দুই বছর পর জাতীয় দলে ফেরা ম্যাট হামেলস ডোবালেন জার্মানিকে। তার আত্মঘাতী গোলে জয়ের হাসি হাসলো ফ্রান্স। গোটা ম্যাচে দুই দল আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজালেও ওই একটি গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের পার্থক্য। তাতে ১-০ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে ইউরোতে শুভ সূচনা হলো ফরাসিদের।
সাত বছর আগে ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে একমাত্র গোল করে জার্মানিকে জেতান হামেলস। ব্রাজিলে ওইবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চার বছর বাদে বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় জার্মানরা। পরের বছরে তাকে ও থমাস মুলারকে দলে ব্রাত্য ঘোষণা করেন কোচ জোয়াকিম লো। তবে এই ইউরোতে সিদ্ধান্ত পাল্টে দুজনকেই ফেরান তিনি।
দুই বছর পর জাতীয় দলে ফেরার মুহূর্তটা হামেলসের জন্য হলো দুঃস্বপ্নের। বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালে পাঠান ৩২ বছর বয়সী জার্মান সেন্টার ব্যাক। পল পগবার পাসে বাঁ দিকে বল পান লুকাস হার্নান্দেজ। বায়ার্ন মিউনিখের এই ফরাসি ডিফেন্ডার গোলমুখের সামনে কিলিয়ান এমবাপ্পের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান। কিন্তু মাটিতে লাফিয়ে ছুটতে থাকা বল মাঠের বাইরে পাঠাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করেন হামেলস।
মাত্র ২০ মিনিটে ফ্রান্স লিড নিলেও ছন্দ খুঁজে পেতে সময় লেগেছে। যখন ছন্দে ফিরেছে, তখন থেকে জার্মানির রক্ষণভাগের ঘুম হারাম করে ছেড়েছে এমবাপ্পে, করিম বেনজেমা ও আতোঁয়ান গ্রিয়েজমানের আক্রমণভাগ। ১৫ মিনিটে বেঞ্জামিন পাভার্দের সঙ্গে ওয়ান-টু পাসে এনগোলো কাঁতে প্রথম আক্রমণের সুযোগ তৈরি করে দেন ফ্রান্সকে। ডানদিক থেকে পাভার্দের নিচু শট গিন্টার মাঠের বাইরে পাঠালে কর্নার পায় তারা। গ্রিয়েজমানের কর্নার থেকে পগবার হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে গেলে তাদের প্রথম সুযোগ নষ্ট হয়।
পরের মিনিটে এমবাপ্পের ডানপায়ের জোরালো শট কোনোভাবে মাঠের বাইরে পাঠান শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ম্যানুয়েল ন্যয়ার। পাঁচ মিনিট ধরে ফরাসিদের মুহুর্মুহু আক্রমণে তটস্থ জার্মান রক্ষণভাগ শেষ পর্যন্ত গোল উপহার দেয় ফ্রান্সকে।
গোল খাওয়ার দুই মিনিট পর জার্মানি সমতা ফেরাতে পারতো। রবিন গসেনসের উঁচু ক্রসে লক্ষ্যে হেড করেছিলেন মুলার। তবে পাননি জালের দেখা, গোলপোস্টের পাশ দিয়ে মাঠের বাইরে যায় বল। প্রথমার্ধের বাকি সময় বিক্ষিপ্তভাবে খেলতে থাকে দুই দল। তাতে এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতির পর ফিরেই জার্মানির রক্ষণভাগের পরীক্ষা নেন এমবাপ্পে। ৪৬ মিনিটে দারুণ ড্রিবলিংয়ে বল নিয়ে গোলমুখের সামনে যান পিএসজি ফরোয়ার্ড। কিন্তু হামেলসের চ্যালেঞ্জে সফল হননি তিনি। ৫১ মিনিটে এমবাপ্পের পাস ধরে বাঁ দিক থেকে শট নেন র্যাবিওট, কাঁপান গোলপোস্ট। দুই মিনিট পর চমৎকার সুযোগ নষ্ট করে জার্মানরা। গসেনসের ক্রসে সার্জ গিন্যাব্রির শট ক্রসবারের একহাত উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬৫ মিনিটে প্রতিপক্ষের ছয় খেলোয়াড়ের সামনে দিয়ে দর্শনীয় এক গোল করেন এমবাপ্পে, কিন্তু দুর্ভাগ্য যে পগবার পাস পায়ে নেওয়ার আগে অফসাইডে ছিলেন তিনি। পিএসজি তারকা ৭৭ মিনিটে তার গতি দেখান। কিম্পেম্বের বাড়ানো বল জার্মান ডিফেন্ডারের আগে দৌড়ে পায়ে নিয়ে বক্সে ঢোকেন এমবাপ্পে। শেষমেষ লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি, পড়ে যান বক্সের মধ্যে।
৮৫ মিনিটে দারুণ কাউন্টার অ্যাটাকে স্কোর ২-০ করেছিল ফ্রান্স। পগবার থ্রু বলে এমবাপ্পে ফাঁকা পোস্টে বেনজেমাকে গোলটি বানিয়ে দেন। কিন্তু সংশয় থাকায় রেফারি ভিএআর চেক করে অফসাইড দেন। তাতে আবারও আক্ষেপে পোড়ে ফরাসিরা।