পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোরবানির চামড়া গরিবের হক। গরিবের সেই হকের ওপর গত কয়েক বছর যাবত শকুনের নজর পড়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চামড়া ব্যবসায়ীরা তিন বছর ধরে গরিবের হকে লোভের থাবা বসাচ্ছে। গতবারের মতো এবারও কোরবানির চামড়া নিয়ে সিন্ডিকেট করে দাম ফেলে দেয়া হয়েছে। অনেক স্থানে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে অথবা মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের কালো থাবায় ক্ষতি হচ্ছে দেশের অথর্নীতির। এবারও আড়তদারদের বিরুদ্ধে সারা দেশেই চামড়ার দাম কৌশলে ফেলে দেয়া এবং আড়তে চামড়া নিয়ে আসা সত্ত্বেও না কেনার মতো অভিযোগ ওঠেছে। এই নিয়ে সারা দেশেই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে রয়েছে চাপা অসন্তোষ। দেশের অর্থনীতিবিদ, আলেম ওলামা ও ইসলামী চিন্তাবিদরা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
গত কয়েক বছর ধরে দেশে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয়ে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের কোনো তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। আড়তদারদের কারসাজিতেই কোরবানির পরশুর চামড়া এখন অনেকটা ফেলনা হয়ে পড়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এবার মাঠপর্যায় থেকে গতবারের চেয়ে অনেক বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। কিন্তু আড়তে বিক্রি করতে গিয়ে মেলেনি ন্যায্য দাম।
মৌসুমী ব্যবসায়ী, মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দাম ফেলতে পোস্তা, অমিনবাজার, সাভারের হেমায়েতপুর, নাটোর, দিনাজপুর, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় চামড়ার আড়তদারা এবারও একাট্টা। ফলে নিরুপায় হয়ে কম দামেই তারা বাধ্য হয়েছে চামড়া বিক্রি করতে।
আড়তদারদের চামড়া কেনায় অনীহার কারণে সারাদেশে ৫০ শতাংশ খাসির চামড়া নষ্ট হয়েছে। কোথাও কোথাও গরুর চামড়াও বিক্রি করা যায়নি। শেষে ওই চামড়ার ঠিকানা হয়েছে নদীতে বা সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিনে।
সরকার জাতীয় সম্পদ কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে গত বছরের চেয়ে গরুর চামড়ার দাম বর্গফুট প্রতি ৫ টাকা ও খাসির চামড়ার দাম ২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করে দেয়। দাম নির্ধারণের পর চামড়াসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা এই দাম বিবেচনায় রেখে কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় করবেন। কিন্তু মন্ত্রীর সেই আকুতিতে কর্ণপাত করেনি চামড়া ব্যবসায়ীরা। এবারও কথা রাখেনি তারা। রাজধানীর অস্থায়ী হাট ছাড়া বাড়তি দাম মেলেনি দেশের বেশিরভাগ জায়গায়।
নেত্রকোনায় চামড়া বিক্রি করতে পারেনি অনেকে। অন্যান্য বছরের মতো মৌসুমী ব্যাপারি এবার ছিল না। গত বছর লাখ লাখ টাকা লোকসান দেওয়ার পর এবার আর চামড়া কিনতে কেউ আাগ্রহি হয়নি। ফলে অনেকের চামড়া সরাদিন বাড়িতে রেখে রাতে নদীতে ফেলে দিয়েছে অথবা মাটিতে পুতে ফেলেছে। মাদরাসায় চামড়া দিতে চাইলে তারাও নিতে চায়নি। যারা চামড়া বিক্রি করতে পেরেছেন তাদেরটার দামও মাত্র দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা হয়েছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকায় চামড়া বিক্রি হয়েছে। অথচ সরকারের নির্ধারিত মূল্যে একটি চামড়ার দাম কমপক্ষে ছয় থেকে সাতশ’ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোনো তোয়াক্কাই করেনি। চট্টগ্রামে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে। সিলেটেও একই অবস্থা। কুমিল্লায় এক লাখের বেশি দামের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০ টাকায়। গাজীপুরে চামড়ার দাম না পেয়ে অনেকে ফেলেছেন রাস্তায়।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির তথ্যমতে, এবার কোরবানিতে সব মিলিয়ে ৭০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ সম্ভব হবে। এর মধ্যে ৪৪ লাখ পিস গরুর চামড়া। বাকি ২৬ লাখ চামড়ার যোগান মিলবে ছাগল-ভেড়া, খাসি থেকে। বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এই চামড়ার ৬০ ভাগের বেশি যোগান হয় কোরবানির মৌসুমে। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।