বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
২০ মাস বয়সী আমির হামজা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ৫ মাস পর জানা গেল খিঁচুনিতে নয়, মৃত্যু হয়েছে তার আপন ফুফুর নির্মমতায়। ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের সুলতান বাবুর্চির বাড়িতে। নিহত আমির হামজা ওই গ্রামের আল-আমিন ও সালমা আক্তারের একমাত্র পুত্র এবং হত্যাকারী আপন ফুফু স্বপ্না আক্তার সুলতান বাবুর্চির মেয়ে।
ঘটনার ৫ মাস পর পুলিশি তদন্তে ওই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হামজার ফুফু স্বপ্না আক্তাকে গত শনিবার রাতে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বপ্না তার ভাইপোকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে গত রোববার কুমিল্লা ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, আমির হামজার বাবা হোটেলে চাকরি করেন এবং মা সালমা আক্তার পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে কুমিল্লা মহানগর এলাকার ইপিজেড-এ একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সেই কারণে তার শিশু সন্তান আমির হামজাকে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদের কাছে জন্য রেখে যান।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রান্না করার সময় মায়ের অনুপস্থিতিতে হামজা কান্নাকাটি ও বিরক্ত করায় তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে তার আপন ফুফু স্বপ্না আক্তার রান্নার কাজে ব্যবহৃত কাঠি দিয়ে ঘারে আঘাত করলে অচেতন হয়ে পড়ে। এর শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার খিঁচুনী রোগ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়দের মধ্যে প্রচার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অস্বভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানালে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর তার মৃত্যু খিঁচুনী রোগে নয়, ঘারে আঘাত ও শ^াসরোধে হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশ ওই রিপোর্ট প্রাপ্তির পর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে বলে পুলিশ জানায়। ওই ঘটনায় নিহতের মা সালমা আক্তার গত ২৮ মে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। গত রোববার নিহতের ফুফু স্বপ্না আক্তার সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া বেগমের নিকট হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেন। ম্যাজিস্ট্রেট তার জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
নিহত আমির হামজার নানা সুলতানপুর গ্রামের নায়েব আলী জানান, আমার মেয়ে ইপিজেডে চাকরি করে। তার একমাত্র মেয়ে ইরামনিকে (৫ মাস) সাথে রাখত। মেয়ের জামাই কুমিল্লা হোটেলে চাকরি করেন। হামজাকে বাড়িতে তার দাদা-দাদী ও ফুফুর হেফাজতে রেখে যায়। তার ফুফুই তাকে হত্যা করল। হত্যার ১৫/১৬দিন পর হামজার ফুফু স্বপ্না আক্তারকে তরিঘড়ি করে পাশর্^বতী বুড়িচং উপজেলার কোরপাই গ্রামের সেলিম মিয়ার সাথে বিয়ে দেন।
দেবিদ্বার থানার ওসি (তদন্ত) ছমি উদ্দিন জানান, ওই ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে হামজার স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, হত্যাকান্ড বলে নিশ্চিত হই। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ফুফুকে গ্রেফতার হাজতে প্রেরণ করা হয়। ওই হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।