বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নালিতাবাড়ী পৌর মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিকের উপস্থিতিতে তার অনুসারীদের দ্বারা জেলা ছাত্রলীগের উপ-মানব সম্পদ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ বাদশার উপর হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগে নালিতাবাড়ী থানায় ১১জনের নাম উল্লেখ করে ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০মে নালিতাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগ অফিসও ভাংচুর করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতাকে মাইরপিটের ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনার পর নিজ অফিসের নিরাপত্তা চেয়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের জন্য নালিতাবাড়ী থানা পুলিশকে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেলেনা পারভীন।
মেয়রের কর্মীরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেছে সাব্বিরের পরিবার। এই ঘটনার একটি সিসি ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ১৯ মে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি মিটিং শেষে ফেরার পথে উপজেলা পরিষদের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মেয়র আবু বকরকে সালাম দেন ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির। সালাম দেয়ার পরই মেয়রের কর্মীরা তাকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিতে থাকে। পরে মেয়র ঘটনাস্থলে এসে তার কর্মীদের ফিরিয়ে নিয়ে যান। এসময় নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোকসেদুর রহমান লেবুকে মারধরের সময় সাব্বিরকে ফেরাতে দেখা যায় সিসিটিভি ফুটেজে।
এ ঘটনায় সাব্বিরের বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ২০ মে রাতে মেয়রের গাড়ীর কাউন্টারের টিকিট মাষ্টার আরিফ নামের এক যুবককে প্রধান করে ১১জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ২০জনকে আসামী করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেছেন।
সাব্বিরের বাবা আব্দুল মতিন বলেন, বুধবার মিটিং শেষ করে মেয়র আবু বক্কর তার কর্মীদের নিয়ে দোতলা থেকে নিচে নামার সময় আমার ছেলে সাব্বির মেয়রকে দেখেই সালাম দেন। সালামের জবাব না দিয়ে মেয়র তাকে ধমক দিয়ে বলেছেন “এই বেয়াদব তুই এহেনে কি করস রে”। এটা বলে উনি যাওয়ার পরই তার (মেয়রের) অনুসারীরা তাকে মারধর করেছেন। পরে নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান লেবু সাব (উপজেলা চেয়ারম্যান) আমার ছেলেকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে পাঠানোর পর আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে ডাক্তাররা ময়মনসিংহে আমার ছেলেকে রেফার্ড করছেন। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার চাই।”
এদিকে এ ঘটনার জেরধরেই ২০ মে বিকেলে নালিতাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করে পোষ্ট করতে দেখা গেছে। শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শোয়েব আহমেদ শাকিল বলেন, “আওয়ামলীগের একজন মেয়রের সামনে একজন ছাত্রলীগ কর্মী ও জেলা ছাত্রলীগের একজন পোষ্টেড নেতাকে মারধরের ঘটনা লজ্জাজনক। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মেয়রের সাথে থাকা ছেলেগুলোই সাব্বিরের উপর হামলা করেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, দ্রুত এর সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আানা হোক।”
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশির আহমেদ বাদল বলেন, “সাব্বিরের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে। আসামী গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।”
এদিকে এই ঘটনার পর উপজেলা চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন। তিনি বলেন, “যেহেতু ঘটনাটি উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘটেছে, তাই দপ্তরের নিরাপত্তার স্বার্থে দপ্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সিসি টিভি ফুটেজ দেখে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।”
নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক মুঠোফোনে বলেন, “এই ঘটনার সাথে আমি বা আমার কোন কর্মী সমর্থক জড়িত না। স্থানীয়ভাবে রাজনীতিতে আমাকে হেয় করার জন্যই এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যারা এই কাজের সাথে জড়িত আমি নিজেও তাদের বিচার চাই।”
নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোকসেদুর রহমান লেবু বলেন, “ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। উপজেলা পরিষদ ভবনে একজন ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা নিন্দার কাজ। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য অনুরোধ রইলো।”
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।