Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাতিয়ায় নিজস্ব অর্থায়নে নদীর তীর রক্ষার চেষ্টা

ভাঙনরোধে একাট্টা এলাকাবাসী

আনোয়ারুল হক আনোয়ার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

অপার সম্ভাবনাময় দ্বীপাঞ্চল হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে নদীভাঙন অব্যাহত। হাতিয়া উপজেলায় রয়েছে স্বর্ণদ্বীপ, ভাসানচর ও পর্যটনখ্যাত নিঝুমদ্বীপ। এছাড়া চর্তুপাশের্^ অর্ধশতাধিক চর-ডুবোচর। কিন্তু হাতিয়া মূলভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে ভাঙছে নদীর তীর।

হাতিয়ার ঐতিহ্যবাহী আফাজিয়া বাজার অচিরেই মেঘনার করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কয়েক হাজার পরিবার গৃহহীন হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নদীভাঙন রোধে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে এসেছে হাতিয়াবাসী। যে যার সামর্থ অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। হাতিয়া উত্তরাঞ্চলের নলচিরা ঘাটের পূর্বপাশের্^ ৫০০ মিটার এবং পশ্চিমপাশের্^ ২০০ মিটারসহ ৭০০ মিটার এলাকার নদীর তীরে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ১ লাখ ১৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হবে। ইতিমধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।

নদীভাঙন রোধকল্পে গঠন করা হয়েছে হাতিয়া নদী তীর শাসন ও তীর সংরক্ষণ কমিটি। এতে সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রধান উপদেষ্টা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমদের সভাপতি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন মুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কার্যকর কমিটি গঠন করা হয়েছে। দাতাদের সুবিধার্থে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ৯৭ লাখ ২৯ হাজার ৩০০ টাকা পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, প্রবাসী, চাকরিজীবী, পরিবহন মালিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নিজস্ব অর্থায়নে জিওব্যাগ ফেলে নদীর তীর রক্ষার কাজ চলছে। প্রাথমিক পর্যায়ে একাজে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন পেশার মানুষ তাদের ভিটেমাটি রক্ষায় এই সংগঠনের নিকট অনুদান দেয়া শুরু করেছে। এজন্য গাজীপুরের একটি কারখানা থেকে দুই ধাপে আনা হয়েছে ২৪ হাজার জিওব্যাগ। বালু ভর্তি ও ডাম্পিং এর জন্য রংপুর থেকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ৫০ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। এরআগে ২০২০ সালে নলচিরা ঘাটে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েক হাজার জিওব্যাগ নদীতে ফেলা হয়। এতে ভাঙনরোধে সফলতা পাওয়ায় দ্বীপবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাই এখন পুরোদমে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন জানান, ইতঃপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্ল্যানিং কমিশনে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে উক্ত প্রকল্পটি বড় পরিসরে ও পর্যালোচনা জন্য ফেরত পাঠানো হয়। উক্ত প্রকল্পটি প্রতিপালন করে পুনরায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্ল্যানিং কমিশনের অনুমোদন পেলে হাতিয়া উপজেলায় স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে কাজ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উদ্যোগে ভাঙনরোধে নদীতে জিও ্যাগ ফেলা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একাজে দিক নির্দেশনা প্রদান করছে।

হাতিয়া নদী তীর শাসন ও তীর সংরক্ষণ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী জানান, নদীভাঙন রোধে জনগণের স্বত:স্ফুর্ত সমর্থন পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সুফল মিলেছে। দলমত নির্বিশেষে হাতিয়াবাসী সহযোগিতা প্রদান করছে। আশা করি একনেক প্রকল্পটি অনুমোদন প্রদান করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ