শিক্ষার দৌঁড় ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। ছিলেন মুদি দোকানি। কিছুদিন ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করে। সেখানেই হাতেখড়ি প্রতারণার। এরপর খুলে বসেন বি এস এম বিজনেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লজিষ্টিকস কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তিনি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি। আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় খুলেন আলিশান অফিস। মানুষকে সহজে ব্যাংক ঋণ দেয়ার কথা বলে মাত্র এক মাসে হাতিয়ে নেন অর্ধ কোটি টাকা। এরপর পালিয়ে যান সিলেটে। সেখানেও এভাবে আর্থিক প্রতারণা করেন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে। দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর ধরা পড়েন মো. মনজিল (৩৮)। ডবলমুরিং থানা পুলিশের একটি দল শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানা এলাকা থেকে তাকে পাকড়াও করে। তার আগে চার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হলেও পালিয়ে ছিলেন মনজিল। ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, মনজিল একজন মহা প্রতারক। মানুষকে কোটি টাকা ঋণ প্রদানের লোভ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া অনলাইনে চাকুরি দেয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েও জামানতের নাম করে টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে এ প্রতারণা করেন। ওসি জানান, আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের আগ্রাবাদ সেন্টার ৪র্থ তলায় করেন আলিশান অফিস। কারও যেন কোন সন্দেহ না হয় সেজন্য বোর্ড মেম্বার ও অর্গানোগ্রামও নির্ধারণ করেন। মাঠ পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এরিয়া ম্যানেজার। তারাই মূলত বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঋণের নামে জামানত সংগ্রহ করে।

পাঁচ লাখের জন্য ১০ হাজার টাকা, ১০ লাখের জন্য ১৫ হাজার টাকা, ১১ লাখ থেকে ৩০ লাখের জন্য ২৩ হাজার টাকা, ৩১ লাখ থেকে ৫০ লাখের জন্য ৪৩ হাজার টাকা এবং ৫১ লাখ থেকে এক কোটির জন্য ৮২ হাজার টাকা করে সার্ভিস চার্জ নেয়া হয়। সাথে আছে প্রোফাইল খরচ। এভাবে তারা নগরীতে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে মোট ৩২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ২০ লাখ ৫১ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের প্রতারণা ধরা পড়ে যায়। মামলাও হয় সবার বিরুদ্ধে। এই মামলায় চেয়ারম্যান গ্রেফতার হলেও অধরা থেকে যান মনজিল। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।