মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত মাসে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি স্কুল থেকে ২ শতাধিক শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধারের পর এবার দেশটির সাসকাচুয়ান রাজ্যে ‘শত শত’ গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব গণকবর আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান বলে ধারণা করা হচ্ছে। কানাডার আদিবাসী অধিকার সংস্থা দ্য ফেডারেশন অব সোভারিজিন ইন্ডিজেনাস নেশনস বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এই তথ্য।
সোমবারের বিবৃতিতে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাসকাচুয়ান রাজ্যের ম্যারিভাল ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল সংলগ্ন এলাকায় এই গণকবরগুলোর সন্ধান পাওয়া গেছে। ঠিক কতসংখ্যক গণকবর সেখানে রয়েছে- সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য অবশ্য জানায়নি সংস্থাটি; তবে বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘কানাডার ইতিহাসে এর আগে এত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
খুব দ্রুত সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে দ্য ফেডারেশন অব সোভারিজিন ইন্ডিজেনাস নেশনস।
এর আগে গত ২৯ মে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যের কামলুপস এলাকার একটি পরিত্যাক্ত আবাসিক স্কুল থেকে ২১৫ জন আদিবাসী শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া সেই দেহাবশেষগুলোর মধ্যে ৩ বছর বয়সী শিশুর দেহাবশেষও ছিল।
পঞ্চদশ শতকে স্পেনীয় অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস যখন প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে আমেরিকায় পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি ভুলক্রমে ভেবেছিলেন যে ভারতে উপস্থিত হয়েছেন। সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের তিনি অভিহিত করেছিলেন ‘ইন্ডিয়ান’ হিসেবে।
গায়ের রঙে লালচে ভাব থাকায় সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় আদিবাসীদের ‘রেড ইন্ডিয়ান’ জাতি নামেই চিনে আসছে বিশ্ববাসী।
দেশটির ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, অষ্টাদশ শতকের শেষ থেকে উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে যখন কানাডায় দলে দলে ইউরোপীয় বসতকারীরা (সেটলার) আসতে থাকে তখন স্থানীয় রেড ইন্ডিয়ান গোত্রগুলোর সঙ্গে তাদের বেশ কিছু সংঘাত হয়েছিল। ইউরোপীয় বসতকারদের হাতে উন্নত অস্ত্র ও প্রযুক্তি থাকায় সবগুলো সংঘাতেই শোচনীয় পরাজয় ঘটেছিল রেড ইন্ডিয়ানদের।
পরাজিত এই রেড ইন্ডিয়ানদের খ্রিস্টান ধর্মে অন্তর্ভুক্ত ও ‘অধিকতর সভ্য’ করে তুলতে উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে কানাডাজুড়ে বিভিন্ন আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা শুরু করে ইউরোপীয় সেটলাররা। দেশটির আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সে সময় দেশটিতে ১৩৯ টি এ রকম আবাসিক স্কুল ছিল। ক্যাথলিক খ্রিস্টান মিশনারিরা এই স্কুলগুলো পরিচালনা করতেন।
কানাডার রেড ইন্ডিয়ান, ইনুইট ও মেটিস জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের জোর-জবরদস্তি করে ভর্তি করা হতো এইসব আবাসিক স্কুলে। সেখানে শিশুদেরকে ব্যাপকভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনযাপন নিয়ে কটাক্ষ ও ব্যাঙ্গ করাও ছিল সেই স্কুলগুলোর নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ।
দেশটির আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৩১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল- পর্যন্ত চালু ছিল এ ধরনের আবাসিক স্কুল; এবং এই ১৬৫ বছরে প্রায় দেড়লাখ আদিবাসী শিশুকে জোরপূর্বক পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে এসব আবাসিক স্কুলে ভর্তি করা হতো।
কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার যদিও এই প্রথার জন্য ২০০৮ সালে ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু এসব আবাসিক স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে যে প্রতিষ্ঠানের হাতে ছিল, সেই প্রধান ক্যাথলিক চার্চ এখন পর্যন্ত এজন্য ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি। সূত্র: রয়টার্স
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।