Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আনন্দে উদ্ভাসিত ঈদ-পরবর্তী ক্যাম্পাস

প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সদ্যপ্রয়াত কবি শহীদ কাদরী নিউইয়র্কের হাসপাতালে থেকে বলেছিলেন, ‘বাড়ি মানে তো দেশ। নিউইয়র্কেরটা তো বাসা।’ তেমনি আমরা শহরের আবাসকে বলি বাসা। আর গ্রামটাই হলো বাড়ি। ঈদ আমাদের বাড়ি ফেরার ডাক দেয়। আমরা দিন বাড়ি যায়, চড়ে পাখির ডানায় গাইতে গাইতে বাড়ি যাই। এই যাওয়া কেবল বাসে-লঞ্চে-ট্রেনে-ট্রাকে যাওয়া নয়, একটা নাগরিক বিচ্ছিন্নতার জগৎ থেকে আত্মীয়-বান্ধব-প্রতিবেশীর জগতে যাওয়া। ফেরার এই দৃশ্য চিরন্তন। বাংলার সন্তানরা চিরকাল এমনিভাবে ফিরেছে নাড়ির টানে। ‘হুলিয়া’ কবিতায় সেই বর্ণনায় কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছিলেন, ফেরার টানের মতো শাশ্বত টান বুঝি আর হয় না। সবাই ফিরতে চায়। চাকায় চাকায় তখন আনন্দে উদ্ভাসিত ঈদ-পরবর্তী ক্যাম্পাস।
সদ্যপ্রয়াত কবি শহীদ কাদরী নিউইয়র্কের হাসপাতালে থেকে বলেছিলেন, ‘বাড়ি মানে তো দেশ। নিউইয়র্কেরটা তো বাসা।’ তেমনি আমরা শহরের আবাসকে বলি বাসা। আর গ্রামটাই হলো বাড়ি। ঈদ আমাদের বাড়ি ফেরার ডাক দেয়। আমরা ‘দিন বাড়ি যায়, চড়ে পাখির ডানায়’ গাইতে গাইতে বাড়ি যাই। এই যাওয়া কেবল বাসে-লঞ্চে-ট্রেনে-ট্রাকে যাওয়া নয়, একটা নাগরিক বিচ্ছিন্নতার জগৎ থেকে আত্মীয়-বান্ধব-প্রতিবেশীর জগতে যাওয়া। ফেরার এই দৃশ্য চিরন্তন। বাংলার সন্তানরা চিরকাল এমনিভাবে ফিরেছে নাড়ির টানে। ‘হুলিয়া’ কবিতায় সেই বর্ণনায় কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছিলেন, ফেরার টানের মতো শাশ্বত টান বুঝি আর হয় না। সবাই ফিরতে চায়। চাকায় চাকায় তখন শুধু ‘বাড়ি যাই বাড়ি যাই’ বাদ্য বাজে। ঢাকা ফাঁকা হয়ে যায়, আর ভরে ওঠে গ্রাম-মফস্বল। জমে উঠে বাংলাদেশের সত্যিকার ঈদ। যা বর্ষার নতুন পানির মতো প্লাবিত করে দেয় সমাজকে। একইভাবে ঈদ শেষে ফেরার পালা। এইবারের পবিত্র ঈদুল-আজহার ছুটি শেষে চিরচেনা ব্যাস্ত জীবনে ফিরেছে বাংলাদেশ। ফিরেছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। গল্প-আড্ডায় এখন শুধু কোরবানী থেকে শিক্ষা নেওয়া ত্যাগ ও বিশ্ব মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার মহিমা।
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ঈদ কার্ডের ব্যবহার কমে গেলেও সম্পূর্ণ রূপে চলে যায়নি। প্রযুক্তির কল্যাণে এসএমএস, ফোন, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমেই এখন প্রিয়জনদের শুভেচ্ছা জানানো, ঈদের নিমন্ত্রণ দেওয়ার সাথে কোরবানীর পশুর ছবিও শেয়ার করা হয়। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, এখন বড়দের সালাম করলে আর কেউ সালামি দেয় না। বরং ছোটদের দিতে হয়।
এবার ঈদের সকাল থেকে ভাদ্রের আকাশ কালো হয়ে ছিল। বৃষ্টি পড়েছে। তবুও সম্পূর্ণ সামাজিকতায় উদযাপিত হয়েছে ঈদ উৎসব। উৎসব পালনের নামে দেশের মানুষ আসলে শতবর্ষ ধরে সংস্কারহীন ছেঁড়াফাটা এই সমাজেরই নবায়ন ঘটাচ্ছে। উৎসব মানেই ব্যস্ত জীবনের পুনরুজ্জীবন। আর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষ তাৎপর্য রোমাঞ্চিত করা। হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি বিভেদ ভুলে, নিজের পশুত্বকে জবাই করে ঐক্যের বন্ধনের ডাকে আজ আবার ক্যাম্পাস মুখরিত।
শিক্ষার্থীরা জানান, কেউ জীবন উপভোগ করে, কেউ জীবনযাপন করে, কেউ জীবন কাটায় আর কেউবা কোনো মতে তা পার করে। কিন্তু ঈদ এলে ব্যাপারটা উল্টে যায়। কেউ ঈদে বিদেশে ছুটি কাটাতে যায়, কেউ যায় রিসোর্টে, কেউ করে ভোগ আর আমরা মহানন্দে বাড়ি ফিরি। বাসার মানুষ বাড়ি যায়। মনে হয়, সম্পূর্ণ বাংলাদেশ তখন বাড়ি যায়। তবে এইবার জঙ্গিবাদী তৎপরতা নিয়ে সবার শঙ্কা ও উদ্বেগ থাকলেও দেশের সকল মানুষ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করায় তা অনেকটাই কেটে গেছে। এবারের ঈদে হয়নি কেউ জঙ্গি হামলার শিকার। ঈদের নামাজ, কোরবানী, আড্ডা সবখানেই ছিল আনন্দের ছোঁয়া।
শহর বড় আত্মকেন্দ্রিক, এখানে সত্য গুম হয়। তবুও ঈদের তাৎপর্য থেকে শিক্ষা নিয়ে ত্যাগ, ভালোবাসা ও ঐক্য দিয়েই ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ বাণী প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাবে শিক্ষার্থীরা। এগিয়ে যাবে ধর্মনিরপেক্ষতায় নিশ্বাস নেয়া চিরচেনা উৎসবমুখর ভালোবাসার বাংলাদেশ।
ষ মনির হোসেন শিমুল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আনন্দে উদ্ভাসিত ঈদ-পরবর্তী ক্যাম্পাস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ