পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ঈদ সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। এ বছর সকল ধরনের পশুর দাম বর্গফুটপ্রতি ৫-১০ টাকা কমিয়ে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। বিগত বছরগুলোর দামের সাথে মিলিয়ে দেখা গেছে, প্রতিবছরই বর্গফুটে ৫-১০ টাকা কম মূল্য নির্ধারণ করে চামড়া কেনে ব্যবসায়ীরা। ২০১৩ সালে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর ছিল ৮৫ টাকা। কিন্তু ওই দাম প্রতিবছর কমতে কমতে এ বছর ব্যবসায়ীরা প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫০ টাকা।
এ বছর কোরবানির লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট রাজধানী ঢাকায় ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে দাম ৪০ টাকা। এছাড়া খাসি বর্গফুটে ২০ এবং বকরি ১৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। মহিষের লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ২৫ টাকা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রয়েল বুফে রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন এবং কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ছিল ৪৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০, খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা। ২০১৪ সালে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতিফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এ দর ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, খাসির চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও বকরির চামড়ার দর ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ২০১৩ সালে দর ছিল আরো বেশি। তখন ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। ঢাকার বাইরে এর দর ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়। কিন্তু কোরবানির সামনে রেখেই ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম কমিয়ে দেয় এমন অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এদিকে দেশের রফতানি পণ্যের মধ্যে চামড়া অন্যতম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খাত থেকে রফতানিবাবদ ১১৬ কোটি ১০ লাখ টাকার মার্কিন ডলার আয় হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য ৪০-৪৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুাব দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। গত সোমবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণের জন্য ব্যবসায়ীদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে তারও দুই দিন পর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাম ঘোষণা করা হল। বাণিজ্যমন্ত্রী সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, একটা বাস্তবসম্মত মূল্য তো নির্ধারণ করতে হবে। জনগণ যাতে চামড়ার ন্যায্য মূল্য পায়, আবার চামড়া শিল্পের ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোন সিন্ডিকেট সহ্য করা হবে না বলেও বলেছিলেন মন্ত্রী।
চামড়া কোথায় নিয়ে যাওয়া হবেÑএমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা সাভার ও হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া কিনবো। সাভারে ২০ থেকে ২৫টা শিল্প গড়ে উঠেছে সেখানেও চামড়া কেনা হবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দরপতন হয়েছে। এছাড়া গতবারের কেনা চামড়ার ৩০ শতাংশ এখনও মজুদ রয়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে এবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি যুক্তি দেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে দামড়ার দাম ৩৫ শতাংশ কমে গেলেও এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য যে দাম তারা ঠিক করেছেন, তা গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। এছাড়া লবণ সঙ্কটের কথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।