Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মন্দঋণ, শেয়ারবাজার ও বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে সংসদে যা বললেন রুমিন ফারহানা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২১, ৯:১৫ পিএম

বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বিদেশে প্রতিবছর ১ লাখ কোটি টাকার বেশি চলে যাচ্ছে। ওভার এন্ড আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে এটাকা। আর হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো টাকা এর সাথে যুক্ত করলে কেবল আল্লাহ মাবুদই জানেন কত টাকা বিদেশে চলে গেছে। তিনি সংসদে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় সোমবার এ কথা বলেন।

রুমিন ফারহানা প্রশ্ন রাখেন, আমাদের দেশের মন্দ ঋণ কত? ২০১৯ সালের সরকারি হিসেবে মন্দঋণ ছিল ব্যাংকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২০ সালে সেটা কমে দাঁড়ালো ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালে এসে শুনলাম ৮৮ হাজার কোটি টাকা মাত্র। যখন সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা মন্দঋণ ছিল, তখন আইএমএফ’র ভাষ্য মন্দঋণ প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকার উপরে।দেশের অর্থনীতিবিদরা দাবি করছেন, সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা মন্দঋণ। আবার কেউ কেউ বলছেন চার লক্ষ কোটি টাকার উপরে মন্দঋণ। আসলে আমাদের মন্দঋণ কত, সেটা যদি আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী জানাতেন, তাহলে ভালো হতো।

রুমিন ফারহানা বলেন, যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখনই শেয়ারবাজার শুয়ে পড়ে। এটার যে কী একটা অদ্ভুত সম্পর্ক, এটা বুঝতে পারলাম না। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলো, শেয়ারবাজার সাথে সাথে শুয়ে পড়লো। পরে যখন ২০০৯ সালে তারা যখন আবারও ক্ষমতায় আসলো, শেয়ার বাজারের সেই একই অবস্থা আবারও হলো।

সাবেক অর্থমন্ত্রী সম্পর্কে রুমিন ফারহানা বলেন, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বললেন, আমি শেয়ারবাজার বুঝি না। এটা হলো পটকাবাজার। যেই সরকারের অর্থমন্ত্রী বলতে পারেন, আমি শেয়ারবাজার বুঝি না, তার আর অর্থমন্ত্রী থাকার অধিকার থাকে কি না, সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। তিনি অবশ্য অলরেডি সাবেক হয়ে গেছেন। কিন্তু আমি প্রশ্নটি রেখে গেলাম। তবে তিনি স্পষ্ট কথা বলতেন। দলের বিরুদ্ধে গেলেও স্পষ্ট বলতেন। তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক দেয়া হয়। একটা দেশে যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক দেয়া হয়, তখন সেদেশের অর্থনীতি, অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে বলতে তো ডেফিনেটলি চিন্তা করতে হয় মাননীয় স্পিকার।

রুমিন ফারহানা বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুট করে তাদেরকে সুযোগ দেয়ার জন্য একটার পর একটা নতুন আইন হয়। ব্যাংক কোম্পানী আইন পরিবর্তন করে এককটা ব্যাংক একেকটা পরিবারের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন এক পরিবার থেকে তিনজন থাকতে পারবে ব্যাংকের পরিচালক। একাধিক্রমে তিন মেয়াদে থাকতে পারবেন তারা। এই পরিবর্তনগুলোর কারণে একেকটা পরিবার একেকটা ব্যাংকের মালিক হয়ে যাচ্ছে এবং জনগণের টাকার হরিলুট করছে।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, একবার সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা হলো। তিনশ জন ঋণখেলাপির তালিকা আমরা দেখলাম। তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেটা কিন্তু আমরা এখনও জানতে পারলাম না। ব্যাংকে যে টাকাগুলো থাকে, সেটা আমাদের মতো আমজনতার আমানতের টাকা। এক ব্যাংকের পরিচালকের সাথে আরেক ব্যাংকের পরিচালকের ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের পরিচালক ঋণ নেন। ঋণ নেয়ার সময় তারাও জানেন যে, এই ঋণ আর পরিশোধ করবেন না।শুরুতেই তারা জানে যে, এ টাকাটা তারা নিয়ে যাচ্ছে। এটাকাটা যে দেশে থাকে, তাও না। এ টাকা চলে যায় বিদেশে। যেকারণে গ্লোবাল ফাইনেন্সিয়াল ইনটিগ্রিটি প্রতিবছর যে রিপোর্ট দিচ্ছে তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে প্রতিবছর চলে যাচ্ছে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার উপরে। এই হিসাব যদি আমরা ধরি, গত ১০ বছরে প্রায় সাড়ে ৮ থেকে ৯ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে চলে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রুমিন ফারহানা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ