Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঐতিহাসিক পলাশী দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা লিখছেন নেটিজেনরা

শাহেদ নুর | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২১, ৬:২৮ পিএম

আজ ২৩ জুন, ঐতিহাসিক পলাশী দিবস। বাংলার ইতিহাসের এক কালো দিন। ১৭৫৭ সালের এই দিনে দেশীয় কিছু বিশ্বাসঘাতক ও ইংরেজ বেনিয়াদের চক্রান্তে পলাশীর প্রান্তরে পরাজয় ঘটে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার নবাব সিরাজউদ্দৌলার। ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। উপমহাদেশের মানুষের এই ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন কথা লিখছেন নেটিজেনরা।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সালাউদ্দিন সুমন তোর ফেইসবুকে লিখেন, ‘সারা বাংলায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার জনপ্রিয়তা ছিলো আকাশচুম্বী। এ কারণে পলাশীর প্রহসনের যুদ্ধের পর মৃত সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে ভীষণ ভয়ে ছিলো ইংরেজরা। এই জনপ্রিয়তায় ধ্বস নামাতে না পারলে বাংলা তো বটেই, গোটা ভারতবর্ষে নির্বিঘ্নে শাসন চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। তারা সিদ্ধান্ত নিলো সিরাজউদ্দৌলাকে যেকোনো মূল্যে 'ঘৃণ্য' মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রথম অস্ত্র হিসেবে 'ধর্ম'কে বেছে নিলো তারা। আর দ্বিতীয় অস্ত্র 'চরিত্র'। এরপর তারা চালু করলো মিথ্যাচারের মেশিন। নিয়োগ দেয়া হলো দেশি-বিদেশী পেইড ইতিহাসবিদ। ইংরেজদের মর্জি মতো তারা ইতিহাস লিখতে থাকলেন। ধর্মের অস্ত্র ব্যবহার করে তারা লিখলেন, সিরাজ হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন। এটা প্রতিষ্ঠিত করতে সাজানো গল্পও লেখা হলো বহু। এইসাথে চরিত্র নিয়েও যা খুশি তা-ই লিখতে থাকলো তারা। যে সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসেই পর পর গোটা পাঁচেক যুদ্ধে জয়লাভ করে ইংরেজদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেন, তার সম্পর্কে লেখা হলো উল্টো। তিনি নাকি ভীতু, কাপুরুষ ছিলেন। দুইশো বছর ধরে এই কাজ চালিয়ে গেছে ইংরেজ ও তাদের দোসররা। কিছু মানুষ তাদের মিথ্যাচারকে সত্য মনে করেছে। তবে সিংহভাগ মানুষের মন থেকে প্রিয় নবাবকে মুছে ফেলা যায়নি। আজ পলাশী দিবস। ১৭৫৭ সালের এইদিনে বিশ্বাসঘাতকতার কারণে পলাশীর প্রান্তরে অস্তমিত হয়েছিলো স্বাধীনতার লাল সূর্য।’

অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহ লিখেন, ‘২৩ জুন, ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস। ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। ২৬৪ বছর আগে ১৭৫৭ সালের এই দিনে বেঈমানদের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মাধ্যমে ১৯০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়েছিলো স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাইরের শত্রুর তুলনায় ভেতরের বিশ্বাসঘাতকরা কতো বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে পলাশীর প্রান্তর তার জ্বলন্ত প্রমাণ। সেদিনের বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর ও ঘষেটি বেগমের প্রেতাত্মারা আজ আবারো চতুর্মুখি বিষাক্ত ষড়যন্ত্রে ভীষণ সক্রিয়। স্বাধীন পতাকা থাকলেও প্রকৃত অর্থে আজ আমরা কতখানি স্বাধীন এ প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসলামী চেতনাই আজাদীর রক্ষাকবচ। তাই আজাদীর হেফাজতে দেশপ্রেম ও ইসলামী চেতনায় জাতিকে জাগিয়ে তুলতে হবে আরেকবার। ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে অপরিহার্য বিপ্লবের পথে।’

আল আমিন জাহিদ লিখেন, ‘সিরাজুদ্দৌলার পরাজয় না হলে আজ আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা থাকতো ইউরোপের উপরে।’

‘আমরা এই পলাশীর যুদ্ধ থেকে আজও কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি নি।’ - এমডি সোহেল রানার মন্তব্য।

জাকির আল ফারুকী লিখেন, ‘যারা বিদেশি শক্তির তাবেদার হয়ে চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল, তারা ইতিহাসের ভাগাড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আর সিরাজ বাংলাভাষী লাখো কোটি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছে।’

আবদুল্লাহ আল মামুন লিখেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশেও অনেক মীরজাফর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এজন্যই বর্তমানে এই অবস্থা। সামান্য ব্যক্তি স্বার্থের জন্য দেশের সর্বনাশ করে ফেলছে তারা।’

সাইফুল আলম লিখেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যারাই ষড়যন্ত্র করছে এবং করবে, ইতিহাস কোনদিনই তাদের ক্ষমা করেনি এবং করবেনা।



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৩ জুন, ২০২১, ৭:১০ পিএম says : 0
    পলাশী ইতিহাস যদি সরণ করিয়া থাকি তবে আর যেন সেই রকম না হয়,বডার গুলি শক্ত ভাবে ঠিক রাখলে ভারতের করনা আমাদের আক্রান্ত করতে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Burhan uddin khan ২৪ জুন, ২০২১, ১২:০৬ এএম says : 0
    Thank you....190 years was british rule in the sub continent. IT was really black days for the muslims.Now we can stay free & fair .So, please remember during british rules & save our country & nation...Now we have independent, keep it up.....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ