পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নতুন সার্কিট ব্রেকারের (দাম কমা বা বাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা) নিয়ম চালু করায় গতকাল লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মাধ্যমে লেনদেন শেষ হয়েছে। গত বছর দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সে সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। তবে প্রায় এক বছর ধরে শেয়ারবাজার ভালো অবস্থানে থাকায় গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়। এ নিয়ম আরোপের পর গতকাল ছিল শেয়ারবাজারের প্রথম লেনদেন কার্যদিবস। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে এর সমালোচনা করা হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক প্রকার আতঙ্ক দেখা দেয়। যার নেতিবাচক প্রভাব গতকালের লেনদেনের শুরুতে পড়ে। প্রথম মিনিটের লেনদেনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩০ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটতে থাকে। ফলে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে শেয়ারবাজার।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৬৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই’র শরিয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্যসূচক বাড়লেও দিনের লেনদেন শেষে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৯টির এবং ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনেদেন কমেছে ১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৫১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ন্যাশনাল ফিড, বেক্সিমকো ফার্মা, ফরচুন সুজ, সামিট পাওয়ার, কনফিডেন্স সিমেন্ট, লুব-রেফ বাংলাদেশ এবং এনআরবিসি ব্যাংক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিএসইসি’র নতুন নির্দেশনায় যা আছে- ২০০ টাকার নিচে থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ১০ শতাংশ। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ টাকার নিচে তার শেয়ার বা ইউনিটের দাম একদিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে থাকা প্রতিষ্ঠানের সার্কিট ব্রেকার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৫ শতাংশ। এছাড়া শেয়ার বা ইউনিটের দাম ৫০০০ টাকার ওপরে হলে সার্কিট ব্রেকার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।