Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মামলা নিষ্পত্তিতে কুমিল্লার আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে গুরুত্ব বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : সাক্ষ্য প্রদান বিলম্বিত হওয়ায় দীর্ঘ সময়েও নিস্পত্তি হত না চাঞ্চল্যকর, লোমহর্ষকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা। আদালতের দুয়ারে আসা-যাওয়াতেই বছর বছর কেটে যেত বাদী-বিবাদীদের। মামলা নিস্পত্তিতে অন্যতম বিষয় সাক্ষ্যপ্রদান প্রক্রিয়ার মন্থরগতি এখন দ্রæতগতির জায়গায় ফিরে আসছে কুমিল্লার আদালতে। গুরুত্ব সহকারে সাক্ষ্যপ্রদান তরান্বিত করতে বাড়ছে তদারকি। তবে নির্বিঘেœ সাক্ষ্য প্রদানের সার্থে সাক্ষীদের জন্য আলাদা সেল গঠনের আহŸান জানিয়েছেন পাবলিক প্রসিকিউটর।
মামলার সাক্ষী উপস্থিতি নিশ্চিত ও আদালতে নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী আসার পরও যাতে কোনভাবেই সাক্ষ্যপ্রদান কার্যক্রম ভেস্তে না যায় এজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয়। কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট আরও আটটি আদালতে সাড়ে দশ হাজারের বেশি মামলা বিচার নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। চার্জশিট দেয়ার পর এসব মামলার বয়স দুই থেকে ১২ বছরও পার হয়েছে। কিন্তু নিস্পত্তি হচ্ছে না। কারণ একটাই, মামলার সাক্ষ্যপ্রদান প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে না। ফলে জেলার চাঞ্চল্যকর, লোমহর্ষকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারপ্রার্থীরা যেমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে তেমনি আসামীপক্ষের লোকজনদেরও একের পর এক মামলার ধার্য তারিখে আদালতের দুয়ারে ঘুরতে হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীরা তারিখের দিন তাদের মামলার সাক্ষী নিয়ে আদালতে এলেও দেখা গেছে সংশ্লিষ্ট মামলার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কৌশুলীর অনুপস্থিতি বা অনীহার কারণে ওই তারিখে সাক্ষ্যপ্রদান হচ্ছে না। ফের তারিখ পড়ছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা গেছে সাক্ষীর সমন আদালত থেকে পাঠানো হলেও সাক্ষীর কাছে তা পৌঁছে দেরিতে। ফলে সাক্ষীও আদালতে আসার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে পারায় আবার তারিখ। অথবা সাক্ষীর নামে ওয়ারেন্ট। এভাবে সাক্ষীর জন্য একেকটি মামলা নতুন নতুন তারিখে বছর গড়ায়।
জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, ‘সাক্ষ্যপ্রদান সম্পন্ন না হওয়ার কারণে হাজার হাজার মামলা বিচারাধীন অবস্থায় পড়ে থেকে বিচারপ্রার্থী ও আসামী পক্ষকেও ভোগান্তি দেবে এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক বিষয়। এ অবস্থা থেকে মামলা সংশ্লিষ্ট সবাই সস্তি চায়। আর তাই পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয় থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট আরও আটটি আদালতে যেসব মামলা সাক্ষ্যপ্রদানের কারণে নিস্পত্তির দিকে এগুতে পারছে না, এসব মামলার সাক্ষীরা যাতে কোন অবস্থাতেই নির্ধারিত তারিখে আদালতে এসে ফেরত না যায় এজন্য অতিরিক্ত পিপি, এপিপিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা অনুযায়ি নির্ধারিত তারিখে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিতসহ সাক্ষ্যপ্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত পিপি, এপিপিগণ আন্তরিকতার সাথে কাজ শুরু করেছেন। এরিমধ্যে বেশ কটি মামলার সাক্ষ্যপ্রদান যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষীদের বিষয়টি আমরা অত্যন্ত দায়িত্বের সাথে তদারকি করছি। বিচারপ্রার্থীরা বেশ খুশি। তবে সাক্ষ্য প্রদানের এ জায়গাটি আরও দ্রæতগতিতে আনার জন্য আদালতে সাক্ষীদের জন্যএকটি আলাদা সেল গঠনের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করছি। কেননা নির্ধারিত তারিখে এসে অনেক নতুন সাক্ষী এক কোর্ট থেকে আরেক কোর্টে দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে থাকে। তারা অনেকটা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েন। তাই আলাদা সেল গঠন হলে সাক্ষীরা এ সেলে এসে তাদের সাক্ষ্য প্রদানের সার্বিক বিষয়ে অবহিত হতে পারবেন’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা নিষ্পত্তিতে কুমিল্লার আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে গুরুত্ব বাড়ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ