বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা খুব নিকটবর্তী হলেও একমাত্র ভরসা খেয়া নৌকা না হয় রংপুর হয়ে ঘুরে কয়েকঘন্টার পথ। সেই দুরত্ব কমানোসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের কথা ভেবে সরকার হাতে নেয় চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতু ও সংযোগ সড়ক। প্রকল্পের অনুমতি হলেও কর্তৃপক্ষের গাফলতি আর অনিয়মের কারনে দেখা দিয়েছে জটিলতা সংযোগ সড়ক নির্মানে বাঁধা সড়কের আশায় মাসের পর মাস অপেক্ষায় ব্রিজ ও কালভাট গুলো। জমির সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত এবং বারবার নশকার পরিবর্তনটিও হতাশা আর চিন্তায় ফেলিয়েছে এলাকাবাসীকে। জমির সঠিক মুল্যসহ সঠিক সমাধানের সাথে সাথে দ্রুত প্রল্পের আলোর মুখ দেখতে চান উত্তরাঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মানুষের বসবাস খুব কাছে হলেও একমাত্র তিস্তা নদীর খেয়া নৌকাই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এখনও। ফলে এ দুই জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, তিস্তার ওপর একটি সেতু নির্মাণের। এ নিয়ে অনেক সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি সরকারের নজরে আনার চেষ্টার ক্রটি ছিলনা। অবশেষে চিলমারী-হরিপুর সেতুর প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১ হাজার ৪৯০ মিটার চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর আশার আলো জেগে উঠে দুই জেলার মানুষের সাথে পুরো উত্তরাঞ্চলের মানুষের। যদিও সেই আলো বিভিন্ন জটিলতার কারনে ঠিক ভাবে জ্বলে উঠছিলনা বারবার হতাশায় ভুগছিল উত্তরাঞ্চলের মানুষ, সেই হতাশাকে দুর করে পুরোদমে সেতুসহ সংযোগ সড়কে কাজ দ্রুত গতিতে চলতে শুরু করলেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে ভূমিঅধিগ্রহনে জটিলতা সংযোগ সড়ক নির্মানের মাঝ পথে বাঁধা। সংযোগ সড়ক নির্মানের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হলেও ভূমি অধিগ্রহণ সার্ভেয়ারের এলোমেলো সীমানা খুঁটি স্থাপন করায় তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও সার্ভেয়ারের গাফলতি থাকায় চলমান কাজে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও সংযোগ সড়কের জন্য ৫ থেকে ৮ ফুট জায়গা বিনামূল্যে নেওয়া ও জমির মুল্য সঠিক ভাবে না পাওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। পরিকল্পনার অভাব ও কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারনে একদিকে জমির মালিকরা হচ্ছে সুবিধা থেকে বঞ্চিত অন্যদিকে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় হওয়ারও সম্ভবনা আছে বলে মন্তব্য করেন সচেতনমহল। সরেজমিনে শরিফেরহাট এলাকায় মাঝ পথে সংযোগ সড়কে কাজ বন্ধ এবং সরকারপাড়া কুষ্টারী এলাকায় ব্রিজ (কালভাট) এর সামনে ঘর নির্মান করে সড়ক নির্মানে বাঁধাগ্রস্ত করেছেন জমি অধিগ্রহন থেকে বঞ্চিত ও টাকা না পাওয়া জমির মালিকগন। উপজেলার শরিফেরহাট এলাকার সাজু গং জানান, সড়ক নির্মানে তাদের প্রায় ১৩ শতক জমি পড়লে অধিগ্রহন করা হয়েছে ৫শতক তাই তিনি সঠিকভাবে অধিকরনসহ সঠিক মুল্যের দাবি জানান। একই অভিযোগ ছোট কুষ্টারী এলাকার আজেমার তিনি বলেন তার জমি পড়লেও তা অধিগ্রহন না করেই সড়ক নির্মানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ, তিনি আরো জানান, এই জটিলতার জন্য বারবার ডিসি (জেলা প্রশাসক) কার্যালয়ে ঘুরেও কোন ফল পাননি। এলাকার আবদুর রহিম দুলাল জানান, সড়ক সংযোগের জন্য তার ১৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের কথা ছিল। বর্তমানে অধিগ্রহণ দেখানো হচ্ছে মাত্র ৫ শতাংশ। সংযোগ সড়ক নির্মাণে তার ৮ ফুট জমি বিনা মূল্যে দখল করা হচ্ছে। আজাদ মিয়া জানান, আমার ১৭ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হবে জানিয়ে ব্রিজ (বক্স কালভাট) নির্মাণ করা হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ সার্ভে অনুযায়ী আমার সাড়ে ১০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এরজন্য তারা দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ ও সার্ভেয়ারকে দায়ি করেছেন এছাড়াও সঠিক মুল্য প্রদান করা হয়নি অতচ ভ্যাট ট্যাক্স কর্তন করা হয়েছে ঠিকই বর্তমান আইন অনুযায়ী। সচেতনমহল বলেন বর্তমানে সড়কের মূল অ্যালাইনমেন্ট বাদ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে এলোমেলোভাবে জমি অধিগ্রহণের খুঁটি স্থাপন করায় দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিলুফা সুলতানা জানান, সরেজমিন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুটি ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থ। সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ৮১ মিটার ব্রিজ থেকে চিলমারী অংশে মাটিকাটা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার পড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।