মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দোসর ডেনমার্ককে নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের গুপ্তচরবৃত্তি করায় যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখ্যোঁ। সোমবার ফোনে কথা হয় দু’জনের। তারপরেই গোটা ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ডেনমার্কের কাছে উত্তর চেয়েছেন মাঁক্রো। ম্যার্কেল জানিয়েছেন, তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। তবে, কূটনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, ম্যার্কেলের প্রতিক্রিয়া খানিকটা নরম।
ডেনমার্কের গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একাধিক নেতা-নেত্রীর উপরে দিনের পর দিন নজরদারি চালিয়ে গিয়েছে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। রোববার ডেনমার্কের জনসংবাদমাধ্যম ‘ডানমার্ক রেডিও’ (ডিআর)-র তরফে এই বিস্ফোরক দাবি করা হয়। দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত নজরদারি চালানো হয় সুইডেন, নরওয়ে, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশের শীর্ষ রাজনীতিকদের উপরে। যা ঘিরে ডেনমার্ক এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে এ বার সুর চড়াল ফ্রান্স-সহ ইইউ-ভুক্ত একাধিক দেশ। তাদের বক্তব্য, রিপোর্ট সত্যি প্রমাণিত হলে, যা করা হয়েছে তা ‘গুরুতর অপরাধ’। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে তারা।
আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ঘটা এই ‘আড়িপাতার’ ঘটনার অভিযোগ নিয়ে ২০১৩ সালে প্রথম মুখ খুলেছিলেন এনএসএ-এর প্রাক্তন কনট্র্যাক্টর ‘হুইসল ব্লোয়ার’ এডওয়ার্ড স্নোডেন। যদিও তখন ডেনমার্কের এই নজরদারির সঙ্গে জড়িত থাকার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। তবে রোববার ডিআর-এর প্রকাশিত রিপোর্টে উঠে এসেছে, ডেনমার্কের ‘ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস’ (এফই) বিষয়টি নিয়ে একটি গোপন তদন্ত চালিয়েছিল।
সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছিল ডিআর-এর এই রিপোর্ট। যেখানে নাম না-করে কমপক্ষে ন’টি সূত্রের উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, ডেনমার্কের ‘সাবমেরিন ইন্টারনেট কেব্ল’ পরিষেবার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের উপরে আড়িপাতা হচ্ছিল এনএসএ-র তরফে। ডেনমার্ক প্রশাসন বিষয়টি জানলেও আমেরিকার সঙ্গে ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের খাতিরেই’ হয়তো তারা আপত্তি করেনি। এ ভাবে পাওয়া বিপুল পরিমাণ তথ্য জড়ো করে রাখতে ডেনমার্কের আমেজর দ্বীপে ডেনমার্কের গুপ্তচর সংস্থার দফতরে একটি ‘তথ্যকেন্দ্র’ও গড়ে তোলা হয়েছিল বলে দাবি ওই রিপোর্টের।
নজরদারির তালিকায় ম্যার্কেলের সঙ্গে ছিলেন ফ্রান্স, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেনের একাধিক পদস্থ কর্মকর্তা। তবে রিপোর্টে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। ডেনমার্ক রেডিওর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সন্দেহে ছিল জার্মানির নেতাদের ঘিরে। দেশটির চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ছাড়াও তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক–ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার ও বিরোধী দলের সাবেক নেতা পিয়ার স্টেইনব্রুকের ওপরও গুপ্তচরবৃত্তি করে এনএসএ। ডেনমার্কের ডিফেন্স ইন্টেলিজেনস সার্ভিসের তদন্তে আরও বলা হয়েছে, ইন্টারনেট তারের মাধ্যমে ডেনমার্কে আদান–প্রদান তথ্যপ্রবাহে প্রবেশ করে এনএসএ। তারা বার্তা, টেলিফোন কল, সার্চিংসহ ইন্টারনেট ট্রাফিক, চ্যাট, ম্যাসেজিং সার্ভিসে আড়ি পাতে।
সুইডেন, নরওয়ে, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বার্তা আদান–প্রদানে জন্য ইন্টারনেটের কয়েকটি কেব্ল স্টেশন রয়েছে ডেনমার্কের। আর সেই নেটওয়ার্কে প্রবেশাধিকার ছিল ডেনিশ ডিফেন্স ইন্টেলিজেনস সার্ভিসের। সেই সংস্থার সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে তাতে আড়ি পাতে যুক্তরাষ্ট্র। ডেনমার্কের পাশাপাশি ইউরোপের ওই দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ডেনমার্কের রেডিওতে গুপ্তচরবৃত্তির তথ্য প্রকাশের পরপরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন স্নোডেন। ওই ঘটনায় বর্তমান মার্কেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে অভিযোগ করেন বর্তমানে রাশিয়ায় বসবাসকারী স্নোডেন। সকলেরই বক্তব্য, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হয়ে ডেনমার্ক কীভাবে এ কাজ করল? ডেনমার্ক অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। সূত্র: রয়টার্স, এপি, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।