পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাপানের সহযোগীতায় দেশে সাতটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প বা মেট্রোরেল প্রকল্প সবচেয়ে এগিয়ে। অথচ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে মেট্রোরেল নির্মাণে বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে চার বছর ধরে ঘুরছে জাপানি কোম্পানি। কনটেক লিমিটেড নামে এ কোম্পানি চার বছরে তিন দফা লিখিতভাবে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিলেও রজস্যজনকভাবে সেটি অনুমোদন পায় নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল (এমআরটি-৪ লাইন) নির্মাণে আগ্রহী জাপানের কনটেক লিমিটেড। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এ মেট্রোরেল নির্মাণে ২০১৭ সালের ২৫ মে আগ্রহ প্রকাশ করে কোম্পানিটি। তারা লিখিত প্রস্তাব জমা দেয় ওই বছর ২৪ অক্টোবর। পরে আরও তিন দফা প্রস্তাব জমা দেয় কনটেক লিমিটেড। তবে মেট্রোরেল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএল নির্মাণ প্রস্তাবটি এখনও অনুমোদন করেনি। এ প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, কনটেকের প্রস্তাবসহ সব নথিপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে। কনটেক লিমিটেডের চার দফা আবেদনের পরও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নিÑএ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র জানায়, চার বছর পেরিয়ে গেলেও পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবটি নিয়ে কোনো ধরনের আগ্রহই দেখায়নি মেট্রোরেল বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ডিএমটিসিএল (ঢাকা গণপরিবহন কোম্পানি লিমিটেড)। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কনটেকের প্রস্তাবের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। কোম্পানিটির প্রস্তাব যাচাই-বাছাইয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেট্রোরেলটি নির্মাণের জন্য কনটেক লিমিটেড ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত প্রস্তাব জমা দেয়। এতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও নিযুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মন্ত্রী মেট্রোরেলটি নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মৌখিক নির্দেশনা দেন। প্রস্তাবিত মেগা প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বরাবর একটি অনুরোধপত্র পাঠানোর জন্যও অনুরোধ করা হয় ওই সময়। পরবর্তীকালে মেট্রোরেল প্রকল্পটি জাপানিজ বিনিয়োগে জিটুজি-পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য সিসিইএ (কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটি) কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও পায়।
এরপর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং ডিএমটিসিএলের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট কনটেক বিওটি (বিল্ড ওন ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে এমআরটি-৪ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সড়ক পরিবহন বিভাগ ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর কনটেকের প্রস্তাবসহ সব নথিপত্র ডিএমটিসিএলে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে ডিএমটিসিএলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ডিএমটিসিএল থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এদিকে এমআরটি-৪ লাইন নির্মাণে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পৃথক প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী শিল্প সমন্বয় সেল। এক্ষেত্রে বিওটি পদ্ধতিতে মেট্রোরেলটি বাস্তবায়নে কনটেক লিমিটেডকে লিড কনসেশনার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দিল্লি মেট্রো করপোরেশন ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি পরামর্শকদের সমন্বয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া দেয়নি ডিএমটিসিসিএল। ২০১৯ সালের ৬ মে কনটেক লিমিটেড আবার এমআরটি লাইন-৪ বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেয়। এতে কনটেক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়। এতে এমআরটি লাইন-৪ প্রকল্পটি আনসলিসিটেড পিপিপি প্রস্তাব হিসেবে বিবেচনার জন্য নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কনটেক লিমিটেডের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ করা হয়। কনটেক লিমিটেড ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট তা জমা দেয়।
কনটেক লিমিটেডের প্রস্তাবটি পর্যালোচনার জন্য ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তক্রমে কনটেক লিমিটেডের পিপিপিতে এমআরটি লাইন-৪ বাস্তবায়নের জন্য ডিএমটিসিএলের পিপিপি কর্তৃপক্ষের কাছে যথানিয়মে নির্ধারিত ছকে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ডিএমটিসিএল এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এরপর গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৪ বাস্তবায়নে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সরাসরি লেটার অব অ্যাকসেপটেন্স (এলওএ) জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য আবেদন করে কনটেক লিমিটেড। এতে ২০২০ সালের ১ অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে কনটেকের প্রস্তাবের বিষয়ে আবার সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর এমআরটি লাইন-৪ প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে যৌক্তিকতা উল্লেখপূর্বক হালনাগাদ তথ্যাদি ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পিপিপি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই শেষে ‘গাইডলাইন্স ফর আনসলিসেটেড প্রোপোজালস, ২০১৮’ অনুসরণ করে পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য সিসিইএ (অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি) থেকে নীতিগত অনুমোদন নেয়ার কথা জানায় পিপিপি কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে কনটেক লিমিটেডের এমআরটি লাইন-৪ প্রকল্প নির্মাণের প্রস্তাব পর্যালোচনা ও সুপারিশের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ-বিষয়ক বিভাগে পাঠাতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।