বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আবারও ৩০ জুন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার মেয়াদ বেড়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ১৫ মাস দেশের সরকারি বেসরকারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সারা দেশের মতো কুমিল্লার প্রায় দুই হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ রয়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন জেলার প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক, কর্মচারী। কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ থাকায় গত বছরের এপ্রিল থেকে বেতনও পাননি তারা।
তবে ২০২১ সালের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীর জন্য সিট তৈরি ও মূল্যায়ন পরীক্ষা, সাময়িক পরীক্ষা চালু রাখার স্বার্থে প্রতিটি কিন্ডারগার্টেন থেকে হাতেগোনা কিছু শিক্ষকের চাকরি বহাল রাখা হয়। যার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে বাকি প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে পুনরায় চাকরিতে নেয়া হবে এমন আশ^াসেই বর্তমানে তারা মানবেতর দিন পার করছেন।
কিন্ডারগার্টেন স্কুলের স্বল্প বেতন ও প্রাইভেট টিউশনির টাকা দিয়ে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করতেন শিক্ষকরা। কিন্ডারগার্টেন বন্ধ থাকায় আয়ের পথও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থাভাবে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব শিক্ষক-কর্মচারী। ভাড়া বাড়িতে থাকা অনেক কিন্ডারগার্টেন স্কুল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। যারা এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বেতনের উপর নির্ভরশীল ছিলেন তারা পড়েছেন বিপাকে। এরই মধ্যে অনেকে চাকরি ছেড়ে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ জীবিকার পথ খুঁজছেন। অনেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অফিস সহকারী, দাড়োয়ান, নাইটগার্ড, আয়া, ঝাড়–দার অন্য পেশায় চলে গেছেন।
নগরীর শাসনগাছা এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করে সংসার চালাতেন আজাদ নামের এক শিক্ষক। স্কুলের বেতনের পাশাপাশি সংসারের ব্যয় মেটাতে অতিরিক্ত সময় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে চলত তার সংসার। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় এক বছর ধরে স্কুলের বেতন বন্ধ। নেই সরকারি সহায়তা। এতে কষ্টে কাটছে তার জীবন। বর্তমানে তিনি বাসায় বাসায় ঘুরে দুধ সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
বুড়িচং উপজেলার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল শিক্ষক রবিউল। স্কুলের বেতন আর শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চলত। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে রংমিস্ত্রীর কাজ করছেন।
এভাবে আজাদ রবিউলের মতো অনেকেই শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। মানবেতর জীবনের মুখোমুখী এসব শিক্ষকরা বলেন, এখন বাঁচার জন্য অন্য পেশায় আছি, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে আবার ফিরে যাবেন শিক্ষকতা পেশায়।
কুমিল্লা জেলা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ শামীম হায়দার জানান, কুমিল্লার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক কর্মচারী কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বেশির ভাগ স্কুলগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। তারা সবাই বিপাকে পড়েছেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি বাসা ভাড়া বা জায়গা ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা কিন্ডারগার্টেনের মালিকরাও বেকায়দায় রয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশনের মূল কাজ বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যেমে বৃত্তি প্রদান করা। এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষক কর্মচারীকে প্রনোদনা দেয়ার আর্থিক সামর্থ্য আমাদের নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।