পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কেউ বাসা থেকে বা অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন। কেউ বাসাতেই স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মায়ের সঙ্গে ছিলেন। কখনো সাদা পপাশাকে, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাদের তুলে নিয়ে গেছে। পরে কারো কারো লাশ পাওয়া গেছে, কেউবা ফিরে এসেছেন। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়ে গেছেন। নিখোঁজের পর ফিরে আসলেও নিজ থেকে কেউই কী ঘটেছিল এখন পর্যন্ত সে সম্পর্কে কিছুই বলেননি। একই অবস্থা ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা আদনানের ক্ষেত্রেও। আদনান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন না। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনি বিশ্রামে আছেন। কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। শনিবার রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে ত্ব-হার বাড়িতে গেলে বাড়ির লোকজন কেউ সাড়া দিতে চান না। বাড়ির ভেতর থেকে বলা হয়, ত্ব-হা ঘুমিয়ে আছেন। বিশ্রামে আছেন। আবার কখনো বলা হয়, ত্ব-হা তার শ্বশুরবাড়িতে আছেন। তবে তাদের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য এখনো অজানা।
অন্যদিকে ত্ব-হার শ্বশুর আজহারুল মন্ডলের বাড়ি নগরের বাবু খা মাস্টার পাড়ায় গিয়ে খোঁজ করা হলে ওই বাড়ির লোকজনও তেমন কিছুই বলেননি। ত্ব-হা কোথায় আছেন জানতে চাইলে তাও জানানো হয়নি। তবে বাড়ির ভেতর থেকে একজন পুরুষ বলেন, ত্ব-হা তার পরিবারের সঙ্গে আছেন। ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। তার বিশ্রাম প্রয়োজন রয়েছে বলেই তিনি কারো সঙ্গে কথা বলবেন না।
এদিকে একই সঙ্গে নগরের আশরতপুরের বাসিন্দা গাড়িচালক আমির উদ্দিনের বাড়িতে গেলে একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। আমিরের ছোট ভাই ফয়সাল হোসেন বলেন, ভাই কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি। এই পরিবারের আর কোনো সদস্যও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। আবু ত্ব-হা আদনান, দুই সফরসঙ্গী ও গাড়িচালকসহ চারজনকে উদ্ধারের পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে গত শুক্রবার দাবি করে, আবু ত্ব-হাসহ চারজন ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন। ১০ জুন রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন আবু ত্ব-হা আদনান। তার মা আজেদা বেগম রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এর পরের দিন। নিখোঁজের আট দিন পর গত শুক্রবার তাকে পাওয়া যায়। তিনি সপরিবার রংপুর শহরে থাকেন। আটদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর প্রকাশ্যে আসা আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও সঙ্গীদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের নির্দেশের পর গত শুক্রবার রাতে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারাপুর গ্রামের বন্ধু ছিয়াম ইবনে শরীফের বাসায় তারা আত্মগোপনে থাকেন আদনানসহ চারজন। সেখানে সাত দিন অবস্থানের পর গত শুক্রবার ১৮ জুন সকালে তারা রংপুরে চলে যান।
তবে ছিয়ামের মা নিশাদ নাহার সাংবাদিকদের বলেন, ত্ব-হা ও তার সঙ্গীরা সাত দিন এই বাড়িতে থাকলেও আশপাশের কেউ জানত না। এমনকি তার ছেলে ছিয়ামও বিষয়টি জানতেন না বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ত্ব-হা এখানে এসে বলল, আমাকে দু’জন লোক ফলো করছে, আমরা এখানে কিছুদিন থাকব। আমার ছেলের সঙ্গে পরিচয় হলো কারণ তারা রংপুরে এসএসসি পর্যন্ত একসঙ্গে পড়েছে। তারপর দু’জন দুই কলেজে পড়ত। কিন্তু একসঙ্গে চলাফেরা করত। তারপর ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন দু’জন একসঙ্গে চলত। এদিকে আমরা গাইবান্ধায় চলে আসি। এখানে আসার পর আমার ছেলের চাকরি হয়। চাকরি সূত্রে সে রংপুরে থাকে। আর ত্ব-হা আমার বাসায় এর আগে অনেকবার এসেছে।
চারদিকে তাদের নিয়ে তোলপাড়, তারপরও আপনারা কেন জানাননি, এমন প্রশ্নে নিশাদ নাহার বলেন, আসলে এটা আমি ঠিকভাবে জানতে পারিনি কারণ আমার বাসার টিভিটা নষ্ট। আর আত্মীয়স্বজনরা আমাকে ফোনে বলেছে ও তো নিখোঁজ। তারাও বলেছে না জানাতে। কিন্তু পরে আমি ত্ব-হাকে বলেছি, যেহেতু মিডিয়ায় তোমাদের নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে, তোমরা কিন্তু এবার যেতে পারো। তারপর তারা চলে গেছে।
আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছেন আদনানের মা আজেদা বেগম : নিখোঁজের আট দিন পর আদনানকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিরাপদে পরিবারের হাতে তুলে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছেন মা আজেদা বেগম। সন্তান বাড়ি ফেরায় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। আট দিন ঠিক মতো ঘুমাতে পারিনি। কী করে ঘুমাব, ছেলে হঠাৎ নিখোঁজ! কোথায় কী থেকে কী হচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছিলাম না। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে জীবিত ফিরে এসেছে, এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। আর যেন কোনো বিপদ-আপদ না হয়। আমরা খুশি, সরকারকে ধন্যবাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।