পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে যারা গরিব হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি চলমান পরিস্থিতির মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনেশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেটি সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি ১৯তম অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও ২৩তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বিবিএসের একটি জরিপে দেখা গেছে, ছয় কোটির বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কমেন্টস করার প্রয়োজন নেই। আমরা গরিবদের সাহায্য করে থাকি। তাদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। আমার বিশ্বাস যারা গরিব, তাদের আমরা আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করতে পারব। আইডেন্টিফাইড যারা, তাদের তো ডেফিনেটলি সাহায্য করা হবে। তবে এই ছয় কোটি দরিদ্রের সংখ্যাটি আমার কাছে এখনো আসেনি।
আগামী সোমবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন আসছে, গরিবদের জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়টির জন্য আমাদের আলাদা একটি কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী এটি দেখাশোনা করেন। আমার বিশ্বাস যে বিষয়গুলো বলছেন, অবশ্যই এগুলো আমরা দেখব।
পরিকল্পনামন্ত্রী একটি ওয়েবিনারে বলেছেন, বাজেট পলিশিং করা দরকার, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আপনারা যেমন বুঝেননি, আমিও তেমনি বুঝিনি। পরিকল্পনামন্ত্রীকে এটি জিজ্ঞেস করতে হবে, তিনি কি মিন করেছেন। বাজেটের ব্যাপারে তার যে মতামত, সেগুলো তো আমরা আগেই পেয়েছি। এখন তিনি আবার নতুন করে কি ভাবছেন আমি জানি না। বাজেট আমাদের সামনেই আছে, বাজেট সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই বাজেটের বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন এবং পর্যালোচনাও করছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছেন আমি জানি না। এটা না জানা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক না। পোশাক রফতানিকারকদের প্রণোদনার টাকা পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানানো হবে। সবাই এটি নিয়ে কাজ করছে। দেখা যাক কি করা যায় শেষ পর্যন্ত। ভূমধ্যসাগর থেকে অবৈধভাবে বিদেশগামী বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা হয়, দেশে ব্যাপক উন্নতির পরও তারা কেন যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সেখানে আমরা দেখি এভাবে অন্যান্য দেশের মানুষ যাত্রা করছে। দেখেশুনে কেন তারা এই ঝুঁকি নিচ্ছে, সেটা আমার নিজেরও জানতে ইচ্ছা হয়।
চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৭০ শতাংশ অর্থছাড় করা হয়েছে, পরে সেটিকে ৮৫ ভাগ পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরেও কি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই নীতি অব্যাহত থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। আমরা সেজন্য যেটা প্রয়োজন, সেটাই দিচ্ছি। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে অপচয় করবেন সেই অপরচুনিটি যদি আমরা বন্ধ করি, সেজন্য আমাদের ফুল মার্কস দেয়া দরকার। আমরা এই অপচয় রোধ করতে এই কাজটি করেছি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, একটি বিষয়ে আপনারা কনসার্ন, আমি নিজেও কনসার্ন। সেটা হলো আমাদের ভ্যাকসিনেশন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব এটা আমাদের করতে হবে এবং সেটা করা হচ্ছে। আপনারা শিগগিরই সেটার রেজাল্ট পাবেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সামনে অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সবসময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। এখনো আমাদের সেটাই প্রত্যাশা। আমাদের চলতি অর্থবছর যে ধরনের প্রজেকশন ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা এচিভ করতে পেরেছি। এটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। সবচেয়ে কঠিন খাত হলো রেভিনিউ জেনারেশন, সেটাও আমাদের ১৭ শতাংশ গ্রোথ হয়েছে। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভেও গ্রোথ আছে। যারা এক সময় বলেছিলেন রেমিট্যান্স আসবে না, বেচা-কেনা করে মানুষে দেশে চলে এসেছে বলে রেমিট্যান্স পাঠানোর মতো কেউ থাকবে না। কিন্তু সেগুলো সব সত্যি হয়নি। সত্যি হয়েছে যেটি তা হলো এদেশের মানুষ যারা বিদেশে আছেন প্রবাসী ভাই-বোনরা, তারা দেশকে ভালোবাসেন। দেশের জন্য দায়বদ্ধতায় তারা বিশ্বাস করেন। সেই দায়বদ্ধতার কারণে তারা সবকিছু মেনে নিয়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ অব্যাহত রেখেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, এক বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা সব সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। এমনটা আর কখনো হবে কি-না জানি না। আমাদের লোকজন বলেছিল আসবে না, শুধু না না না। আমরা ‘না না’ তে বিশ্বাস করি না। আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় ছিলেন। এবারও আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব, তিনি আমাদের সুস্থ রাখবেন এবং আমাদের জীবন সুন্দর হবে।
এদিকে সভায় করোনা মহামারিতে বিশ্ববাজারে আকস্মিকভাবে বাড়তে শুরু করায় দেশীয় চাহিদা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির কাছ থেকে দ্বিগুণ দাম দিয়ে এলএনজি ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, অর্থনৈতিক সংক্রান্ত একটি ও ক্রয় সংক্রান্ত ১৬টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল আরেফিন।
শামসুল আরেফিন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির কাছ থেকে ৪৪৮ কোটি ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৪ টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এবারের চালানের ইউনিট মূল্য দাঁড়াচ্ছে ১৩ দশমিক ৪২ ডলার। জানা গেছে, গত এপ্রিলের শুরুতে সুইজারল্যান্ডের এওটি ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে একই পরিমাণ এলএনজি কিনতে খরচ হয়েছিল ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৩৫৮ টাকা। সেই হিসাবে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে এই জ্বালানির দাম প্রায় দ্বিগুণ হলো।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে কয়েকটি পুরনো প্রকল্পের ভেরিয়েশনসহ মোট ১৬টি প্রস্তাব পাস হয়েছে। অনুমোদন হওয়া অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের কাছ থেকে ৭টি বোলার্ড পুল টাগবোট ক্রয়। সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টসর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম বা সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ১৭ কোটি ৪২ লাখ ৩৯ হাজার ২২৪ টাকায় নাহিদ অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের কাছ থেকে শিক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়। বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চারটি ভ্যারিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন।
তিনি জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘কোস্টাল এমব্যাংকমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, ফেজ-১ (সিইআইপি-১)’-এর আওতায় সম্ভাব্য সমীক্ষা এবং বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কানাডার নর্থওয়েস্ট হাইড্রোলিক কনসালটেন্টস লিমিটেড, জার্মানির ইনরোস ল্যাকনার এসই এবং নেদারল্যান্ডসের হ্যাসকোনিং ডিএইচভিকে ৪৬ কোটি ২৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৭ টাকায় নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কোস্টাল এমব্যাংকমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, ফেজ-১ (সিইআইপি) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ১০টি পোল্ডারের ভৌত কাজসহ সকল কর্মকাণ্ডের উপর নিরপেক্ষ মনিটরিং ও সম্পাদিত কাজের মূল্যায়ন ইত্যাদি সেবা প্রাপ্তির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত আমেরিকার এম/এস শেলাদিয়া অ্যাসোসিয়েশন ইনকরপোরেশনের সঙ্গে সাব কনসালটেন্ট হিসেবে বাংলাদেশের বিইটিএস কনসালটিং সার্ভিসেস লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ ২০২০ সালের পহেলা নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত (২০ মাস) বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫২১ টাকা ব্যয় হবে।
দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।