পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সন্ত্রাসী ইসরাইলকে থামানো না গেলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে না। অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সন্ত্রাসী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে জো বাইডেন মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কাজেই যে অপরাধে নেতানিয়াহু অপরাধী একই অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও অপরাধী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা দিয়ে ইসরাইলকে শক্তিশালী করছে। ফিলিস্থিনে সন্ত্রাসী ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ইসলামী দলের বিক্ষোভ-সমাবেশ ও বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। আজ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী সোমবার ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঢাকাস্থ জাতিসঙ্ঘ কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী ঐক্যজোট : ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি, আবর লীগসহ তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীরবতা দেখে মনে হচ্ছে, দখলদার ইসরাইলের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে তারাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনতিবলিম্বে ইসরাইলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে। কথিত জাতিসঙ্ঘ ভেঙে দিয়ে মুসলিমদের রক্ষায় মুসলিম জাতিসঙ্ঘ গঠন করতে হবে। একই সাথে ইসরাইলের সাথে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে সব ধরনের ক‚টনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সন্ত্রাসী ইসরাইলকে থামানো না গেলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে না। ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইলির গণহত্যার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরাইল ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হামলা করে নিরীহ নারী, পুরুষ ও শিশুদের গণহত্যা করছে। আমরা ইহুদিবাদী ইসরাইলের এমন বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা যখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় ইট, পাথর আর রকেট দিয়ে লড়াই করছে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ জঙ্গি রাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষেই সাফাই গাইছে। একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যুদ্ধাপরাধ করা সত্তে¡ও ইসরাইলকে তারা সমর্থন করছে। নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় বিশ^ সম্প্রদায়ের এমন নিরবতায় আমরা বিস্মিত। সন্ত্রাসী ইসরাইলকে থামানো না গেলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে না। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
মাওলানা হাসানাত আমিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আগ্রাসন ও হামলার প্রতিবাদ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবান জানান। এতে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে বোমা ও বিমান হামলার মাধ্যমে যেভাবে বেসামরিক লোকদের হত্যা করছে, তা দেখে কোনো মুসলমান নীরব থাকতে পারে না। অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সন্ত্রাসী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে জো বাইডেন মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কাজেই যে অপরাধে নেতানিয়াহু অপরাধী একই অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও অপরাধী। ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি, ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হামলা চললেও জাতিসঙ্ঘ নীরব। তারা ইসরাইলের বর্বরতা বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত সভায় পাস করতে পারেনি। পৃথিবীর প্রধান সারির রাষ্ট্রগুলোও নীরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় জাতিসংঘ, ওআইসি, আবর লীগসহ মানবাধিকারের ধ্বজাধারী তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীরবতা দেখে মনে হচ্ছে দখলদার ইসরাইলের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে তারাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনতিবলিম্বে ইসরাইলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে। কথিত জাতিসঙ্ঘ ভেঙে দিয়ে মুসলিমদের রক্ষায় মুসলিম জাতিসঙ্ঘ গঠন করতে হবে। একই সাথে ইসরাইলের সাথে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে সব ধরনের ক‚টনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সংগঠনের ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রশিদ মজুমদার, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা শেখ লোকমান হোসাইন, মাওলানা জিয়াউল হক মজুমদার, মুফতি জুনায়েদ বিন গুলজার, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, মাওলানা আব্দুল বাতেন, মুফতি আবুল খায়েল বিক্রমপুরী, মাওলানা মুমিনুল হক, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মাওলানা নুরুজ্জামান, রুবেল মজুমদার, মাওলানা আল আমিন মামুন ও ইসলামী ছাত্র খেলাফতের সেক্রেটারী মুহিউদ্দীন।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) : মুক্তিকামী ফিলিস্তিনের জনগণ আমাদের ভাই। ফিলিস্তিনের ভূখন্ডের বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত আঘাত মানে আমাদের সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ওপর আঘাত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়েই এই ইহুদিবাদী ইসরাইলি গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করেছে। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে নির্যাতনের শিকার মুসলমানদের সাহায্য করতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করতে হবে। ইসরাইলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের রূহের মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত এক দোয়া মাহফিলে দলের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এসব কথা বলেন। দোয়া পরিচালনা করেন এনডিএম এর যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনডিএম এর সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন, যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক মাকসুদুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আবু সায়েম, মো. মোমিনুল ইসলাম, যুব আন্দোলন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আদনান সানি, ছাত্র আন্দোলন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শেখ মো. ফরিদ। ববি হাজ্জাজ বলেন, একইসাথে আমাদের দেশের এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্যও আমরা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভিন্নমতের কেউই নিরাপদ নয়। গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করা এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী সব গোষ্ঠীর কৌশলগত নীরবতার কারণেই সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং সাংবিধানিক সব অধিকার আজ হুমকির মুখে। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ। পরে নিহত ফিলিস্তিনিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : আল আকসা মসজিদসহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় নারী শিশুসহ হতাহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দখলদারী ইহুদি সন্ত্রাসী ইসরাইল রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের মাধ্যমে যেভাবে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের কোনো বিবেকবান মানুষ তা মেনে নিতে পারে না। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরাইলকে বয়কট করতে হবে। জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ মুসলিম বিশ্বেকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উদ্ধারে এগিয়ে আসতে হবে।
আওয়ামী ওলামা লীগ ও সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ : ফিলিস্তিনে সন্ত্রাসী ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আজ বাদ জুমা আওয়ামী ওলামা লীগ ও সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নস এর সদস্য প্রিন্সিপাল ড. কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ এবং ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে আগামী সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ জাতিসংঘ কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইটে জমায়েত শেষে গণমিছিলে নেতৃত্ব দিবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ফিলিস্তিনী জনগণের উপর ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ, প্রতিবাদ সভা থেকে গণহত্যা বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে একমানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ কুমার দাশ। পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্যাংকার ফাতেমা আক্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে চন্দন ধর, খোরশেদ আলম, অধ্যাপিকা রেখা আলম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভুলুশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা আল্লামা আরেফ সারতাজ। বক্তব্য রাখেন আল্লামা এমদাদুল হক সায়ীফ, আল্লামা শেখ নঈম উদ্দীন, আল্লামা হাফেজ কারী ইলিয়াস শাহ, আল্লামা মুফতি রেজাউল কায়সার, মফিজুর রহমান প্রমুখ। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত, ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে নগরীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।