রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্ভর ফতুল্লার বিভিন্ন স্থানে ভাঙারি ব্যবসার আড়ালে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী বিভিন্ন অপরাধী সিন্ডিকেট। এ সকল সিন্ডিকেটের সদস্যরা এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক, জুয়াসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সক্রিয় রয়েছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় ওইসব চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন অপকর্ম প্রকাশ্যে চালিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নীরবতা এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন দানা বেঁধে উঠেছে।
জেলার সদর উপজেলার ফতুল্লার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ভাঙারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ওইসব দোকানি ও সিন্ডিকেট সদস্যরা স্বল্প বেতন কিংবা কমিশনে স্থানীয় মাদকসেবী, বখাটে যুবক ও ছিচকে চোরদের কাজে লাগিয়ে এবং তাদের ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসা বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট, সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন প্রকার লোহার মালামাল, টিন, স্টিল, তামা, পেপার, বই, এল্যুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও টায়ার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য চুরি করিয়ে তা কম দামে ক্রয় করে বিশাল মজুদ গড়ে তুলে দেশের বিভিন্ন মিল-কারখানায় বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এ পেশায় ফতুল্লা এলাকার প্রায় শতাধিক ভাঙারি দোকানের সাথে প্রায় দুই সহস্রাধিক শিশু-কিশোর এবং নারী জড়িত। এছাড়া রয়েছে এ অঞ্চলে প্রায় ৩০টি ভাঙারি মালামাল ভাঙার কারখানা। এদের মূলত সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই।
তথ্য মতে, ফতুল্লা থানা এলাকার পুলিশ লাইন সংলগ্ন গড়ে উঠা জেলার সর্ব বৃহৎ লোহার মার্কেটে ভাঙারি দোকানিরা তাদের মালামাল বিক্রি করে থাকে। মার্কেটটিতে প্রকাশ্যে এ সকল মালামল বেচাকেনা হলেও প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি।
জানা যায়, ভাঙারি ব্যবসায়ীরা তাদের নিযুক্ত ফড়িয়া-হকার কিংবা খুচরা ক্রেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন সিন্ডিকেট সদস্যরা রাতের অন্ধকারে টিউবওয়েলের মাথা, লোহার পাইপ, গাড়ির যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক সামগ্রী, নতুন-পুরাতন রড, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর কিংবা আবাসিক এলাকায় পরিত্যাক্ত পড়ে থাকা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে এসে ভাঙারি দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে।
এমন কি এসব চোরের দল সুযোগ বুঝে বাসা বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ অর্থ, স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্ভর ফতুল্লাঞ্চলের ভাঙারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন টনকে টন বিভিন্ন মালামাল ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের ব্যবহার করে এ ভাঙারি ব্যবসাটি খুবই লাভজনক বিধায় ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের আনাচে-কানাচে, পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভাঙারি দোকান।
ভাঙারি দোকানগুলোতে শ্যালু যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক্স মোটর, রেলের সিøপার-পাতসহ অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রাংশ, ফ্যান, দরজা-জানালার গ্রিল, টিউবওয়েল, যানবাহনের যন্ত্রাংশ, সাইকেল-রিকশাসহ বিভিন্ন পরিবহনের চাকা, বিদ্যুত সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি, এল্যুমিনিয়াম ও তামার দ্রব্য, লোহারপাত ও পাইপ এবং রডসহ বিভিন্ন লৌহজাত দ্রব্য প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে।
এসবের পেছনে স্থানীয় মাদকাসক্ত ছিচকে চোর, বখাটে মাদকাসক্ত যুবক, মাদকাসক্ত মহিলা ও শিশু-কিশোর-কিশোরীদের বিভিন্ন অপরাধী সিন্ডিকেট সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
এ ব্যপারে ভাঙারি ব্যবসায়ী আলী আকবর জানান, আমরা কোন চোরা মালামাল বেচা-কেনা করি না। আমরা ব্যবসা করি প্রকাশ্যে, গোপনে কোন মালামাল পাচার করি না।
অপর এক ব্যবসায়ী সওদাগর জানান, অভিযোগ রয়েছে আমরা নাকি মদকাসক্ত শিশু-কিশোরদের এই ব্যবসায় জড়িত করে ব্যবসা করছি এটা ঠিক না। আমরা কোন শিশু-কিশোরদের কাছ থেকে মালামাল ক্রয় করি না। আমরা মাল কেনা-বেচা করি বিভিন্ন মহল্লায় গড়ে ওঠা ভাঙারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তারা কাদের কাছ থেকে মালামাল কিনে তা আমাদের জানা নেই।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান জানান, এ ধরনের অনিয়মগুলো একদিনে সৃস্টি হয়নি। যতো দ্রুত সম্ভব সকল প্রকার অনিয়ম-অপরাধ দমনসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রতিটি সিন্ডিকেট সদস্যদের চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।