পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নতুন সার্কিট ব্রেকারের (দাম কমা বা বাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা) নিয়ম চালু করায় গতকাল (২০ জুন) লেনদেনের শুরুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিলেও, তা কাটতে খুব বেশি সময় লাগেনি।
আতঙ্ক কাটিয়ে রোববার লেনদেনের শেষের দিকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে শেয়ারবাজার। আর সোমবার (২১ জুন) শেয়ারবাজারের মূল্যসূচকে রীতিমতো উল্লম্ফন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন বছর বা ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির পর প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। এর সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক ক্রান্তিকালে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়েছিল। সেই সময়ের জন্য সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। এতে অনেক বিনিয়োগকারী বড় লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তটিও সঠিক সময়ে নেয়া হয়েছে। তারা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। এতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের অপশন বেড়ে যাবে। যার ফলে লেনদেনের গতি বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত বছর দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সেই সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। তবে প্রায় এক বছর ধরে শেয়ারবাজার ভালো অবস্থানে থাকায় গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়।
এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দেয়। ফলে রোববার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কও কেটে যেতে থাকে। ফলে লেনদেনের শেষ দিকে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে।
আর সোমবার লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে প্রথম মিনিটের লেনদেনেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ১২৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসল। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সূচকটি ছয় হাজার ১২৭ পয়েন্টে ছিল।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকে। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচকে বড় উত্থানের পাশাপাশি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ৬৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬০ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ফিড।
এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ম্যাকসন স্পিনিং, ফরচুন সুজ, বিবিএস কেবলস, এনআরবিসি ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, এসকে ট্রিমস এবং ন্যাশনাল পলিমার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিয়ে বিএসইসি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের চয়েজ বাড়বে। এর ফলে লেনদেনের গতি যেমন বাড়বে, তেমনি বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর সার্বিক শেয়ারবাজার সম্পর্কে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করে সার্বিকভাবে বর্তমান শেয়ারবাজার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই উপযুক্ত। তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকা উচিত। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সার্বিক বিষয় ভালো করে ক্ষতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।