বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পরিবারের সাথে কোরবানী দিয়ে শান্তিমত কোরবানীর মাংস খাওয়ার সুযোগ পায়নি অনেকেই। এরমধ্যে ঈদের দিন রাতেই ভাড়া করা মাইক্রো ও ঢাকা সিটিতে চলাচলকারী বাস নিয়ে আসা গাড়িতেই ঢাকার পথে রওয়ানা হতে হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, ঈদের দু’দিন আগে রওয়ানা দিয়ে জ্যামের কারণে ঈদের দিন সকালে বাসায় পৌঁছেই মসজিদে গিয়ে কোনমতে নামাজ পড়তে পেড়েছি। পরিবারের লোকজন আগে থেকেই কোরবানীর গরু কিনে রাখায় কোরবানী দিতে পারি। রাতেই আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হবে ভাড়া করে আনা গাড়ীতেই। না হলে ২২ তারিখে ঢাকায় যাওয়ার কোন উপায় নেই। ট্রেন বাস এমনকি বিমানেও টিকেট পায়নি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ঢাকার ঔষধ কোম্পানীর চাকুরীজীবী। ২১ তারিখ ঈদের দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ২২ তারিখে রেল ষ্টেশন, বাসষ্ট্যান্ডে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী অনেকেই মহাসড়কের পার্শ্বে দাড়িয়ে ট্রাকের অপেক্ষা করছে। উদ্দেশ্য যেভাবেই হোক শুক্রবার লোকডাউনের আগেই ঢাকায় পৌছাতে হবে। চাকুরী বাঁচাতে হবে।
বুধবার ঈদের দিন শেষে রাত আট’টার দিকে ফুলবাড়ী বাসষ্ট্যান্ডে একটি সুন্দর চকচকে মাইক্রোবাসে ১০/১২ জন যুবককে গাদগাদি করে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে গেলাম। এর মধ্যে একজন আমাকে চিনতে পেরে সালাম জানিয়ে বললো আমাদের নাম দিয়েন না পত্রিকায়। বললাম কি এমন হলো পত্রিকায় নাম দেয়ার কথা উঠলো। সে বললো গতকাল গভীর রাতে পৌঁছেছি বাড়ীতে এই গাড়ী নিয়েই। শর্ত ছিল ঈদের আগের দিন বাসায় থাকবো এবং ঈদ করে রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিব। ঢাকায় জ্যামের কারণে বাসায় পৌঁছেছি ঈদের আগে গভীর রাতে। যেহেতু ভাড়া করা মাইক্রো তাই আজই রওয়ানা দিতে হচ্ছে। এভাবেই দেখা গেল পর পর কয়েকটি মাইক্রো। শুধু তাই নয় ঢাকায় আজমদি রুটে চলাচলকারী অনেক সিটি বাসকেও ঈদের আগের রাতে দিনাজপুরে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। ঈদের ঈদ আবার সেগুলি ভর্তি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছে।
পরদিন ২২ তারিখ পরিস্থিতি দেখতে দিনাজপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে যেয়ে প্রবেশ পথে হুড়াহুড়ি দেখতে পেলাম। কর্তৃপক্ষ টিকেট দেখে প্লাটফর্মে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে গেলো। উপস্থিত ট্রেনের পরিচালক ও টিটি’র কাছে সিট ছাড়াই টিকেট নিয়ে প্লাটফরমে ঢুকতে শুরু করলো। তবে গেট বাদে আশে-পাশের ফাকা জায়গা দিয়ে অনেকেই ষ্টেশনে ঢুকে গেছে। বেলা দুটায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসবে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। যাত্রী দেখে বুঝাই যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে একটি আসন খালি রেখে ট্রেন ছাড়ার সিদ্ধান্ত পরের কথা-ট্রেনে যতগুলি আসন আছে তার দেড়গুণ যাত্রী ষ্টেশনে অবস্থান নিয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম অনেককেই টিকেট পেয়েছেন কিনা। বললো না তারপরও ঢাকায় যেতে হবে আজই। কাল লোকডাউন। ছুটি ছিল শনিবার পর্যন্ত কিন্তু যাওয়ার উপায় নাই। তাই আজ বৃহস্পতিবারই যেতে হবে ঢাকায়। না হলে চাকুরী হারাতে হবে।
কালিতলা বিমান অফিসে যাত্রীদের মধ্যে ঠেলাঠেলি দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এরা ব্যয় ও বিলাসবহুল বিমান যাত্রী। যাহোক প্রশ্ন করতেই এক যাত্রী বলে উঠলেন ষ্টুপিড সিদ্ধান্ত। লকডাউন দিলে একেবারেই লোকডাউন দিন। কিছু অফিস খোলা কিছু অফিস বন্ধ আবার ঈদের আগে খোলা ঈদের একদিন পরই সব বন্ধ-একাধারে এসব কথা বলে বললেন এসব ষ্টুপিড সিদ্ধান্ত। যা হোক মান বাচাতে সরে আসলাম। বাসষ্ট্যান্ড গুলিতে একই অবস্থা। তবে ঢাকা থেকে ফেরত হওয়ার অভিজ্ঞতা সঞ্চয়কারী অনেককেই রেল বা বাস ষ্ট্যান্ডের পরিবর্তে হাইওয়ের পার্শ্বে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো। তাদের কথা একটু কম খরচে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা থাকায় ট্রাক-পিকআপ তাদের পছন্দ। যা হোক ঈদের পরে মাত্র একদিনের খোলা রাখার ঘোষণায় মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা গেছে। অনেকেই বলছেন কঠোর দেখেছি এবার কঠোরতম বলে আমাদের মত সাধারণ মানুষকে যে কষ্টের মধ্যে ফেলা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় ২৩ তারিখ থেকে কঠোর লকডাউন আগের মত লকডাউন না হয়। বাস ট্রেন না থাকলেও মাইক্রো, কার ট্রাক ও পিকআপে করে যাত্রী পরিবহন অব্যাহত থাকে কিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।