Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ থেকে আবারও পোশাক কিনবে ওয়াল্ট ডিজনি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ জুলাই, ২০২১, ৩:১৫ পিএম

পোশাক খাতে কাজের পরিবেশ ও মান উন্নত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি আট বছর পর আবারও বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। গতকাল শুক্রবার বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা আমাদের কাজের পরিবেশ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও মান উন্নত করায় ওয়াল্ট ডিজনি বাংলাদেশে ফিরে আসছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াল্ট ডিজনির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোনে আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বস ও ২০১২ সালের নভেম্বরে তাজরিন ফ্যাশনে আগুন— বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বড় দুটি বিপর্যয়ের ঘটনা। এসব ঘটনার কারণে কর্মক্ষেত্রে দুর্বল সুরক্ষা ও মানের কথা উল্লেখ করে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বন্ধ করে দেয় ডিজনি।

ফারুক হাসান জানান, বন্ধ করার আগ পর্যন্ত কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক কিনেছে। এসব পোশাকের মধ্যে খেলার সামগ্রী, জার্সি, টি-শার্ট ও লেগিং ছিল।

বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বন্ধ করে দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি ভারত, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে পোশাক কিনতে শুরু করে বলেও যোগ করেন তিনি।

গতকাল এক বিবৃতিতে বিজিএমইএ জানিয়েছে, আইএলএস (আন্তর্জাতিক শ্রম মান) নিরীক্ষা বিবেচনায় ডিজনি তাদের অনুমোদিত সোর্সিং দেশগুলোর তালিকায় আবারও বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করেছে। বিশ্বস্ত একটি সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে, ডিজনির পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া কারখানাগুলো বিক্রেতা হওয়ার সুযোগ পাবে। এ ছাড়া, তাদেরকে সুনির্দিষ্ট মানদ-ে উত্তীর্ণ হয়ে আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলের সঙ্গেও (আরএসসি) যুক্ত থাকতে হবে। বিজিএমইএ বলছে, গত কয়েক বছরে দেশের পোশাক শিল্পে অগ্নিকা- ও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা ও অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শ্রমিকদের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে এবং বিনিয়োগ করা হয়েছে। সুরক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের পুরো কর্মসূচিটি বাংলাদেশ সরকার, আইএলও, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড, উৎপাদক ও বৈশ্বিক ইউনিয়নগুলোর সমর্থন ও সহায়তায় স্বচ্ছভাবে হয়েছে। ফারুক হাসান বলেন, সামাজিক ও সুরক্ষা মান রক্ষার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।

এসব ব্যবস্থা ও পরিবর্তনের মাধ্যমে ডিজনির মতো নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিয়ে সচেতন ব্র্যান্ডগুলোর পছন্দের সোর্সিং অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে ওয়াল্ট ডিজনি বাংলাদেশে ফিরে এসেছে এটিকে দেশের পোশাকখাতের জন্য একটি সুসংবাদ হিসেবে মনে করেন বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বসের পর ইমেজ ক্রাইসিস হয়েছিল, তখন তারা ফিরে গিয়েছিল। সেখান থেকে আমরা আবার ঘুরে দাড়িয়েছে তার প্রমান ওয়াল্ট ডিজনি’র ফিরে আসা। এটা আন্তর্জাতিক একটি সীকৃতি। যা বিশ্বের যতগুলো দেশ পোশাক রফতানি করে তাদের জন্য রোল মডেল বাংলাদেশর পোশাক খাত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওয়াল্ট ডিজনি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ