বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার উত্তরপত্র হারিয়ে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। আর সংশ্লিষ্ট কোর্সের ফলাফল একই সেমিস্টারের অন্য চারটি কোর্সের ফলাফলের গড় হিসেব করে প্রকাশ করা হবে।
রোববার (২৭ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
জানা গেছে, গেল বছরের ১ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এমটিএইচ-২২১: রিয়াল এনালাইসিস-২ শিরোনামের কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার পর সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষক ও গণিত বিভাগের প্রভাষক মো. আতিকুর রহমান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে এ কোর্সের ফলাফল জমা করেন। কিন্তু বহিঃপরীক্ষকের নিকট প্রেরণের জন্য উত্তরপত্র খুঁজতে গেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে তা পাওয়া যায়নি।
নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষককে উত্তরপত্র ম‚ল্যায়ন করে তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে জমা করতে হয়। এরপর বহিঃপরীক্ষকের নিকট ম‚ল্যায়নের জন্য উত্তরপত্র প্রেরণ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাচের অন্য কোর্সের উত্তরপত্র থাকলেও এ কোর্সের উত্তরপত্র জমারও কোন নথি পাওয়া যায়নি।
উত্তরপত্র খুঁজে না পাওয়ায় পরীক্ষার প্রায় দেড় বছরেও সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানকে আহŸায়ক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরীকে সদস্য সচিব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী এবং গণিত বিভাগের প্রধান খলিফা মোহাম্মদ হেলালকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
প্রায় তিন মাস তদন্ত শেষে কমিটি গত ২৩ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে শিক্ষক আতিকুর রহমানের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পায় কমিটি।
কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড আসাদুজ্জামান বলেন, (উত্তরপত্র) শিক্ষকের কাছ থেকে হারিয়েছে, এটা নিশ্চিত। সে (আতিকুর রহমান) যদি জমা দিয়েও থাকে তার কাছে পরীক্ষার খাতা রিসিভ করার (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃক) কোন ডকুমেন্টসই নেই। সো, এখানে তার রেস্পন্সিবলিটি (উত্তরপত্র হারিয়ে ফেলার দায়) নিতে হবে যে, তিনি হারিয়েছেন।
ফলাফলের বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আসাদুজ্জামান বলেন, খাতা যেহেতু জমা হয়নাই, নাম্বারটা আদৌও খাতা দেখে দেওয়া হয়েছে কিনা এম্বিগিউইটি (অস্পষ্টতা) আছে, তাই বাকি যে চার-পাঁচটা কোর্স আছে তার নাম্বার এভারেজ করে এ কোর্সের রেজাল্ট দেওয়া হবে।
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো আবু তাহের বলেন, আমাদের যেহেতু শৃঙ্খলাবিধি নেই, তাই সরকারি বিধিমালা ২০১৮ (শৃঙ্খলা ও আপিল) অনুযায়ী (সিন্ডিকেটে) ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা এখন বিভাগীয় প্রসিডিওরাল (প্রক্রিয়া) অনুযায়ী হবে।
এ বিষয়ে মো. আতিকুর রহমান বলেন, আমি এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিকে লিখিত দিয়েছি। আর এ বিষয়ে (বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ) বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে এখনো কিছু জানায়নি, তাই কিছু বলতে পারছিনা।
এছাড়া, ২০১৬-'১৭ শিক্ষাবর্ষের একটি সেমিস্টার পরীক্ষায় 'প্রশ্ন মডারেশন ও প্রিন্ট'র দায়িত্বে অবহেলারও অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক আতিকুর রহমানের বিরূদ্ধে। এ ঘটনায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের এমটিএইচ-৩২৩ কোর্সের চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা সকাল ১০ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রশ্ন ছাপা হতে বিলম্ব হওয়ায় এক ঘন্টা পর ১১ টায় পরীক্ষা শুরু হয়।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আতিকুর রহমান বলেন, এ ধরণের কোন ঘটনায়ই ঘটেনি। আপনি ভালো করে খোঁজ নেন।
তবে ওই পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ওনি (আতিকুর রহমান) ওই পরীক্ষা কমিটির সদস্য ছিলেন। প্রশ্ন মডারেশন ও প্রিন্টের দায়িত্বও ওনারই ছিল। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় যথাসময়ে প্রশ্ন প্রিন্ট করতে পারেননি। ফলে এক ঘন্টা দেরিতে পরীক্ষা শুরু হয়।
সার্বিক বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড এমরান কবির চৌধুরী বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন সরকারি বিধিমালা ২০১৮ (শৃঙ্খলা ও আপিল) ফলো করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।