Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডাকসুসহ দেশের সমস্ত কলেজ-ভার্সিটিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই

প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোবায়েদুর রহমান
বাংলাদেশে একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়। সেটি হলো নেতৃত্ব সংকট। আরো বলা হয় যে, ব্যবসায়ী এবং আমলা দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভরে গেছে। বড় দুটি দলের নেতৃত্বেই এখন আমলা এবং ব্যবসায়ীদের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়েছে। ঐসব পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে যে, জাতীয় সংসদে বর্ণ পলিটিশিয়ান, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোন শ্রেণীর পার্সেন্টেজ কত। এতে দেখা গেছে যে, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশঙ্কা করে যে, এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সেদিন সুদূর নয়, যেদিন রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃত্বে বিশেষ করে জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে আমলা ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা সার্বক্ষণিক পলিটিশিয়ানদের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।
কেন এমন হচ্ছে? এই প্রশ্ন এখন অনেক পলিটিশিয়ান, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী এবং সমাজ বিজ্ঞানীকে ভাবিয়ে তুলেছে। পত্রপত্রিকাতে এই বিষয়টি নিয়ে আংশিক আলোচনা হয়েছে, তেমন সরব আলোচনা হয়নি। তবুও ক্ষীণ কণ্ঠে যেসব কথা উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ হলো তৃণমূল থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টি হওয়া, সেটি বিকশিত হওয়া এবং সেটি পরিপক্ব হওয়ার প্রক্রিয়া থেমে গেছে। এই প্রক্রিয়া হলো দেশের সমস্ত উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদসমূহে নির্বাচন না হওয়া। বলা হয় এবং সেই কথাটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এক দিনে সৃষ্টি হয় না। এটি একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নেতৃত্ব অভিজ্ঞ এবং পরিপক্ব হয়। সেই প্রক্রিয়াটি শুরু হয় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি থেকে। যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির বিশেষ করে দলীয় রাজনীতির বিকাশ স্টাডি করেছেন তারা দেখতে পেয়েছেন যে ভবিষ্যতে যারা রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তাদের রাজনৈতিক জীবনের শুরুটা হয় ছাত্র জীবন থেকেই।
পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশ আমলের ছাত্র রাজনীতি এবং দলীয় রাজনীতি পর্যালোচনা করে এবং বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে ছাত্র জীবনে যিনি বা যারা যে ছাত্র সংগঠন করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা সেই ছাত্র সংগঠনেরই মাদার অর্গানাইজেশন বা প্যারেন্ট অর্গানাইজেশনে যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আরো স্পষ্ট করছি। ছাত্র জীবনে যারা ছাত্রলীগ করেছেন, ছাত্র জীবন শেষ হলে তারা আওয়ামী লীগ করেছেন। ছাত্র জীবনে যারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা বিএনপি করেছেন। ছাত্র জীবনে যারা ইসলামী ছাত্রশিবির করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা জামায়াতে ইসলামী করেছেন। তবে মুশকিল হয়েছে অন্যদের বেলায়। যেমন ছাত্র ইউনিয়ন (পিকিং পন্থী), ছাত্র ইউনিয়ন (মস্কো পন্থী), ছাত্র শক্তি, ছাত্র মৈত্রী ইত্যাদি
পিকিং পন্থী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন রাশেদ খান মেনন। প্যারেন্ট পলিটিক্যাল সংগঠন ছিল ভাসানী পন্থী ন্যাপ। সেই ন্যাপ এখন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ন্যাপের অধিকাংশ নেতাই বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তবে তখনকার ছাত্র ইউনিয়ন (পিকিং) এবং ছাত্র মৈত্রীর মেনন এবং ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগে যোগদান না করলেও আওয়ামী সরকারে যোগ দিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের সাথে রাখি বন্ধন করেছেন। নুরুল ইসলাম নাহিদ (শিক্ষামন্ত্রী), মতিয়া চৌধুরী (কৃষিমন্ত্রী) এবং নূহ আলম লেনিন মস্কোপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। লেনিন বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার। মতিয়া অনেক আগেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। নাহিদ আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন কিনা সেটি আমার সঠিক মনে পড়ছে না।
মওলানা ভাসানীর আমলে ন্যাপের অন্যতম শীর্ষ নেতা মশিউর রহমান জাদু মিয়া পাকিস্তানি রাজনীতিতে ভাসানী ন্যাপের একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন। পরে জেনারেল জিয়ার বিএনপিতে একজন বড় নেতা হন। ভাসানী ন্যাপের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন এরশাদ আমলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ। ভাসানী ন্যাপের হয়েছে মুশকিল। পিকিং পন্থী ছাত্র ইউনিয়নের ছেলেরা ছাত্র জীবন পার করে মুশকিলে পড়ে যান। কারণ ভাসানী ন্যাপের এখন ছ্যারা ব্যারা অবস্থা। তাই তারা ঝাঁকে ঝাঁকে বিএনপিতে জয়েন করেন। বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাসানী পন্থী ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। মস্কো ন্যাপ এখন বিলুপ্তপ্রায়। মস্কো পন্থী সিপিবির সলতে জ্বালিয়ে রেখেছেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। দলটির বয়স বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আমল মিলে ৬৫ বছরেরও বেশি। মনি সিং যখন সিপিবির নেতা ছিলেন তখন দলটিকে বলা হতো আওয়ামী লীগের বি-টিম। এখন সেলিমের আমলেও সেই অবস্থার তেমন কোনো হেরফের হয়নি। মাঝে মাঝে মুখ রক্ষার জন্য তারা আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে দু’চারটি কথা বলেন, এই যা।
॥ দুই ॥
তবে যে কথাটি দিয়ে আজকের আলোচনা শুরু করেছিলাম সেখানে আবার ফিরে যাচ্ছি। সেলিমরা যতই আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করুক না কেন, সেলিম নিজে কিন্তু ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। তাদের আরেক নেতা হায়দার আকবর খান রনো। তিনি আগে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। তিনিও ছাত্র রাজনীতির ফসল। নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ছাত্র জীবনে প্রথমে ছাত্র লীগ এবং পরে জাসদ করেন। তিনিও ছাত্র রাজনীতির তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। তোফায়েল আহমেদ তো সেই ১১ দফা আন্দোলনের নেতা। মরহুম আবদুর রাজ্জাক ছাত্র জীবনে প্রথমে ছাত্র লীগ, পরে আওয়ামী লীগ এবং সব শেষে বাকশাল করেন। আমানুল্লাহ আমান, খোকন, সোহেল, আজিজুল বারি হেলাল, হেলেন জেরিন খান, নিলুফার, পাপিয়া- এরা সকলেই ছাত্র দলের প্রোডাক্ট। কার কথা বলবো আর কার কথা বলবো না? মওদুদ আহমেদ ছাত্র শক্তি করতেন। কিন্তু ছাত্র শক্তির কোনো প্যারেন্ট সংগঠন ছিল না। তাই ছাত্র জীবন পেরিয়ে তিনি প্রথমে আওয়ামী লীগ পরে বিএনপি, তারপরে জাতীয় পার্টি এবং সব শেষে পুনরায় বিএনপিতে ফিরে এসেছেন। আরো গোড়াতে যান। শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম ছাত্র লীগের নেতা হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলন করেছেন। তারপর আওয়ামী মুসলিম লীগ, এরপর আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বা বাংলাদেশ সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে যত বিতর্কই থাক, মূল কথা হলো এই যে, মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম ছাত্র জীবনে ছাত্র রাজনীতি করতেন এবং ডাকসুর জিএস ছিলেন। জামায়াতের পরবর্তী আমির মরহুম মওলানা মতিউর রহমান নিজামী ছাত্র জীবনে ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন। আজ জামায়াতের যত নেতাই দেখা যায় প্রায় সব নেতাই হয় ছাত্র সংঘ বা শিবির করেছেন নয়তো সরাসরি জামায়াত করেছেন। জামায়াতে ইসলামীতে আমলা বা ব্যবসায়িক প্রাধান্য বেশি নাই। মরহুম মীর কাসেম আলীর ব্যবসায়িক জীবন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। তিনিও কিন্তু ছাত্র সংঘ ও ছাত্রশিবিরের প্রোডাক্ট। ডক্টর শফিকুল ইসলাম মাসুদ শিবিরের সভাপতি ছিলেন। জাসদের তাত্ত্বিক গুরু সিরাজুল আলম খান আজ সক্রিয় রাজনীতি থেকে রিটায়ার করেছেন। কিন্তু ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্রলীগের সমাজতন্ত্রী অংশের নিউক্লিয়াস ছিলেন। মরহুম শেখ ফজলুল হক মনি, মরহুম ওবায়দুর রহমান, শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন- এরা সকলেই ছাত্রলীগ করতেন। আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, হাসানুল হক ইনু, শরীফ নুরুল আম্বিয়া প্রমুখ ছাত্রলীগ করতেন। পরে তারা আওয়ামী লীগ, জাসদ, বাসদ ইত্যাদিতে ভাগ হয়ে যান।
॥ তিন ॥
আগেই বলেছি যে, এভাবে অনেক উদাহরণ টানা যায়। কিন্তু যে বিষয়টির ওপর আমি সকলের নজর নিবদ্ধ করতে চাচ্ছি সেটি হলো এই যে, রাজনীতির সূতিকাগার হলো ছাত্র রাজনীতি। সেখান থেকে এসে প্রত্যক্ষ বা দলীয় রাজনীতি। ছাত্র রাজনীতি যেখানে স্থবির হয়ে পড়ে সেখানে স্রোতহীন পানির মতো আগাছা জন্মে বা শ্যাওলা পড়ে। তখন রাজনীতির মধ্যে ঢুকে পড়ে আমলা এবং ব্যবসায়ীরা। জেনারেল এরশাদ সেনা প্রধান ছিলেন। বন্দুকের জোরে তিনি বিএনপির প্রেসিডেন্ট সাত্তারের নিকট থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। সে জন্যই তার দলে হাবি জাবি লোকের প্রাধান্য এবং দলটি একটি জগা খিচুড়ি। এটি কোনো পলিটিক্যাল ফোর্স নয়।
প্রশ্ন উঠতে পারে যে, জেনারেল জিয়াউর রহমানও তো ছাত্র রাজনীতি করেননি। তার পরেও তিনি ইতিহাসের একটি মাইলফলক। কথাটি খাঁটি সত্যি। হ্যাঁ, তিনি কোনদিন ছাত্র রাজনীতি করেননি। তারপরেও তিনি কেন ইতিহাসের একটি মাইলফলক। আসলে তিনি একজন ব্যতিক্রম এবং সেই সাথে ইতিহাসের অনিবার্য সৃষ্টি। এখানে রয়েছে একটি বিরাট প্যারাডক্স। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি। তার মাথার চুল থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত ছিল রাজনীতি। আওয়ামী লীগ তাই প্রথম দিকে ছিল শতকরা এক শত ভাগ পলিটিশিয়ানদের সংগঠন। সে জন্যই তিনি এবং তার দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে রাজনীতি চলছিল সেটি ছিল একমুখী রাজনীতি। সেই রাজনীতির ভিত্তি ছিল ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ। কিন্তু তৎকালীন সাড়ে সাত থেকে আট কোটি মানুষ ব্যাকুল প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিলেন আরেকমুখী রাজনীতির। সেটি হলো বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এবং ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক রাজনীতির। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্থপতি। জনগণের ভেতর থেকেই তার উত্থান। আন্দোলনের হাত ধরে তার উত্থান এবং পরে তিনি নিজেই সেই আন্দোলনকে পরিচালনা করেছেন। সেই ধারাবাহিকতারই সৃষ্টি বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ সৃষ্টির পর মানুষ আর ভারতের মুখাপেক্ষী থাকতে রাজি ছিলেন না, তারা বাঙ্গালী হলেও রাবীন্দ্রিক সংস্কৃতিতে মিশে যেতে চাননি, শরিয়াহভিত্তিক রাজনীতিতে না জড়ালেও স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন দেখতে চেয়েছিলেন। রাজনীতির এসব উপকরণকে ধারণ করে জিয়াউর রহমান বিএনপির সৃষ্টি করেন। সে জন্যই আওয়ামী লীগের পাল্টা শক্তি হিসেবে উত্থিত হয় বিএনপি। সেনাবাহিনীর লোক হওয়া সত্ত্বেও জেনারেল জিয়া উপলব্ধি করেছিলেন যে, তার আদর্শ এবং চিন্তাধারা যদি বাস্তবায়িত করতে হয় তাহলে তাকে উর্দী ছেড়ে পলিটিশিয়ান হতে হবে। সেটিই তিনি করেছিলেন। বিএনপি ছাড়াও তিনি ছাত্রদল, শ্রমিক দল, মহিলা দল, তাঁতি দল ইত্যাদি ফ্রন্ট সংগঠনের জন্ম দিয়েছিলেন। তার আমলেই ছাত্রলীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয় ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন নয়। তিনিও রাজনীতিকে তৃণমূলে নিয়ে গিয়েছিলেন।
॥ চার ॥
আমি এখন মূল কথায় ফিরে আসছি। পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচে না, তেমনি রাজনীতি ছাড়া দেশ বাঁচবে না। রাজনীতির মাঠে অনেক টিমই খেলবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত এবং আরো নতুন কোনো দল যদি আসে তারা। কিন্তু খেলাটি শুরু করতে হবে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। রাজনীতিতে তারা তাদের পছন্দ মতো আদর্শ প্রচার করতে পারবে। শুধু কয়েকটি জিনিস করতে পারবে না। সেগুলি হলো (১) বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী কোনো কথা এবং কাজ (২) সামরিক বাহিনী এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে কোন কথা এবং কাজ (৩) কোন ধর্মকে আক্রমণ করা চলবে না। মাত্র এই কয়টি রেস্ট্রিকশন ছাড়া বাংলাদেশের সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ডাকসু বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯০ সালে। ডাকসু, রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), চাকসু (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ইউকসু (প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)সহ ভার্সিটি সংসদসমূহের নির্বাচন ২৬ বছর হলো অনুষ্ঠিত হয় না। ছাত্র রাজনীতিতে আজ তাই গতি নাই, আদর্শ নাই, মূল্যবোধ নাই। ছাত্র রাজনীতিতে প্রাধান্য পাচ্ছে ব্যবসা -বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি। আন্দোলন না করেই নেতৃত্বে যাওয়ার ষড়যন্ত্র। তাই আর কালবিলম্ব না করে সবগুলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে দিতে হবে ছাত্র সংসদসমূহের নির্বাচন। সারা বাংলাদেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ছাত্র রাজনীতির পদচারণায় মুখর হোক। বিকশিত হোক গণতান্ত্রিক রাজনীতি, ফুটুক শত ফুল। এই উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই এবং সেটি অবিলম্বেই। না হলে জঙ্গিবাদ বলুন আর যাই বলুন, অগণতান্ত্রিক, অনিয়মতান্ত্রিক ও সংবিধানবহির্ভূত দানবের উত্থান ঠেকানো সম্ভব হবে না।
Email: [email protected]



 

Show all comments
  • হুমায়ন কবির ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ২:৪৯ পিএম says : 0
    এটা একটি সময় উপযোগী দাবি।
    Total Reply(0) Reply
  • Sahin ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ২:৫১ পিএম says : 0
    ai topic ti nea lekhar jonno lekhok ke thanks
    Total Reply(0) Reply
  • জিসান ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:৪৭ পিএম says : 0
    নিয়মিত ছাত্র সংসদ থাকলে হয়তো দেশে আর কিছু মেধাবী ও ভালো রাজনীতিবিদ তৈরি হতো।
    Total Reply(0) Reply
  • কাওসার আহমেদ ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:৫১ পিএম says : 0
    যেখানে রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই সেখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কি কোন সুফল বয়ে আনবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Habib ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:৫৬ পিএম says : 0
    সারা বাংলাদেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ছাত্র রাজনীতির পদচারণায় মুখর হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসুসহ দেশের সমস্ত কলেজ-ভার্সিটিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ