বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রায় ৮৭ লাখ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে সোয়া ৭ লাখ হেক্টর জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় ২ লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরও এ অঞ্চলে ২ লাখ ৩০ হাজার হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে প্রায় ২৭ লাখ বেল পাট উৎপাদন হয়।
কিন্তু করোনা সঙ্কটের মধ্যেই দেশের সবগুলো পাটকল গতবছর বন্ধ করে দেয় বিজেএমসি। সরকারি-বেসরকারি যৌথ ব্যবস্থাপনায় সেসব পাটকল পুনরায় চালুর কথা থাকলেও কোন অগ্রগতি নেই। বিষয়টি নিয়ে পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও এখন সব কিছুই চুপচাপ।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশে পাট চাষির সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হলেও এ খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। জিডিপিতে পাটের অবদান ০.২৬% হলেও কৃষি সেক্টরে এর একক অবদান ১.১৪%। চলতি মৌসুমে দেশে সাড়ে ৭ লাখ হেক্টরে ৮৬ লাখ ১০ হাজার বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করা হলেও আবাদ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টরে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, আবাদ লক্ষ্য শতভাগ অর্জিত না হলেও বড় ধরনের কোন প্রাকৃতি দুর্যোগ না হলে উৎপাদন লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব হবে। দেশে বর্তমানে যে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ হেক্টরে পাট আবাদ হচ্ছে, তার প্রায় ৩০%-ই হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে।
এবার বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরে পাটের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। এ অঞ্চলে ধীরে ধীরে পাটের আবাদ বাড়ছে। পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের পরিবেশ উপযোগী নোনা পানি সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবন করেছে। বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টরে এবার ২৬ লাখ ৩১ হাজার বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যে রয়েছে।
বর্তমানে প্রতি মণ পাট উৎপাদন ব্যয় দেড় হাজার টাকারও বেশী। কিন্তু গত বছর প্রতি মণ পাট ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন কৃষকরা। এখন আড়তদাররা সে পাট দ্বিগুণেরও বেশি দামে বেসরকারি পাটকলে বিক্রি করছে। অত্যাধিক দামের কারণে অনেক বেসরকারি পাটকল এখন পাট কিনে মিল সচল রাখতে পারছে না।
অপরদিকে ফরিদপুর অঞ্চলের ৫টি জেলার বেসরকারি খাতের ১৯টি পাটকলের বর্তমানে সচল ১৩টি। বরিশাল অঞ্চলে ছোট ও মাঝারি মাপের আরো ৫টি পাটকল থাকলেও প্রায় সবগুলোই ব্যাংক ঋণের বোঝা, চলতি মুলধন ও আধুনিকায়নের অভাবে অচল। বেসরকারি খাতে দেশের অন্যতম বৃহৎ করিম জুট মিল ও পারটেক্স গ্রুপের পাটকলও দক্ষিণাঞ্চলে। ডিএই’র তথ্যানুযায়ী দেশে উৎপাদিত পাটের ৫১% স্থানীয় পাটকলে ব্যবহৃত হয়। ৪৪% কাঁচা পাট বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মতে, পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে দেশ প্রতিবছর আয় করছে প্রায় ৯০ থেকে ১শ’ কোটি ডলার। গত অর্র্থবছরে এ খাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৮% বেশি। এ আয়ের সিংহভাগই এসেছে পাট সুতা থেকে। কাঁচাপাট রফতানিতে আয় ১ কোটি ডলার, যা মোট পাটজাত পণ্যের ১৫%। পাটের বস্তা ও চট রফতানি করেও আয় হচ্ছে ১০ কোটি ডলারের মত। এছাড়া বিভিন্ন পাটজাত পণ্য রফতানিতেও আয় প্রায় ২০ কোটি ডলার। অনেক বছর পরে গত অর্থবছরে পাটজাত পণ্য রফতানি চামড়াজাত পণ্যকে ছাড়িয়ে যায়। অপরদিকে পাটখড়ি থেকে কাঠের বিকল্প বোর্ডসহ রফতানি পণ্য ‘চারকল’ উৎপাদিত হচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, পাটখড়ি গ্রাম বাংলার জ্বালানির একটি অন্যতম বিকল্প উৎস। জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় পাটের আবাদ ধরে রাখা ও বৃদ্ধির ওপর তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।