বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির সাথে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আবারো বাড়ল। প্রতিদিনই এঅঞ্চলে মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলাতে আরো ৫ জনের মৃত্যুর সাথে এ অঞ্চলে ২ হাজার ৫৮২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৫৩৫ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৩ জনই নারী। আগের দিন সনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫শ। এনিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে মৃত্যুর মিছিলে ৩৭৩ জনের নাম যুক্ত হল। আর এপর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২৫ হাজার ১৩১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হল। গড় সনাক্তের হার এখন ১৮.৬৬%। যা ১৫ দিন আগের চেয়ে ৩% বেশী। এরমধ্যে চলিত মাসের প্রথম ১৫ দিনেই দক্ষিণাঞ্চলে ২২ হাজার ৮৮৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭ হাজার ৫৫৮ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়েছে। আর এ মাসের প্রথম ১৫ দিনে মারা গেছেন ৬৯ জন। এ সময়ে বরিশাল মহানগরীতেই ১ হাজার ৬৫৮ জন সনাক্তের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
লকডাউন শিথিলে ফলে আগামী সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ রূপ লাভকরবে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই শংকা প্রকাশ করেছেন একাধীক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহলেও।
শুক্রবার দুপরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় পটুয়াখালী,বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠীতে সংক্রমনের সংখ্যা যথেষ্ঠ বৃদ্ধি পেলেও এখনো মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় সংক্রমন সংখ্যা তুলনামূলক বেশী। এসময়ে মহানগরীতে ৮৪ জন সহ বরিশাল জেলায় সনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৮৪। যা পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টার চেয়ে ৬জন কম হলেও ইতোমধ্যে বরিশাল জেলায় সংক্রমন ১০ হাজার ছাড়িয়ে আরো ৬৮৪ যোগ হয়েছে। যারমধ্যে মহানগরীতে ৭ হাজার ৪৪৩ জন আক্রান্তের বিপরিতে ৭৪ জনের মৃত্যুর কথা বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলাটিতে সংক্রমনের গড়হার দক্ষিণাঞ্চলের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২১.৩৭%।
গত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীর পরিস্থিতির আরো অবনিত ঘটেছে। ৪ উপজেলার এ জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৩৩০ জনের নমুনা পরিক্ষার বিপরিতে ১০৪ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। সংখ্যাটা আগের ২৪ ঘন্টায় ছিল ৮৫। তবে গত ৪৮ ঘন্টায় জেলাটিতে কোন মৃত্যু সংবাদ নেই। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বেচ্চ সংক্রমন, ২৬.৫২%-এর ঝালকাঠীতে এপর্যন্ত ১০ হাজার ৫৫০ জনের নমুনা পরিক্ষায় করোনা সনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২১০ জনের। মারা গেছেন ৪৫ জন। জেলাটিতে মৃত্যুহারও তৃতীয় সর্বোচ্চ, ১.৪০%।
ভোলাতে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সংক্রমন সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়ে আগের দিনের ৪৭ থেকে ৭১-এ উন্নীত হয়েছে। জেলাটিতে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭১ জনের নমুনা পরিক্ষা হয়েছে। এপর্যন্ত ১৬ হাজার ৭৩৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় করোনা সনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৮৭ জনের। মারা গেছেন ২৭ জন। দ্বীপজেলাটিতে মৃত্যুহার এখনো দক্ষিণাঞ্চলের সর্বনি¤œ, ১.০৯%। তবে গত এক মাসে বৃহস্পতিবারেই জেলাটির পৌর এলাকার দুই নম্বর ওয়ার্ডের এক নারী জেনারেল হাসপাতালে মারা গেলেন। তবে ভোলাতে সনাক্তের হরা তুলনামূলকভাবে বেশী, ১৪.৩৩%।
আরেক ছোট জেলা বরগুনাতেও ক্রমবর্ধমান সংক্রমন মারাত্মক ঝুকি সৃষ্টি করছে। জেলাটিতে এপর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর ফলে শতকরা হারে এখন পটুয়াখালীর সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ স্থানে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলাটিতে ২০৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬৬ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্তের সাথে তালতলী ও সদর উপজেলার এক নারী ও পুরুষের মৃত্যু হয়েছে সরকরী হাসপাতালে। এনিয়ে বরগুনার ১৫ হাজার ৯২২ জনের নমুনা পরিক্ষায় করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ১৫৫ জনের দেহে। জেলাটিতে সনাক্তর হার গত ১৫ দিনে ৩% বেড়ে এখন ১২.৯৯%। ফলে বরগুনা সর্বনিম্ন সনাক্তের নাম থেকে দ্বিতীয় সর্বনি¤œ স্থানে উঠে এসেছে।
পটুয়াখালীতেও গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪১ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময়ে জেলাটির বাউফলের মদনপুরাতে ৩০ বছর বয়স্কা এক নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে মারা গেছেন। ফলে জেলাটিতে মৃত্যু সংখ্যা ৬১ জনে উন্নীত হল। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮৪৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ হাজার ১২৭ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের গড়হার দক্ষিণাঞ্চলের সর্বনি¤œ, ১২.৭১%। গড় মৃত্যুহার ১.৯৫%।
পিরোজপুরেও পরিস্থিতির তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি হচ্ছে না। গত ২৪ ঘন্টায় জেলাটিতে ৪৬৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় আরো ৬০ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। তবে জেলাটিতে দশদিনে সংক্রমন হার প্রায় ৫৫% থেকে শুক্রবারে ১৫%-এর নিচে নেমে এসেছে শুক্রবারে। বৃহস্পতিবার জেলা হাসপাতালে সদর উপজেলার রানীপুর এলাকার ৭৫ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এনিয়ে জেলাটিতে ৩ হাজার ৪৬৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫৫ জনের মৃত্যু হল। জেলাটিতে এপর্যন্ত নমুনা পরিক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৩০ জনের। সনাক্তের গড়হার দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ২৪.৭২%। মৃত্যুহারও এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ১.৫৯%।
গত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিনাঞ্চলে বিভিন্ন জেলায় আরো ১১১ জন সহ ১৬ হাজার ৭১১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে বলা হয়েছে। সুস্থতার হার এখন ৬৬.৫০%। যা একমাস আগের তুলনায় ১২.২৫% এবং গত ১ জুলাইয়ের চেয়ে ৮% কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।