Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা পাড়ের মৈনট ঘাটে মিলনমেলা

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা

রাজধানী থেকে মাত্র ২৫/৩০ কিলোমিটার দূরে নবাবগঞ্জের কৈলাইল ইউনিয়নের কৈলাইল গ্রামে অন্তত ২৬ বিঘা জমি নিয়ে প্রকৃতির ছায়াঘেরা পরিবেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে বিনোদন পার্ক ‘রওশন গার্ডেন’। নান্দনিক এ পার্কটি বিনোদন ও পিকনিক স্পটের জন্য ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। পাখিডাকা, ছায়াঘেরা নির্মল পরিবেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত বিনোদন পার্কটিতে ঈদুল আজহার দিন থেকেই ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা পার্কটি ইতোমধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকার ভ্রমণপিপাসু মানুষের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছে। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় কয়েকটি স্তরে সাজানো হয়েছে পার্কটি। শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে শিশুপল্লী, বাউলদের জন্য বাউলপল্লী এবং অন্যদের বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে সুব্যবস্থা। রয়েছে পরিবার নিয়ে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। এছাড়া ১০০ থেকে ৭০০ মানুষের পিকনিক স্পটের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের আয়োজন রয়েছে রওশন গার্ডেনে। পার্কটিতে রয়েছে সারি সারি আম, লিচু, নারকেল, সুপারি গাছের সমাহার। শুধু দেশি-বিদেশি প্রায় ৩২ প্রজাতির আমগাছ রয়েছে এখানে। প্রকৃতিপ্রেমীরা ভিন্ন এক আবেশ পাবেন এখানে। এছাড়া শাণবাঁধানো পুকুর দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে। পুকুরে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। শিশুদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রাণীর ম্যুরালের মধ্যে রয়েছে ডাইনোসর, জিরাফ, কুমির, হাতি, ব্যাঙ, কচ্ছপ, বাঘ, উটপাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী। রয়েছে শিশুদের বিভিন্ন রাইডস। হাঁটার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত জায়গা। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা। দূরের দর্শনার্থীদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে পার্কটিতে। কৈলাইল গ্রামের মৃত সুলতান আহমেদ খানের ছেলে সৈয়দ আহম্মদ খান নিজ উদ্যোগে পার্কটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেন। আর পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে সৈয়দ আহম্মদ খানের সহধর্মিণী রওশন আরার নামে। ১০ বছর কাজ করার পর পার্কটি বাস্তব রূপ দাঁড় করান সৈয়দ আহম্মদ খান। এর পরপরই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় পার্কটি। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় পার্কটি। প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে মাত্র ৩০ টাকা। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন পার্কটিতে। কীভাবে যাবেন : ঢাকার গুলিস্তান গোলাপ শাহ’র মাজারের সামনে থেকে এন. এল্লিক, দ্রুতি পরিবহন, যমুনা পরিবহনের বাস প্রতদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নবাবগঞ্জের উদ্দেশে যাতায়াত করে। একটু দ্রুত যেতে চাইলে নবাবগঞ্জের আগে তুলশীখালী ব্রিজের টোলঘরের সামনে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক রিজার্ভ করে সরাসরি যেতে পারেন রওশন গার্ডেনে। মাত্র ৩০ মিনিটের এ পথে ভাড়া লাগবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। নবাবগঞ্জ থেকে সিএনজিতেও কৈলাইল পার্কের সামনে যাওয়া যায়। অপরদিকে, দোহারে রয়েছে ছোট কক্সবাজার মৈনট ঘাটের আশপাশে বিশেষ করে পূর্বদিকে আছে বিশাল চর আর সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। এই ঘাটের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই একে ছোট কক্সবাজার বা মিনি কক্সবাজার নামে ডাকতে শুরু করেছে। পদ্মায় ঘুরে বেড়ানো-নৌকা কিংবা স্পিডবোটে পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়াতে পারেন। ৮ জনের উপযোগী একটি স্পিডবোটের ভাড়া আধঘণ্টার জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। এছাড়া আড়াইশ’ থেকে ৮’শ টাকা ঘণ্টায় ইঞ্জিন নৌকায় ৪ থেকে ২০-২৫ জন একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানো যায়। সতর্ক থাকতে হবেÑ স্পিডবোট কিংবা নৌকায় পদ্মায় ঘোরার সময় লাইফ জ্যাকেট পরা উচিত। কেননা বর্ষা ও শরতের সময় পদ্মার ঢেউ হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। তাই খুব ছোট নৌকা নিয়ে পদ্মার ভেতরে বেড়াতে যাওয়া ঠিক হবে না। নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, নবাবগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। তবুও পুলিশ সতর্কতায় থাকবে। ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা যমুনা পরিবহনে চেপে বসা। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাট। দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আল-আমীন বলেন, দোহারে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে স্পটগুলোতে অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তাছাড়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা পাড়ের মৈনট ঘাটে মিলনমেলা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ