Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাহাড়ের বুকে দৃষ্টিনন্দন সড়ক

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

পাহাড়ের বুক চিড়ে এক আঁকাবাঁকা সড়ক মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক। যার দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার। পাহাড়ের যাতায়াত সুবিধায় আনতে নতুন সড়ক নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। এ সড়কটি ব্যবহার করে এখন রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার লোকজন চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ না করেই ঢাকাসহ সারাদেশে দ্রুত চলাচল করতে পারবে।

ফলে রাঙামাটির লোকজনেরই ঢাকা যেতে তিন ঘণ্টা সময় বাঁচবে। পথ কমে যাবে ৬৮ কিলোমিটার। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের তৈরি করা নতুন এ সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। তবে যান চলাচলের জন্য এটি এরই মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে।

মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং ২০ ইসিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আমজাদ হোসেন দীদার বলেন, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন এ সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে এটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের ছয় মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে কাজ। এ সড়কের মাধ্যমে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি অঞ্চলের আন্তঃআঞ্চলিক যোগাযোগের সময় ও দূরত্ব অনেক কমে যাবে। মূল কার্পেটিং সড়কি ১৮ ফুট প্রশস্ত। এর বাইরে হার্ড সোলডার (দুই পাশের ইটের তৈরি সড়ক) প্রায় ১১ ফুট। সড়কটির ২৪ কিলোমিটার সাইড ড্রেন, ২৮ মিটার কালভার্ট, ৪১০ মিটার গ্রাভিটি ওয়াল, ৬৩০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল ও ৮০০ মিটার প্যারাসাইডিং নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটি পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ও বাজারজাত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরিবেশের ক্ষতি না করে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এ সড়ক পর্যটন শিল্পের প্রসারেও ভূমিকা রাখবে।

মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া নতুন সড়কটি সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা সড়কটির দুই পাশে জুম চাষে রোপণ করা সবুজ সবজি ও খেত খামার বেড়ে উঠছে। স্থানীয় বাঙালি ও পাহাড়ে বসবাসরতরা জানান, মহালছড়ির ভেতর দিয়ে খাগড়াছড়ি যাওয়ার একটি সড়ক আছে। সেটি অনেক দুর্গম। নতুন এ সড়কের কারণে এলাকার মানুষ অনেক খুশি। রাঙামাটি জেলার সঙ্গে মহালছড়ি (ভায়া সিন্দুকছড়ি) থেকে জালিয়াপাড়া এবং ফেনীর সরাসরি কোনো সড়ক যোগাযোগ ছিল না। অনেকদূর ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হতো। দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন উন্নত হলো, তেমনি জীবনমান পরিবর্তনেরও সুযোগ সৃষ্টি হলো। এরই মধ্যে এ সড়কটিকে একনজর দেখতে ভ্রমণপিপাসু ভিড় করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রিয় চাকমা জানান, সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ এক যুগ ধরে জালিয়াপাড়া-মহালছড়ি সড়কে যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ ছিল। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ছিল পুরো সড়ক। নতুন করে এটি নির্মিত হওয়ায় স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও রোগীরা উপকৃত হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর এসএম খালেদুল ইসলাম বলেন, নির্মাণ প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়েই পাহাড় না কেটে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করেই উন্নয়ন কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণের প্রতিটি পর্যায়ে উন্নত প্রকৌশল ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত নির্মাণসামগ্রী। সড়কটি আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রেও কাজ করতে সহায়ক হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাহাড়

২০ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ