নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্রিকেটে একটি কথা সর্বজন বিদিত- ‘আম্পায়ার্স কল ইজ অল’। তারপরও তাদের সিদ্ধান্তে প্রায়ই নাখোশ হতে দেখা যায় ক্রিকেটারদের। তবে সাকিব আল হাসান নাখোশ হয়ে যে প্রতিক্রিয়া দেখালেন, ক্রিকেট মাঠে তা একদমই নজিরবিহীন। জোরালো আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় স্টাম্পেই লাথি মেরে বসেছেন মোহামেডান অধিনায়ক। এক ওভার পর স্টাম্প হাতে তুলে আছাড়ও মারেন তিনি। এই সময়ে আম্পায়ারকে শাসাতেও দেখা গেছে তাকে। পরে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় প্রতিপক্ষের দিকে তাকিয়ে অশালিন ভঙ্গিও করেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার! এমন আচরণের জন্য শৃঙ্খলাভঙ্গের শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে জেনেই কি-না, ম্যাচটি জিতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুকে কিছুক্ষণ পরই ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই ‘পোস্টারবয়’।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আবাহনী লিমিটেডের মধ্যে ঘটেছে এই ঘটনা। আগে ব্যাটিং করে ১৪৫ রান করে মোহামেডান। সাদামাটা লক্ষ্য নিয়ে বোলিংয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। ৩টি উইকেট তুলে নিয়েছিল। বৃষ্টির আগে আরেকটি উইকেট পেলে ডি এল পদ্ধতিতে নিশ্চিত থাকতে পারতো তারা। আর একটি উইকেটের জন্য মরিয়া হয়েই খেলছিল মোহামেডান। আকাশে তখন ঘন কালো মেঘ। দ্রুতই বলগুলো করছিলেন সাকিব। একটি উইকেট পেলেই হয়তো পাঁচ বছর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে জয়টা পেতে পারে তারা। কিন্তু সাকিবের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়াতেও যতো গণ্ডগোল।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলটি অবশ্য দারুণ করেছিলেন সাকিব। ওই প্রান্তে ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ঠিকভাবে লাগাতে পারেননি। এলবিডাব্লিউর জোরালো আবেদন করে পুরো দলই। খালি চোখেও মনে হয়েছিল আউটই ছিল। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া না দিলে এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ক্ষেপে লাথি মেরে উইকেটই ভেঙে ফেলেন সাকিব। এরপর আম্পায়ার ইমরান পারভেজের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন সাকিব। পরে সতীর্থরা তাকে শান্ত করে নিয়ে যান। তখন আবাহনীর সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২১ রান। আর বৃষ্টির কথা মাথায় রেখেই পরের ওভারে শুভাগতর উপর আগ্রাসী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। দুটি বাউন্ডারিতে পরের পাঁচ তুলে নেন ১০ রান। এরপরই নামে বৃষ্টি।
এ সময়ে মিডঅফে ফিল্ডিং করছিলেন সাকিব। দৌড়ে এসে তুলে নেন স্টাম্প। এরপর আছাড় মারেন। সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান। তার সঙ্গেও তর্কে লিপ্ত হন মোহামেডান অধিনায়ক। এক পর্যায়ে সতীর্থরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। বৃষ্টির বেগ বাড়তে থাকায় মাঠ ছেড়ে সবাই তখন ফিরছেন ড্রেসিং রুমে। সাকিবের এমন আচরণে আবাহনী ড্রেসিং রুম থেকে তেড়ে এসেছিলেন আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও। তবে তাকে মোহামেডান ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ গিয়ে শান্ত করেন।
পরে পসিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ৮১ মিনিট পর মাঠে ফেরে ম্যাচ। জয়ের জন্য আবাহনী পায় ৯ ওভারে দুরূহ ৭৪ রানের লক্ষ্য। তবে মুশফিকের দল থামে ৬ উইকেটে ৪৪ রানে। টানা তিন হারের পর জয়ে ফিরল মোহামেডান। আর তাতে ৫ বছর পর চীরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারাল ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। আর তাতে সবদিন থেকেই রাঙিয়ে তুললেন সাকিবই।
তার ব্যাট হাসছে না অনেক দিন ধরেই। প্রিমিয়ার লিগে এর আগের ছয় ম্যাচে মাত্র ১২.১৬ গড়ে রান করেছেন ৭৩। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে করেছেন ১৫, ০ ও ৪। এর আগে রান পাননি আইপিএলেও। অথচ ব্যাট হাতে ফর্মে ফিরতে নেটে বাড়তি অনুশীলন করছেন নিয়মিত। গতকাল ম্যাচের আগেও মিরপুরের ইনডোরে আলাদা করে অনুশীলন করেছেন। এবার বুঝি মুখ তুলে তাকাল ভাগ্য। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন সাকিবই। ২৭ বলের ইনিংসটি ১টি চার ও দুটি ছক্কায় মোড়ানো।
সময়ের ফেরে আবাহনী-মোহামেডান ক্রিকেট দ্বৈরথ রঙ হারালেও সাকিবের কল্যাণে এদিন যেন অতীতের উত্তেজনাই ফিরল মাঠে। ঠিক যেন নব্বই দশকের একটি ম্যাচেরই পুন:মঞ্চায়ন হলো হোম অব ক্রিকেটে!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।