পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে চলমান লকডাউন বা বিধি-নিষেধ আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধি-নিষেধের সময়সমীমা আগামী ৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের সুযোগ রেখে সবশেষ ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়। এছাড়া হোটেল- রেস্তোঁরা ও খাবার দোকানসমূহে আসন সংখ্যার অর্ধেক সেবাগ্রহীতাকে সেবা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়। লকডাউন’র প্রজ্ঞাপন জারির পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আগের শর্তের ধারাবাহিকতায় আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বিধি-নিষেধ বাড়ানো হয়েছে।
চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ১৮ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। আর ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিন অফিস বন্ধ থাকে। আগামী ১২ জুন পযর্ন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা করা আছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমাদের ছাত্র সংখ্যা অনেক বেশি। যখন তারা স্কুলে আসবে তখন সংক্রমণ বেড়ে যাবে। আর এজন্য স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়টি অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি। করোনা সংক্রমণের কারণে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে ১৩ জুন খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গত ২৬ মে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী একথা বললেও গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা যে তারিখই নির্দিষ্ট করি না কেন, সেই সময়ের আগে করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নেবো না।
স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে এক প্রশ্নে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ রেখেছি। তাতে মানুষের চলাচলের প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকাটা স্বস্তিদায়ক। সংক্রমণের বতর্মানের ট্রেন্ডে স্কুল-কলেজ খোলাটাও পিছিয়ে যেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেটি তাদের বিষয়। উনি বলেছেন এটা নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত খুলবে না। তাহলে ৫ শতাংশের নিচে না আসা পর্যন্ত লকডাউন থাকবে অপর এক প্রশ্নের প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেবেন। যদিও আমরা বিকল্প ব্যবস্থাগুলো চিন্তা-ভাবনা করছি স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে। যে রকম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে অনলাইন পরীক্ষা, অনলাইন ক্লাস চলমান।
সেক্ষেত্রে আমরা দেখি, অবস্থা বুঝে, আমাদের ছাত্র সংখ্যা অনেক বেশি। যখন তারা স্কুলে আসবে তখন সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাবে। আমাদের বিধিনিষেধ থাকার কারণে কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অফিস খোলা আছে। সেটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখছি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ওপর আমরা বিশেষ নজর রেখেছি, যদি সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।ওই জায়গাগুলোতে চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারব। বিষয়গুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আপাতত স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিয়েছি। ভারতের বিষয়টির আশঙ্কা থেকেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সেটা আমরা করছি। সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব পাওয়া গেছে। আমরা সেটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। সেই বিষয়ে আমরা হয়তো জানাব, কী করা যেতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, যশোর ও নাটোর- জেলাগুলোর মধ্যে সাতক্ষীরার বিষয়টি আমরা একটু বেশি দেখছি। হয়তো সিদ্ধান্ত আসবে কীভাবে এটা করা যায়। তবে আমরা চাইব যে জায়গাটিতে স্পেসিক্যালি আক্রান্টত সেই জায়গাটিতে শনাক্ত করার চেষ্টা করব। এমনও হতে পারে পুরো সাতক্ষীরা নয়, যে স্থানটিতে বেশি সংক্রমণ সেই জায়গা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব। যাতে মানুষের জীবনজীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার সেই বিষয়টি খেয়াল রাখছে। মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে সাড়া দিচ্ছে। প্রত্যেকে সচেতন হয়েছে, মানুষ অপ্রয়োজনে বাইরে আসছে না। এটা একটা ভালো লক্ষণ, এক্ষেত্রে আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।
এদিকে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দেশটির সঙ্গে স্থল সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৬ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশটির সঙ্গে সব স্থল সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় সরকার। এরপর আরও দুই দফায় ৩১ মে পর্যন্ত সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। সর্বশেষ গত শনিবার সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।