Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন আঙ্গিকে ফিরছে নৌকা

যমুনার তীরবর্তী বগুড়া-গাইবান্ধা সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চল

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

পাল তোলা নৌকা যুগের অবসান ঘটলেও ফের ভিন্ন আঙ্গিকে ফিরে আসছে ওই নৌকা। প্রাণ ফিরে পাচ্ছে পুরনো নৌকার ঘাট ও ছোট ছোট নৌবন্দরগুলো। কর্মসংস্থান হচ্ছে মাঝি ও তাদের সহকারিসহ নৌকা তৈরির সাথে জড়িত শত শত মানুষের।

বাড়ছে নৌকায় যাতায়াত। আর সড়কের তুলনায় নৌপথে পণ্য পরিবহনে খরচ অনেক কম। সে সাথে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়ছে না। গত এক সপ্তাহে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকন্দি, ধুনট, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পর্যন্ত প্রায় ২০০ কিলোমিটার নৌপথ ঘুরে দেখা গেছে বালাসি, মেঘাই, সারিয়াকান্দির মত নৌবন্দরগুলো নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
নৌপথে পণ্য পরিবহন এবং ভ্রমণে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মাঝি ও তাদের সহকারিদের আয়ও বাড়ছে। বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের মত নৌকা খাতেও এখন বিনিয়োগ হচ্ছে। নদী তীরবর্তী অনেক জায়গায় গড়ে উঠেছে নৌকা তৈরি ও মেরামত কারখানা।

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় মেঘাই নৌ-বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে সারি সারি নৌকা বাধা। সবগুলোই ইঞ্জিনচালিত। আছে ভ্রমণ বা দ্রুত যাতায়াতের জন্য স্পিডবোটও। একটি স্পিডবোটের পার্টটাইম চালক ও কলেজ ছাত্র মাসুদ জানায়, করোনায় ক্লাস বন্ধের পর থেকে সে স্পিডবোটের চালক হিসেবে কাজ করছে। আগে পার্টটাইমার থাকলেও এখন ফুলটাইম কাজ করে মাসে বেতন পাচ্ছে ১৩ হাজার টাকা। সামনে বেতন বেড়ে ১৬ হাজার টাকায় হওয়ার কথা রয়েছে।

একই ঘাটের ইঞ্জিনচালিত নৌকার কয়েকজন মাঝি জানান, বর্ষাকাল ছাড়া নদ-নদীর পানি কমে যাওয়া এবং ব্যাপকভাবে সড়ক উন্নয়নের ফলে নৌকা প্রায় বিলুপ্তই হতে যাচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিস্তা, ধরলা, যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বসবাসরত লাখ লাখ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরাঞ্চলে যাতায়াতও বেড়েছে। নানা প্রয়োজনে শহরের মানুষকেও যেতে হয় চরাঞ্চলে। সে কারনেই নতুন করে নৌকার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

ইঞ্জিনচালিত নৌকা দ্রুত গতি সম্পন্ন হওয়ায় পাল তোলা ও গুণটানা নৌকার প্রয়োজন নেই বলেও জানান মাঝিরা। বালাসি ঘাটের পেশাদার মাঝি শাহীন মিয়ার মতে, সড়ক পথে যানজটের সমস্যা এড়াতেও বহু মানুষ এখন নৌ-পথ ব্যবহার করছে।
প্রতিটি নৌ-বন্দর বা নৌ-ঘাটের আশেপাশে বর্সাকালকে সামনে রেখে প্রচুর সংখ্যায় নৌকা তৈরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও মোটর যানবাহনের ওয়ার্কশপের আদলে গড়ে উঠেছে নৌকা তৈরির কারখানা। বর্তমানে লাভজনক হওয়ায় অনেকে নৌকা তৈরি ও নৌ-পরিবহন ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন। আবার অনেকে নৌকা কিনে ভাড়া দিয়ে আয়ের পথ করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কর্মসংস্থান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ