পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব, মদ ও জুয়া নিয়ে সংসদে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। চিত্রনায়িকা পরীমনির ঘটনার সূত্র ধরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সূত্রপাত করেন। এরপর আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অন্য দলের এমপিরা এ নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় মদের অনুমোদন নিয়ে পরস্পরের ওপর দোষারোপ করা হয়। এ আলোচনায় কিছুক্ষণের জন্য সংসদ সরব হয়ে ওঠে। এ সময় জাতীয় পার্টির সদস্য বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রংপুরের ইসলামিক বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানকে খুঁজে বের করার দাবি জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার কিছু সময়ের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ। এ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের সদস্যরা মদ ও জুয়ার বিস্তারে একে অপরকে দোষারোপ করেন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবের মদ-জুয়ার আসরের কঠোর সমালোচনা করেন। অভিজাত এলাকায় ডিজে পার্টি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যের সুযোগ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু আলোচনার সূত্রপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বিএনপির হারুনুর রশীদ, তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এবং বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বাংলাদেশে মদ ও জুয়ার লাইসেন্স দেয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, বোট ক্লাবসহ সব ধরনের ক্লাব বঙ্গবন্ধু বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান আবার চালু করেছিল। যারা অপরাধের শুরু করেছে, তাদের আগে বিচার করা উচিত। ওখান থেকে ধরতে হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ বলেন, আমাদের বিরোধী দলের একজন সংসদ সদস্য একটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সিনিয়র এক সদস্য (শেখ সেলিম) কোথায় চলে গেলেন? বাংলাদেশে অনেক বিদেশি থাকেন। এছাড়া অন্য ধর্মের মানুষদের জন্য, ডোমদের জন্য মদের বৈধতা আছে। কোনো মুসলমানের জন্য আইনে অনুমতি নেই। জিয়াউর রহমান যদি মুসলমানদের মদের লাইসেন্স দিয়ে থাকেন যদি প্রমাণ করতে পারেন আমি সদস্য পদ ছেড়ে দেবো। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি। এই সব ক্লাবে মদের ব্যবসার সঙ্গে সরকারি লোক জড়িত। আমি চ্যালেঞ্জ করছি। পুলিশ এসব জায়গা থেকে টাকা নেয়। প্রধানমন্ত্রী কোনো দলের নয়, উনি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী। এসব খুঁজে দেখা হোক।
এমপি হারুনের বক্তব্যের সময় হৈ চৈ শুরু করেন সরকারি দলের সদস্যরা। এ সময় শেখ সেলিম আবারো ফ্লোর নেন। তিনি বলেন, লাকী খানের ঝাঁকি নাচের কথা কী ভুলে গেলেন? হিযবুল বাহার। জিয়াউর রহমান এগুলো করেছিল। বর্তমান সরকার কোনো মুসলমানকে মদের পারমিশন দেয়নি। বন্ধ করতে গেলে আপনারাই (বিএনপি) তো চিল্লাচিল্লি করবেন। বলবেন, ফরেনারদের পারমিশন লাগবে।
এর আগে আলোচনার সূত্রপাত করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কয়েক দিন যাবত উত্তরা বোট ক্লাব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কে করল এই ক্লাব? এই ক্লাবের সদস্য কারা? শুনেছি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা দিয়ে এই ক্লাবের সদস্য হতে হয়। এত টাকা দিয়ে কারা সদস্য হয়? আমরা তো ভাবতেই পারি না। সারাজীবন এত ইনকামও করি নাই। তিনি আরো বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবে মদ খাওয়া হয়। জুয়া খেলা হয়। বাংলাদেশে মদ খেতে হলে লাইসেন্স লাগে। সেখানে গ্যালন গ্যালন মদ বিক্রি হয়। লাইসেন্স নিয়ে খেতে হলে এত মদ তো বিক্রি হওয়ার কথা নয়। সরকারি কর্মকর্তারা এখানে কিভাবে সদস্য হয়? এত টাকা কোথা থেকে আসে?
অভিজাত এলাকায় ডিজে পার্টি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এই সংসদ সদস্য বলেন, রাজধানীর গুলশান-বারিধারা এলাকায় ডিজে পার্টি হয়। সেখানে ড্যান্স হয়। মদ খাওয়া হয়। এসব আমাদের আইনে নেই, সংস্কৃতিতে নেই, ধর্মে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন কেন এসব হচ্ছে? কেন বন্ধ করা হবে না? ওইসব ক্লাবের সদস্য কারা হয়? বোট ক্লাবের জায়গার একজন মালিক আছে। তিনি যেতেও পারেন না। এসব দেখতে হবে।
তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, হারুন সাহেবের সদস্যপদ আজই ছেড়ে দেয়া উচিত। উনি বললেন, জিয়াউর রহমান মুসলমানদের মদ খাওয়ার পারমিশন দেননি। উনি দেখাক, আইনে কোথায় বলা আছে মুসলমানরা মদ খেতে পারবেন না। আইন এখানে এনে দেখাক। পদ ছেড়ে দিক।
পরে জাতীয় পার্টির সদস্য বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান বলেন, এখানে রাষ্ট্রীয় কিছু বিষয় আছে। বঙ্গবন্ধু লাইসেন্স দেননি। ২১ বছরে আইনকে মিসইউজ করে এটা করা হয়েছে। বিদেশিদের অ্যারেঞ্জমেন্টের জন্য এটা করেছে। ক্লাবগুলোতে একজন ডাক্তার দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে নেয়, দৈনিক মদ খেতে হবে। তারপর লাইসেন্স নেয়া হয়। বিএনপি এই লাইসেন্স দিয়েছিল। এখন কোনো মুসলমান যদি মদ খায় সেখানে সরকারের কিছু করার নেই।
এ সময় নিখোঁজ রংপুরের ইসলামিক বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানকে দ্রæত খুঁজে বের করার দাবি জানান বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।