংবদন্তি এই শিল্পীর মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান সোশ্যাল মিডিয়া।
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু তার ফেইসবুকে লিখেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১- ফকির আলমগীর'র সাথে রাজপথের আন্দোলনে একসাথে পথচলার নিরবিচ্ছিন্ন ৫২ বছর অন্তে তার বিচ্ছেদে আমি শোকাহত। বিমর্ষ।’
স্মৃতিচারণ করে জনপ্রিয় উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক হানিফ সংকেত লিখেন, ‘চলে গেলেন গণমানুষের শিল্পী ফকির আলমগীর। মানবিক গুণাবলিতে মহান এই শিল্পীর অকস্মাৎ মৃত্যু সংবাদে স্বজন হারানোর কষ্ট অনুভব করছি। সম্প্রতি তার অসুস্থতার খবরে বেশ শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। নিয়মিত খোঁজখবরও রাখছিলাম। দু’দিন আগেও ভাবীর সঙ্গে কথা হয়েছিলো, বলেছিলেন-‘এখন কিছুটা স্ট্যাবল, দোয়া করেন।’ কিছুটা আশার আলো দেখেছিলাম কিন্তু না প্রাণঘাতী করোনার কাছে পরাজিত হয়ে অবশেষে শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে চিরবিদায় নিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারের এই শব্দসৈনিক-বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে পাশে থেকে তিনি যেমন মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন, তেমনি শিল্পীদের অধিকার আদায়ের বিভিন্ন কর্মসূচীতেও তিনি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সবসময় তিনি সবার সুখে দুঃখে পাশে থেকেছেন। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার অনেক আড্ডার-অনেক গল্পের-অনেক স্মৃতি। মনে পড়ে আমার অনেক অনুষ্ঠানে উপস্থিতির স্মৃতিময় সময়গুলোর কথা। আমি তাঁর মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
অভিনেত্রী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম লিখেন, ‘শোক- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক, দেশবরেণ্য গণসঙ্গীত শিল্পী, একুশে পদকপ্রাপ্ত ফকির আলমগীর এর মৃত্যুতে-বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এর পক্ষ থেকে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছি। এ দেশের গণসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করে তুলতে তার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পরপারে আল্লাহ তুমি তাকে বেহেস্ত নসিব কর।’
আবেগী ভাষায় সাংবাদিক ও সঙ্গীতশিল্পী তানবীর তারেক লিখেন, ‘ফকির আলমগীর ছিলেন আমাদের প্রাণের বড়ভাই। সবাইকে তো আপন ভাবা যায় না। বড়সড়ো তারকাদের তো মনে হয় দূরের আকাশ। ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না - জোরে কথা বলা যাবে না! অথচ তাঁকে দেখলেই একমাত্র মনে হতো, এই মানুষটি আমার ভীষণ কাছের। ধরা যাবে, ছোঁয়া যাবে, চিৎকার করে আড্ডা তর্ক সব করা যাবে! আহারে! আর পারবো না !! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’
সঙ্গীতশিল্পী খায়রুল ওয়াসী লিখেন, ‘ফকির আলমগীর স্যার আর নাই। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। একসাথে একই লাইভে আর গান গাওয়া হবে না কোনো দিন।’
কাওসার চৌধুরী লিখেন, ‘আরও একটি নক্ষত্রের পতন হল! কত কথা, কত স্মৃতি- এই মুহুর্তে সবই শুন্য, সবই হাহাকার! বিদায় কমরেড।’
বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভান লিখেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতি আর গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সাহসী সৈনিক প্রিয় ফকির আলমগীর ভাইয়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। পরপারে শান্তিতে থাকুন শ্রদ্ধেয় সংগ্রামী।’
ফায়জুল হক রাজু লিখেন, ‘একজন নিষ্ঠাবান,নির্ভীক ও কালজয়ী খাঁটি বাঙালির অন্তিম যাত্রা। মহান আল্লাহ্ তাঁর সকল গুনাহ মাফ করবেন ইনশাআললাহ্ এবং তাকে বেহেস্তবাসী করবেন। বিনম্র শ্রদ্ধায় বিদায়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।