বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন, প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার, পরিবেশ সম্পর্কিত অসচেতনতা এবং সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে প্রাণ প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশকে ধ্বংস করে উন্নয়ন টেকসই অসম্ভব। সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক দৃঢ়তা থাকলে পরিবেশ-প্রতিবেশকে সমুন্নত রেখে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আজ শনিবার (১৯ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে পরিকল্পনা’ শীর্ষক একটি পরিকল্পনা সংলাপে বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত দেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজন করে এই সংলাপের।
বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান সংলাপে বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত পরিবেশগত বিপর্যয়ের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিআইপির গবেষণায় জীব-বৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থান ধ্বংসের কারণ বিশ্লেষণের জন্য পরিবেশগত বিপর্যয়ের ১০০টি কেস স্টাডি করা হয়েছে। যার মধ্যে পানি দূষণ (৪২), বায়ু দূষণ (২৯), মাটি দূষণ, বৃক্ষ নিধন (১৭), প্লাস্টিক দূষণ (৮) ও অন্যান্য দূষণ (৮) নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ আকতার মাহমুদ বলেন, পরিবেশের প্রতি আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে এবং পরিবেশের প্রতি যত্নশীল থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে হবে। উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল নীতিমালায় পরিবেশের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে এবং পরিবেশ নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখেই আমাদের পরিকল্পনা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
পরিবেশ রক্ষায় গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ব্যর্থতার মূলে রয়েছে সমন্বয়হীনতা ও পরিকল্পনাকে বুঝতে না পারা বলে মনে করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে গৃহীত নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাগুলোর মালিকানা না থাকায় সেই পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়নও হয় না। এছাড়াও বিভিন্ন শহরের গৃহস্থালি বর্জ্য পানির ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক আলাদা না করার ফলে নদী-খালের পানি দূষিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকার নদী-খাল রক্ষায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিশেষ পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির-উল-জব্বার বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন। একই সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনার অভাব এবং সাধারণ জনগণের অসেচতনতা আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় খুলনার খাল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা, খেলার মাঠ, পার্ক, উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধি, প্রতি বছর বৃক্ষরোপণ, জ্বালানি হিসেবে ফসিল ফুয়েলের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে সোলার সিস্টেমে উৎসাহিত করার সাম্প্রতিক উদ্যোগের কথাও বলেন এই পরিকল্পনাবিদ।
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের টাউন প্ল্যানার আজমেরী আশরাফী বলেন, পানি দূষণ রোধে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ড্রেনেজ পরিকল্পনা, বায়ু দূষণ রোধে ৪২ শতাংশ ভূমিকে কৃষি জমির জন্য বরাদ্দ রাখা এবং প্রতিটি সংস্থাকে তাদের কার্যক্রমে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করা এবং ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, যার কারণে রাজশাহী শহরে পরিবেশের মানদণ্ডে ভাল অবস্থানে আছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকল সংস্থা ও সকল স্তরের মানুষকে একাত্ম করা অত্যন্ত জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মহাপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সবার কাছে পৌঁছাতে পারলেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হয় বলে মন্তব্য করেন এই পরিকল্পনাবিদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।