পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে গতকাল। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৮ টাকা টাকার লেনদেন হয়েছে। যা ১০ বছর ৬ মাস বা ২ হাজার ৪৯১ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকার। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক কমেছে। তবে বেড়েছে অপর দুই সূচক। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর হার কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কালো টাকার বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছুই বলেননি অর্থমন্ত্রী। এ কারণে ধরে নেয়া হচ্ছে চলতি অর্থবছর মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের যে সুযোগ দেয়া হয়, তা আগামী অর্থবছর থাকবে না। ফলে আগামী ৩০ জুনের পর শুধু ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে না। যদিও বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কালো টাকা বা অপ্রদশিতথ অর্থ নিয়ে আশার কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন, কালো টাকা এবং অপ্রদর্শিত আয়ের মধ্যে ব্যাপক ডিফারেন্স। এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। কেউ বলে এই সুযোগ রাখেন আরেকপক্ষ বলেন, এটা ঠিক নয়। তবে দেশের স্বার্থে যেটা ভাল সেটা করার এখনো ১ মাস সময় আছে। বিষয়টি আরও পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আর এ কারণেই এবার অপ্রদর্শিত অর্থের বিষয়টি বাজেটে আনা হয়নি। একই সঙ্গে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ায় কি পরিমান অর্থ মূল ধরায় এসেছে। এর ভালো, মন্দো দেখা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে কী উপায়ে এ জাতীয় অর্থ মূল ধারায় আনা যায় সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হবে।
অর্থমন্ত্রী নতুন বছরের প্রস্তাবিত বাজেট দেয়ার পর গতকাল ছিল শেয়ারবাজারের প্রথম কার্যদিবস। এদিন লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। প্রথম ১৪ মিনিটের লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে যায়। পরে সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা শেষ পর্যন্ত টেকেনি। লেনদেনের শেষ দিকে এসে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বাড়লেও দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২০১টির। ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অবশ্য বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও ডিএসইতে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৮ টাকা, যা ১০ বছর ৬ মাস বা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিএসইতে ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
রেকর্ড এই লেনদেনের দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৯৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইফাদ অটোসের ৬১ কোটি ২৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী ইন্স্যুরেন্স, রবি, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, এসএস স্টিল এবং সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৩টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।