Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাইরাসের উৎস নিয়ে ফের উত্তেজনা

যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রথম বাণিজ্য বৈঠক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেছেন চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য কর্মকর্তারা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দুদেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে সাদাসিধে, বাস্তবধর্মী বৈঠক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথেরিন তাই এবং চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হে বৃহস্পতিবার এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অংশ নেন। দুই পক্ষই জানিয়েছে যে, তারা দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিছুদিন আগেও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য সম্পর্কের অবনতি হতে দেখা গেছে। দু›দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় রীতিমত বাণিজ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাথেরিন তাই এবং লিউ বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের কর্মকেন্দ্রিক বাণিজ্য নীতিমালার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। দু›পক্ষই জানিয়েছে যে, তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দু›পক্ষের মধ্যে সাদাসিধে, বাস্তবধর্মী এবং গঠনম‚লক আলোচনা হয়েছে। একে অন্যের প্রতি সমতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার মনোভাব প্রকাশ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উন্নয়নকে দু›পক্ষই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ওই বৈঠকে আগে রয়টার্সকে তাই বলেন যে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনও খুব বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। অপরদিকে, করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে দৃশ্যত আবার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়টি আবার পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের উৎস কোথায় তা অনুসন্ধানের তাগিদ দিয়েছেন। একই রকম মন্তব্য করেছেন তার শীর্ষ মহামারি বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি। কিন্তু কোভিড-১৯ এর উৎস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনের দ‚তাবাস। বলা হচ্ছে, এ ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করার ফলে তদন্ত বিঘিœত হবে। অন্যদিকে ড. অ্যান্থনি ফাউচির বিরুদ্ধে নৈতিক অবক্ষয়ের অভিযোগ তুলেছে চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া গেøাবাল টাইমস। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বুধবার চীনা দ‚তাবাসের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কিছু রাজনৈতিক শক্তি রাজনৈতিক কারসাজি এবং বেøম গেম স্থির করেছে। উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের উৎস কি বা কোথায় তা দ্বিতীয় দফায় তদন্তের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ সময়ে অভিযোগ জোরালো হয়েছে যে, চীনের উহান সিটির ইনস্টিটিউটট অব ভাইরোলজি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তদন্তকারীদেরকে অধিক সুবিধা দেয়ার জন্য চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে চীনের ওপর। বার বার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে চীন। তারা বলছে, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নিজেদের ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য কিছু দেশ। এর প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, করোনা ভাইরাস পশুর দেহ থেকে মানবদেহে নাকি গবেষণাগার থেকে দুর্ঘটনাবশত মানব শরীরে প্রবেশ করেছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিভক্ত। তাই তদন্ত প্রয়োজন। ওয়াশিংটনে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স-এর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ইয়ানঝোং হুয়াং বলেছেন, গবেষণাগার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার যে ধারণা তার জন্য চীনই দায়ী। কারণ, সব কিছু খোলামেলা করার ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে চীনের। এটা একটা বড় ফ্যাক্টর। তিনি বলেন, এই হাইপোথিসিস প্রমাণ করার বাস্তবে আসলে কিছু নেই। এই মহামারির উৎস সন্ধানের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপ‚র্ণ এবং বাস্তবসম্মত বিষয় হলো স্বচ্ছতা গড়ে তোলা, যাতে আস্থা বৃদ্ধি পায় তদন্তে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। চীনে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পিপলস ডেইলি সংবাদপত্র গ্রæপের অংশ দ্য গেøাবাল টাইমস এক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে আছে। তারা বুধবার শেষের দিকে বলেছে, যদি গবেষণাগার থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার তত্তে¡র ওপর আরো তদন্ত করতে হয়, তাহলে ফোর্ট ডেট্রিক গবেষণাগারসহ নিজেদের সব প্রতিষ্ঠানে তদন্ত করতে দেয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। নিরপেক্ষ তদন্তের বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন থিংক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো জেমি মেটজল। তিনি বলেছেন, চীন সুস্পষ্টত এ বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকীকরণের চেষ্টা করছে। এর আগে মার্চে চীন-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি যৌথ রিপোর্ট প্রকাশ হয়। তাতে বলা হয়, গবেষণাগার থেকে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস লিক বা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উপরন্তু এই ভাইরাস বাঁদুর থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ওদিকে অন্য দেশ করোনা ভাইরাসের উৎস হতে পারে বলে অব্যাহতভাবে ইঙ্গিত করে যাচ্ছে চীন। তারা দাবি করেছে, ফ্রোজেন ফুড বা হিমায়িত খাবারের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে। জেমি মেটজল বলেন, এই করোনা মহামারি চীন থেকেই শুরু হয়েছে। তাই সেখানে একটি প‚র্ণাঙ্গ তদন্ত দরকার। প্রয়োজন হলে সেই তদন্ত প্রসারিত করা যেতে পারে। তার মধ্যে চীনা দ‚তাবাসের বিবৃতি প্রতিজন মানুষ, যারা এই ভয়াবহ ট্রাজেডিতে মারা গেছেন এবং তাদের পরিবারের জন্য অবমাননার। বিবিসি, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ