Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইহুদিদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআন কী বলে

মাওলানা এইচ এম আব্দুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ২৫ মে, ২০২১

ইহুদিরা মুসলমানদের প্রাণ আল আকসা দখল করে রেখেছে। আশ্রিত ইহুদিরা আজ আশ্রয়দাতাদের বাড়িঘরসহ দেশ জবর দখল করে নিয়েছে। মানবতা ও শান্তির ঠিকাদার পশ্চিমাবিশ্ব দখলদার ইসরাইলকে নগ্নভাবেই সমর্থন, সহযোগিতা ও সাহস দিয়ে যাচ্ছে। একটু আশ্রয়ের জন্য ফিলিস্তিনে এসে ফিলিস্তিন গ্রাস করা ইসরাইল পুরো বিশ্বের মুসলিমদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে। তাদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, দ্বন্দ্বসংঘর্ষের মোকাবিলার জন্য ইহুদিদের মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও অন্যান্য চারিত্রিক গুণাবলি জেনে রাখা মুসলমানদের প্রয়োজন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইহুদিদের ওই সকল গুণাবলির তথা বৈপরীত্যের বর্ণনা দিয়েছেন। আজকের আলোচনায় তাদের চরিত্র ও পরিণতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হলো।

ইহুদিরা ভীরু ও কাপুরুষ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা সবাই মিলেও তোমাদের সাথে লড়াই করবে না। হ্যাঁ, সুরক্ষিত জনপদ কিংবা দুর্গের দেয়ালের আড় থেকেই লড়াই করার সাহস করবে। (সূরা হাশর : ১৪)।
ইহুদিরা সর্বদা নবী-রাসূল এবং আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এখনও তারা যে কোনো চুক্তি ও সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করতে কুণ্ঠা বোধ করে না। স্বার্থপরতা তাদের বৈশিষ্ট্য। তাই তারা জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার সিদ্ধান্ত ও প্রস্তবাবলি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তাদের চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী এবং অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করার কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরে গোমরাহির সিল মেরে দিয়েছেন। (সূরা নিসা : ১৫৫)

উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত আল্লাহর প্রিয় নবীদের হত্যা করার জঘন্য তৎপরতা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, তাদের স্বার্থের পরিপন্থী যে কোনো লোককে হত্যা করা তাদের দ্বারা সম্ভব। নিষ্ঠুরতা ইহুদিদের প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি। তারা ২ জন নবীকে হত্যা করেছে এবং আরেকজনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়। তাদের এই পৈশাচিক মনোভাব এখনও বিদ্যমান। তারা হযরত ইয়াহইয়া (আ.)-কে হত্যা করে তার ছিন্ন মস্তক তাদের বাদশাহর রক্ষিতাকে উপহার দেয়। স্বয়ং মুসা (আ.)-এর ওপর তারা ভীষণ নির্যাতন চালিয়েছে। হযরত ঈসা (আ.)-কে তারা ক্রশে বিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছে। নাম না জানা আরো অনেক নবীকে তারা হত্যা করেছে।

ইহুদিরা পৃথিবীর দেশে দেশে অশান্তি ও গোলযোগ সৃষ্টি করে। মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে ঢুকে কুমন্ত্রণা দিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যায় নিক্ষেপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা যমীনে ফিতনা ফাসাদ ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।

তারা যেহেতু নিজেদের শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর নির্বাচিত উত্তম মানুষ বলে মানে, সেহেতু অন্য ধর্ম ও আদর্শের প্রতি তাদের অসহনশীলতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সে পর্যন্ত আপনার ওপর সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্ম ও মিল্লাতের অনুসরণ করেন। (সূরা বাকারা : ১২০)।

মুসলমানদের শত্রু মনে করা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অংশ। ইহুদিরা মুসলমানদেরকে সর্বপ্রধান শত্রু মনে করে। পক্ষান্তরে অন্যদের সাথে তাদের কিছুটা মিত্রতা গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে নবী, আপনি ইহুদি ও মুশরেকদেরকে মুসলমানদের কঠোর শত্রু হিসাবে দেখতে পাবেন। (সূরা মায়েদা : ৮২)।

তাদের নির্যাতন, ষড়যন্ত্র ও ফাসাদ থেকে মানুষতো দূরের কথা, স্বয়ং আল্লাহও মুক্ত নন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইহুদিরা বলে, আল্লাহর হাত বন্ধ। আসলে তাদের হাতই বন্ধ; তাদের এই বক্তব্যের জন্য তাদের ওপর অভিশাপ। বরং আল্লাহর হাত প্রসারিত ও উন্মুক্ত। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।

বিশ্বাসঘাতকতা ইহুদিদের চরিত্রের আরও একটি বৈশিষ্ট্য। নিজেদের স্বার্থ লিপ্সার বশবর্তী হয়ে তারা সর্বত্রই বিশ্বাসঘাতকতার আচরণ করে। ইহুদি জাতি মূলত বিশ্বাসঘাতক জাতি। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইহুদিরা বিভিন্ন দেশ থেকে বারবার বিতাড়িত ও বহিষ্কৃত হয়েছে। ইহুদিরা মজ্জাগতভাবে সীমালঙ্ঘনকারী। আল্লাহ তায়ালা বলেন, বনি ইসরাইলের যারা কুফরী করেছিল, তাদের ওপর লানত বর্ষিত হয়েছিল দাউদ এবং ইসা ইবনে মরিয়মের জবানে। এর কারণ তারা ছিলো নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা মায়েদা : ৭৮)।



 

Show all comments
  • Mir Irfan Hossain ২৫ মে, ২০২১, ১:০৪ এএম says : 0
    হে রাসুল! তাদের জন্য দুঃখ করবেন না, যারা দৌড়ে গিয়ে কুফরে পতিত হয়; যারা মুখে বলে, আমরা ইমান এনেছি, অথচ তাদের অন্তর ইমান আনেনি। আর যারা ইহুদি তারা মিথ্যা বলার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করে। (তাদের মধ্যে) যারা আপনার কাছে আসেনি তারা অন্য দলের গুপ্তচর। তারা (আল্লাহর) কালামকে স্বস্থান থেকে পরিবর্তন (বিকৃত) করে। তারা বলে, যদি তোমরা এ নির্দেশ পাও, তবে তা গ্রহণ কোরো আর যদি এ নির্দেশ না পাও, তবে বিরত থেকো। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান, তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। তারা এমনই যে আল্লাহ তাদের অন্তরকে পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্য দুনিয়ায়ও রয়েছে লাঞ্ছনা আর আখিরাতে রয়েছে বিরাট শাস্তি। (সুরা আল-মায়েদা : ৪১)
    Total Reply(0) Reply
  • MD FOKHRUL ISLAM ২৫ মে, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    ইহুদিদের বদ অভ্যাস ছিল, ঘুষ ও উৎকোচ গ্রহণ। মূলত ইহুদিদের অনৈতিক অপরাধগুলো আলোচনা করে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের সেসব বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Reza ২৫ মে, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    ইহুদিদের বদ অভ্যাস ছিল, ঐশী গ্রন্থের বিকৃতি সাধন। তারা আল্লাহর কালামকে যথার্থ স্থান থেকে সরিয়ে তার ভুল অর্থ করত। আর আল্লাহর নির্দেশকে বিকৃত করত। তারা আল্লাহর কালামের শব্দগত ও অর্থগত উভয় প্রকার বিকৃতিতেই অভ্যস্ত ছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Imran Selim ২৫ মে, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    ইহুদিদের শ্রেণিভুক্ত মুনাফিকরা গুপ্তচরবৃত্তিতে লিপ্ত ছিল। ধর্ম অনুসরণের জন্য নয়, বরং প্রকৃতপক্ষে তারা বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি জেনে ইহুদিদের কাছে বলে দিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Sharif ২৫ মে, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
    মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে মুসলিমদের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্দেশনাই দিয়ে রেখেছেন আল্লাহ তা’আলা। কেয়ামত পর্যন্ত একজন মানুষকে কীভাবে চলতে হবে, কীভাবে সমাজ চালাতে হবে, কীভাবে দেশ শাসন করতে হবে- সব বিষয়েই এই গ্রন্থে রয়েছে আদেশ-উপদেশ। এমনকি কারা মুসলিমদের শত্রু-মিত্র- সে সম্পর্কেও সুস্পষ্ট বিধান বর্ণনা করা হয়েছে, যা পৃথিবী ধ্বংসের মুহূর্ত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Mustakim Billah ৫ আগস্ট, ২০২২, ৯:২১ এএম says : 0
    Masallah
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন