Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেই সাত খুনে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নূর হোসেনের শ্যালক নূর আলম কতটা ক্ষমতাধর?

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২১, ২:১৩ পিএম

‘আন্তত আমার স্বামীর লাশটা ফেরৎ দিন’ এমন আর্তনাদ এক নারীর। তিনি জেনে গেছেন তার অপহৃত স্বামী যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন আর বেঁচে নেই। জীবিত ফিরে পাওয়ার আশাও তার নেই। তাইতো গত সাতটি বছর ধরে তিনি স্বামীর মরদেহটিই ফেরৎ চেয়ে আর্তনাদ করছেন। দাবি জানাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর দ্বারে দ্বারে।
গুমের শিকার ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জোছনা বেগম সর্বশেষ ২৭ মে শহরে মায়ের ডাক হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক নারায়ণগঞ্জ ইউনিটির মানববন্ধনে নিজের স্বামীর সন্ধান চেয়ে কেঁদেছিলেন। এখানে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আমার স্বামীকে গুম করা হয়। ৭ বছর হয়ে গেছে আমি আমার স্বামীর সন্ধান পাই নাই। সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ জীবিত অবস্থায় না হলেও আমার স্বামীর লাশটা যেন ফেরত দেয়া হোক। তিনি বলেছেন, স্বামীর সন্ধান চেয়ে মামলা করেছি। কিন্তু স্বামীর সন্ধান না দিয়ে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
সূত্র বলছে, ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকা থেকে র‌্যাব পরিচয়দানকারী দুর্বৃত্তরা ইসমাইল হোসেন নামে এক যুবলীগ নেতাকে অপহরণ করে। পরে র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও সাঈদ তারেক মুক্তিপণ হিসেবে ২ কোটি টাকা দাবি করেন। এরপর থেকে আজও পর্যন্ত হদিস মিলেনে ইসমাইল হোসেনের। বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে (?) তার কিছু জানেন না তার পরিবার।
এ ঘটনায় নূর হোসেনের শ্যালক নূর আলম খান, র‌্যাবের সাবেক কয়েকজন অফিসারসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলাটি দায়ের করেছিলেন অপহৃত ইসমাইলের ভাই আব্দুল মান্নান। এই মামলাটি তুলে নিতে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছিলেন নূর হোসেনের শ্যালক সন্ত্রাসী নূর আলম।
২০১৯ সালের ২২ আগস্ট জাতির জনকের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে কাচপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ দোয়া ও মাহফিরের আয়োজন করে দলীয় কার্যালয়ে। এদিন অপহৃত ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জোছনা বেগমকে প্রকাশ্যে ডেকে নেয় নূর হোসেনের শ্যালক নূর আলম। উপস্থিত অনেকের সামনেই তাকে হুমকি দেওয়া হয়। ধমকি দিয়ে বলা হয়, ‘তোর দেবরকে দিয়ে ইসমাইল অপহরণ মামলাটি তুলে নিবি, না হলে তোর স্বামীর মতই দশা হবে তোর ছেলের।’
জোছনা বেগমের দাবি, হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি সন্ত্রাসীরা। এর পর থেকে বাড়ির আশেপাশে নিয়মিতই নূর আলমের সন্ত্রাসী বাহিনী মহড়া দিয়েছে। এতে আমি আতঙ্কিত। ছেলেকেও তারা অপহরণ করতে পারে। চোখের পাতা এক করতে পারি না ভয়ে। তাই উপায়ন্ত না পেয়ে পুলিশ সুপারের (হারুন অর রশিদ) কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম।
জোছনা বেগম ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এসপিকে তিনি সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন। এসপিও জোছনা বেগমের কথা শুনেন এবং সংশ্লিষ্ট সোনারগাঁ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি)কে এ ব্যাপারে ব্যাবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে, এসপির ওই নির্দেশনার পর সোনারগাঁ থানা পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে
সচেতন মহল বলছে, নূর আলম খানকে আইনের আওতায় নিয়ে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হলে ইসমাইল সম্পর্কে কোনো না কোনো তথ্য পাওয়া যেতে পারে। তাহলে এই নূর আলম খানকে কেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে না, এমন প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। অনেকে বলছেন, অত্যন্ত প্রভাবশালী নূর আলম। তাই প্রশাসন তার দিকে নজর দিচ্ছে না। তবে, প্রশ্ন হচ্ছে, নূর আলম কতটা ক্ষমতাধর?
এদিকে বিভিন্ন সূত্র বলছে, সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করতেন নূর হোসেন। তার ছিলো অস্ত্রেশস্ত্রে সুসজ্জিত একটি বিশাল বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী রাহাজানি ও দখলবাজিসহ মাদকের ব্যবসা চালাতেন।
সাত খুনের পর এই বাহিনীর প্রায় সবাই গা ঢাকা দেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা আবার ফিরে আসে নিজ নিজ এলাকায়। পুনরায় শুরু করেন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, রাহাজানিসহ নিজেদের পুরনো কর্মযজ্ঞ। তাদেরই একজন নূর আলম। অন্যদিকে রয়েছেন কথিত ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল বাদল। তিনি নূর হোসেনের ভাতিজা। আরও রয়েছে নূরের ভাই নূরউদ্দিনসহ আরও বেশ কয়েকজন। মূলত তারাই এখন সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণকর্তা। এলাকাবাসী এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের পয়লা মে সোনারগাঁ থানার কাঁচপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী টাইগার মোমেন ও মো. বুলবুল ভূঁইয়াকে আটক করে র‌্যাব। তারা দুজনই নূর আলমের অন্যতম সহযোগি। তাদের কাছ থেকে ম্যাগাজিন ভর্তি একটি বিদেশী পিস্তল, দু’রাউন্ড তাজা গুলি, ২শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, এক লিটার চোলাই মদ, মাদক বিক্রয়ের নগদ ১০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা করা হয়।
টাইগার মোমেন সাত খুন মামলার ফাঁসির দ-াদেশপ্রাপ্ত প্রধান আসামী নূর হোসেনের শ্যালক নুর আলম খানের অন্যতম সহযোগী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। টাইগার মোমেন নূর হোসেনের শ্যালক নুর আলম খানের শেল্টারে কাঁচপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, তেলচুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->