Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা সংক্রমণ ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের মধ্যে রামগতির ৩ ইউপি নির্বাচন!

সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন আগ্রহ নেই

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২১, ২:২০ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মেঘনা তীরের ৩ টি ইউনিয়নে করোনার সংক্রমণ ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের মধ্যে আগামী ২১জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। যদিও এ নির্বাচন নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ নেই। সাম্প্রতিক ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে এই উপজেলার কয়েকটি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অধিকাংশ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানিতে বেশিরভাগ সড়ক বিধস্ত হয়েছে। এখনো অনেক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে নেই কোন নির্বাচনের প্রস্তুতি। পাশাপাশি তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। তৃণমূল পর্যায়ে প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রার্থী ও সমর্থকরা স্বাস্থ্যবিধি মানাছেনা কেউ। ভোটাররাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২১ সালে নির্বাচন উপযোগি ৩ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন সচিবালয়। এ তালিকায় উপজেলার চররমিজ,চরপোড়াগাছা ও চরবাদাম ইউনিয়ন রয়েছে। এই ইউনিয়ন গুলোর মধ্য সবচেয়ে বেশি আতংকে রয়েছে চররমিজ ইউনিয়নের ভোটাররা। এই ইউনিয়নটি মেঘনানদীর তীর সংলগ্ন। জোয়ারের পানি ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চররমিজ ইউনিয়ন। এখন আবার ভোটের তারিখ ঘোষণা হওয়ায় আতংকে রয়েছে ভোটার ও এলাকাবাসী।

রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অফিস সূত্রে জানা যায়,বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ১৮২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।এর মধ্যে ৩ জন মারা যান।

উপজেলার কয়েকজন ভোটার জানান, উপকূলীয় এলাকায় বর্ষার প্রবল বৃষ্টি,ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও প্রবল জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেড়িবাঁধ। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। এই অবস্থায় নির্বাচন হলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য কেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব হবেনা।

সামাজিক সংগঠন নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান মনে করেন, মেঘনা উপকুলীয় রামগতি উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পানির নীচে তলিয়ে আছে। যেখানে মানুষ স্বাভাবিক কাজ করতে পারেনা সেখানে নির্বাচন কিভাবে হবে বুঝতে পারছিনা। তাছাড়া যোগযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঠিকভাবে কাজ করতে পাবেন না। এতে সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়েও আশংকা প্রার্থী ভোটার ও সচেতন মহলের।

এমনিতেই করোনা নিয়ে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে। এখন অতি প্রয়োজন না হলে
সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা মানে উপকুলীয়
অঞ্চলে সংক্রমণ আরো বেড়ে যাওয়া।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও এনজিও ব্যক্তিত্ব আবদুল আউয়াল মনে করেন, নির্ধারিত
সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা না গেলেও আইনগত কোনও সমস্যা হবে না।
ইউনিয়ন পরিষদ আইনের ১০১ ধারার বিধান মতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে
আদেশ জারি করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ কামনাশীষ মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, এর আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে প্রচুর মানুষের শোডউন হয়। এধরনের শোডাউন হলে সংক্রামণ বাড়ার মারাত্বক ঝুঁকি থাকে। তিনি আরো বলেন,এখনতো করোনা পরিস্থিতি সারা দেশেই খারাপ অবস্থা। তাছাড়া আমাদের এখানে
বর্তমানে ডায়রিয়া পরিস্থিতিও খুবই খারাপ চলছে।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোমিন ইনকিলাবকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় অঞ্চল রামগতির বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। বেড়িবাঁধ নেই এমন অনেক এলাকায়
এখনো জোয়ারের সময় রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষাকালের বিষয়টি আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন থেকে যে নির্দেশনা দিবে আমরা তা বাস্তবায়নে কাজ করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপজেলা নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ