বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের বাধায় থমকে আছে মুক্তিযুদ্ধের বহুল স্মৃতিবিজড়িত ফেনীর বিলোনিয়া স্থল বন্দরের কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের এক-তৃতীয়াংশের কাজ। দেশের আমদানি-রফতানি গতিশীল ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে আন্ত বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের স্থলবন্দরগুলোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে দেশের ছয়টি স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে ১০ একর জায়গায় প্রায় ৩৭.৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নম‚লক কাজের ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপন করা হয়। আগামী বছরের জুন মাসকে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হলেও উদ্বোধনের ৩ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সাদৃশ্য না হওয়ায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয় লোকদের আপত্তির মুখে পড়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখে নির্ধারিত সময়ের পরে শুরু করা হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ে দফায় দফায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধার মুখে পড়ে প্রকল্পটি। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় বিভিন্ন বাধাবিঘœ ডিঙিয়ে এখন পর্যন্ত কাজের প্রায় ২০ ভাগ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। প্রকল্পের নির্ধারিত স্থানের ৭০ থেকে ৭৫ অংশ সীমান্তের দেড়শ গজের ভিতরে হওয়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের পক্ষ থেকে ওই কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা আসে।
দু’দেশের যৌথ সিদ্ধান্তে বন্দরের কাজ শুরু হলেও ভারত নিজে চুক্তি না মেনে আন্তর্জাতিক সীমানার দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এনিয়ে দু-দেশের মধ্যে মৌখিক কথা হলেও কোনো সুফল মিলেনি বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিএসএফ এর টানাপোড়নে সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানায় স্থানীয়রা। আর প্রকল্প বাস্তবায়ন আর শ্রমিকদের মজুরি নিয়েও শঙ্কায় আছেন খোদ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিবিএল টপ লাইনের কর্ণধার ফয়সাল হায়দার। এই দুইবছরের মাঝে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তারা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ফেনীর জায়লস্করস্থ ১৯ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্নেল আব্দুর রহিম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। বরাদ্দকৃত ১০ একর জায়গার মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ জায়গা ভিতরে পড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে প্রতিত্তোরে বিজিবি থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মৌখিকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে বিএসএফ তাদের উর্ধ্বতন মহলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিবিএল টপ লাইনের কর্ণধার ফয়সাল হায়দার বলেন, বরাদ্দকৃত ১০ একর জায়গার ভিতর প্রায় ৭ থেকে সাড়ে ৭ একর জায়গার কাজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা বিভিন্ন সময় বিজিবিসহ মাপার মধ্য দিয়ে বন্ধ করে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা। প্রকল্পের শুরু অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকেই সেখানে কাজ করতে বিএসএফ থেকে বাধা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
প্রকল্পের জন্য দেওয়া ১০ একর জায়গার ৭০ শতাংশই সীমান্তের দেড়শ গজের ভিতরে, বাকী আড়াই একর জায়গায় কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে বলে জানান ফয়সাল হায়দার। ফয়সাল হায়দার বলেন, দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের প্রতিনিধির যৌথ সভায় দু-দেশই দেড়শ গজের ভিতরে কাজ করতে পারবে চুক্তি হলেও এই ক্ষেত্রে সেটা মানছেন না তারা। বরাদ্দকৃত ওই সাত থেকে সাড়ে সাত একর জায়গায় নির্মাণাধীন সামগ্রী রাখা হলেও সীমান্তরক্ষীরা তা সরিয়ে নিতে তোড়জোড় শুরু করেন। এমতাবস্থায় কাজে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে প্রকল্পটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।