Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তা বিপদসীমার ঊর্ধ্বে

ভারত গজলডোবা বাঁধ খুলে দিয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উজানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। উজানের ঢলের সঙ্গে ভরা বর্ষায় অভ্যন্তরীণ বৃষ্টিপাত মিলিয়ে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে এবং শাখা-প্রশাখা, উপনদীতে পানি কোথাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোথাও স্থিতিশীল বা অপরিবর্তিত রয়েছে। আবার কোথাও হ্রাস পাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উত্তর জনপদে তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এ নিয়ে চলতি বর্ষা মৌসুমে তিস্তা চার দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করলো। উত্তরের ধরলা, দুধকুমার নদীর পানিও বাড়ছে।
গতকাল বিকালে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার চেয়ে ৪ সেন্টিমিটার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয় (৫২ দশমিক ৬৪ মিটারে অবস্থান)। কাউনিয়া পয়েন্টেও পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩৬ সে.মি. নিচে রয়েছে। সকালে ডালিয়ায় পানি পাঁচ সে.মি. নিচে প্রবাহিত হয়। ভারত নিজেদের বন্যামুক্ত রাখতে তিস্তার উজানে গজলডোবা বাঁধের সবক’টি গেইট খুলে পানি ছেড়ে দিয়েছে। এরফলে ভাটিতে উত্তরাঞ্চলে তিস্তাপাড়ের বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়েছে। চর ও নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট-দুর্ভোগে পড়েছে। তিস্তাপাড়ের ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেড়ে গেছে তিস্তার তীব্র ভাঙনের তীব্রতা।

নদ-নদীগুলোতে পানি হ্রাস-বৃদ্ধি, স্থিরাবস্থার মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল হয়ে ভাটি ও মোহনায় নদীপাড়ের অনেক এলাকা একে একে বিলীন হচ্ছে। অব্যাহত ভাঙনের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে নদীতীরের বাসিন্দারা। সর্বক্ষণ তারা ভাঙন আতঙ্কে দিন গুজরান করছে।

পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০৯টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৩৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৯টিতে হ্রাস পায়। পাঁচটি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে। বুধবার নদ-নদীর ৩৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৭টিতে হ্রাস পায়। ৭টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত ছিল। মঙ্গলবার ৪১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৩টিতে হ্রাস পায়। সোমবার ৩৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৭টিতে হ্রাস পায়।

নদ-নদীসমূহের সর্বশেষ প্রবাহ পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল আছে, অন্যদিকে যমুনা নদে পানি হ্রাস পাচ্ছে। উভয় নদ-নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হ্রাস স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

দশ দিনের পূর্বাভাস
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী দশ দিনের অন্তবর্তী পূর্বাভাসে গতকাল জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে পানি আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত স্থিতিশীল থেকে এরপর বাড়তে পারে। আগামী ৭ দিনে আপাতত ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি আগামী ৫ দিন স্থিতিশীল থেকে এরপর বাড়তে পারে। আগামী ১০ দিনে আপাতত গঙ্গা-পদ্মা নদীর অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই। ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এ অববাহিকায় নদীসমূহের পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিস্তা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ