পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো লিমিটেডের তিন হাজার কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি সিকিউরড কনভার্টেবল অথবা রিডেম্বল অ্যাসেট ব্যাকড গ্রিন সুকুক অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশে এই প্রথমবার কমিশন থেকে গ্রিন সুকুকের সম্মতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। গত বুধবার অনুষ্ঠিত ৭৭৯তম কমিশন সভায় শর্তসাপেক্ষে এ অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি জানান, বেক্সিমকো লিমিটেডকে লেটার অব ইনটেন্ট পাওয়ার পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সুকুকের প্রস্তাবিত ট্রাস্টির নিবন্ধন সনদ এবং কমিশনের অনুমোদিত ট্রাস্ট ডিডসহ চ‚ড়ান্ত সাবস্ক্রিপশন এগ্রিমেন্ট জমা সাপেক্ষে সম্মতিপত্র ইস্যু করা হবে।
আর্থিকখাতের বিশ্লেষকদের মতে, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে সুদের বন্ডের চেয়ে ইসলামিক বন্ডের (সুকুক) চাহিদা অনেক বেশি। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড এই সুকুক। এটাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
প্রস্তাবিত গ্রিন সুকুকটি ২২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন প্রাইভেট প্লেসমেন্টের (৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন বিদ্যমান শেয়ার হোল্ডারদের কাছ থেকে এবং ১৫ বিলিয়ন বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার ব্যতীত অন্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে) মাধ্যমে এবং ৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু করা হবে।
সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বাড়ানো হবে এবং বেক্সিমকোর দুটি সরকার অনুমোদিত সাবসিডিয়ারি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের (তিস্তা সোলার লিমিটেড এবং করতোয়া সোলার লিমিটেড) বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করবে। এই সুকুকের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। সুকুকটির ন্য‚নতম সাবস্ক্রিপশন ৫ হাজার টাকা। ন্য‚নতম লট ৫০টি। সুকুকটির সর্বনিম্ন পিরিয়ডিক ডিস্ট্রিবিউশন রেট ৯ শতাংশ।
সুকুকটির ট্রাস্টি হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ এবং ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে যথাক্রমে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস ও অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাজ করছে।
জানা গেছে, এই বন্ড ছাড়তে সরকার গত অক্টোবরে প্রথমবারের মতো নীতিমালা করেছে। দেশে ইসলামি ব্যাংকিং সেবাদাতা ব্যাংকগুলোর একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুদারাবা (মুনাফায় অংশীদারি), মুশারাকা (লাভ-লোকসান ভাগাভাগি), মুরাবাহা (লাভে বিক্রি), ইশতিসনা (পণ্য তৈরি), করজ হাসান (উত্তম ঋণ), সালাম (অগ্রিম ক্রয়) ও ইজারা (ভাড়া) সুকুক প্রচলিত আছে। সুকুক ছাড়ার দিক থেকে বর্তমানে মালয়েশিয়া বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, কাতার, সউদী আরব, সিঙ্গাপুর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সুকুক প্রচলিত। মুসলিম দেশের পাশাপাশি অমুসলিম দেশেও এখন সুকুক চালু রয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে সুকুক বন্ডের মতো পণ্যের অনেক চাহিদা রয়েছে। মুসলমানরা নির্দিষ্ট সুদের চেয়ে ইসলামিক প্রক্রিয়ায় আয় করতে চায়। তাই বাংলাদেশে সুকুক বন্ড চালুর অনেক সুযোগ রয়েছে। এই বন্ড থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। উল্লেখ্য, সুকুক বন্ডে ফিক্সড সুদ নেই। এটি ট্রাস্টির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে মূলত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। আর ওই প্রকল্পের মালিকানার অংশীদার হয় সুকুক বন্ডের বিনিয়োগকারীরা। যা অন্য বন্ডে সুযোগ নেই। এছাড়া সুকুক বন্ড ব্যর্থ হলে, ওই প্রকল্পের সম্পদ বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেয়ার সুযোগ থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।