Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুষ্টির অন্যতম উৎস অর্থকরী ফল আম

দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর করতে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : অধ্যাপক নাজমা শাহীন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিশ্বে আম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ দশে বাংলাদেশের অবস্থান। আম এ দেশে ফলের রাজা। দেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় এ ফলের। প্রতি বছরই এর উৎপাদন বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আম রফতানি হচ্ছে। এছাড়া দেশেও আমকে ঘিরে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। তবে এই রসালো মৌসুমী ফলের পুষ্টিগুণও রয়েছে অনেক। তাই আম দেশের অন্যতম অর্থকরী ফলের পাশাপাশি মানুষের পুষ্টির অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশের অন্তত ছয়টি জেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছে আম। দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে বছর বছর বাড়ছে আমের বাগান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশে ২ লাখ ৩৫ হাজার একর জমিতে আমবাগান রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে আমের উৎপাদন ২৪ লাখ টনের মতো। প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার আমের বাণিজ্য হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপি ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক মেহেদী মাসুদ বলেন, দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আম রফতানির সুযোগও তৈরি হয়েছে। তবে গত দু’বছর করোনামহামারির কারণে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না।

আম যেমন বিপুল সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল হিসাবে দেখা দিয়েছে, তেমনি আম দেশের অন্যতম পুষ্টিকর ফল। আমের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। আম উচ্চ প্রোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি ৬, কে, ফোলিক এসিড, আঁশ ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ একটি ফল। এছাড়া আমে কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন বিটা ক্যারোটিন ও জিয়াজেন্থিন রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, সস্তায় পুষ্টি উপাদান পাওয়ার অন্যতম উৎস আম। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর করতে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমের দাম অন্যান্য ফলের চেয়ে কম। এটি দেশের বেশির ভাগ এলাকায় পাওয়া যায়। দেশের গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ বাড়িতে নিজস্ব আমগাছ আছে। এসব গাছের আম গরীব পরিবারও খেতে পারে। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যেসব স্থানে আম চাষ হয় সেসব স্থানে আমগাছে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে নজর রাখতে হবে।

আম রসালো ফল। শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, রয়েছে শরীরের জন্য উপকারী নানান উপাদান। পুষ্টিগুণে ভরপুর আমে খেলে স্বাস্থ্যর অনেক উপকার হয়। পুষ্টি বিজ্ঞানিদের মতে, আম খাওয়ার ফলে আমাদের জীবনযাপনের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমে যায়। অনেক গবেষণায় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আম খাওয়ার ফলে স্থুলতা, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া ত্বক ও চুলের রঙের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, দেহের শক্তি বৃদ্ধির জন্য, কোলন ক্যান্সার রোধে, হাড় ও হজম শক্তির উন্নত করার ক্ষেত্রে এই ফলের ভূমিকা রয়েছে।

মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফারাহ মাসুদা বলেন, আম নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে। এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি যুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়ক।

তিনি বলেন, পাকা আমে ক্যারোটিনের মাত্রা বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রণ, ১৪ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৬ মিলি গ্রাম ফসফরাস, ১৬ মিলি গ্রাম ভিটামিন সি, ০.৯ মিলি গ্রাম রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন থাকে। এছাড়াও পাকা আমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.১ মিলি গ্রাম ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মিলি গ্রাম বি-২ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।

আমে থাকা এসব পুষ্টি উপাদান শরীরে নানা রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। যেমন, আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে। কার্বোহাইড্রেইট কর্মশক্তি যোগায়। আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে। আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে। এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে। আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গবেষকরা বলেছেন যে, আমে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটা কোলন, স্তন, লিউকেমিয়া এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আম

৮ জানুয়ারি, ২০২২
৯ জুলাই, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->