পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যতদিন অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে, ততোদিন পর্যন্ত প্রদর্শিত করার সুযোগ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন। নতুন অর্থ বছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে কি-না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপ্রদর্শিত টাকা কিভাবে হয়? এবারও সেটি কন্টিনিউ করব। যতদিন পর্যন্ত অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে ততোদিন আমরা এটি কন্টিনিউ করব। অর্থমন্ত্রী বলেন, অপ্রদর্শিত টাকা কি কি কারণে হয়? জমি রেজিস্ট্রেশন ফি আমরা অনেক রেখে দিয়েছি। মৌজার যে প্রাইজ রেখেছেন সেটা অনেক কম। মার্কেট প্রাইজে লেনদেন হলে অপ্রদর্শিত টাকা থাকত না। আমাদের সিস্টেমের কারণেই এখন বায়ার এবং সেলারের কাছে তাদের অপ্রদর্শিত টাকা থাকে, সেজন্য তারা বিপদে পড়ে। আগে ইনকাম ট্যাক্স রেট বেশি ছিল, কেউ দিত না। সেজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে ইনকাম ট্যাক্স রেট কমিয়ে এনেছি। এটা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের মতো যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের মূল্যায়ন করলে যাতে একইরকম পাওয়া যায় সেজন্য ব্যবস্থাটি আমরা নিচ্ছি। আমরা আশা করি অপ্রদর্শিত টাকা আমাদের ইকোনমিক সিস্টেম থেকে বিলীন হয়ে যাবে, থাকবে না। তবে কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি এখন যেভাবে আছে সেভাবে থাকবে কি-না সেটি এ মূহুর্তে বলা যাচ্ছে না, আগামী ৩ তারিখ এটি জানা যাবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সভায় করোনা সংক্রমণ রোধে জরুরি বিবেচনায় চীনের সিনোফার্মের তৈরি সার্স-কোভ-টু ভ্যাকসিন সরাসরি ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
করোনা রোগীর জন্য ৪০টি অক্সিজেন জেনারেটর সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে দুর্নীতির প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাত অত্যন্ত জরুরি বিষয়। তাদের দায়িত্ব ছিল এসব চাহিদার বিষয়ে যথাযথ সময় ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু তখন সেটি করা হয়নি। করোনা পৃথিবীতে সবার জন্যই প্রথম, তাই সবাই যে, সব কাজ সম্পর্কে অবগত থাকবে তাও না। যদি বার বার একই রকম মিসটেক হয় তাহলে এগুলো ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স থেকে বাদ যাবে। তবে এখন যেগুলো আসছে সেগুলো সবই নতুন।
করোনা সারাবিশ্বে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এরমাঝে কাজের পরিধি বাড়ছে। আমাদের এখন এগুলো চিন্তা না করে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে হবে। এই বিবেচনায় আমরা আজকে এটি অনুমোদন দিয়েছি। আমি একমত আরও আগে যথাযথভাবে যদি আমরা এগুলো করতে পারতাম তাহলে হয়ত আমাদের সাশ্রয় হতো। তারপরও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সবাইকে বলেছি সাশ্রয়ী হতে হবে।
পায়রার একটি প্রকল্প পাস হয়েছে, যেটি রিজার্ভ থেকে লোন নেয়া, এই টাকাটা কি তারা একেবারে পেয়ে যাবে-জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আগামী বৈঠকে জানানোর চেষ্টা করব। এই টাকাটা সরকার দিচ্ছে রিজার্ভ থেকে। টাকা কিভাবে খরচ করা হবে এবং আদায় হবে আমরা সেই বিষয়টি দেখছি।
পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ থাকা সত্যেও বিদ্যুতের নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট কেন অনুমোদন দেয়া হচ্ছে-জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যেসব এলাকায় পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে, সেখানে অনেক পুরাতন হওয়ায় রিপ্লেস করতে হবে। যার খরচ অনেক বেশি। সে জন্য এখানে নতুন ক্যাপাসিটি যুক্ত হবে না, পুরাতন যেটি ছিল সেটি ইনক্রিস হয়ে নতুনভাবে হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক সাহসী প্যাকেজ এবং সবগুলো ক্ষেত্রেই সঠিক উদ্যোগের কারণে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তিনি বলেন, দেশের মাথাপিছু আয় ১৬৩ ডলার বেড়েছে, একদিকে করোনায় অর্থনীতি চাপে ছিলে।
অর্থনীতির কোন দিকটা ভালো হওয়ার কারণে মাথাপিছু আয় বেড়েছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনার সময় যে সাহসী প্যাকেজগুলো নিয়েছেন একের পর এক এবং সবগুলো ক্ষেত্রেই তিনি স্পর্শ করেছেন। সে কারণেই আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রত্যেকটাই এখন উন্নতির দিকে, নেগেটিভ কিছু নেই। আমাদের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪৭ যা আগের মতোই আছে। দুর্যোগের মধ্যেও এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের পণ্য রফতানি ৩২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, যেটার গ্রোথ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেমিট্যান্সের গ্রোথ হলো ৪০ শতাংশ। ১১ মাসে রেমিট্যান্স হয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভে গত জুনে ছিলে ৩৬ বিলিয়ন ডলার, এখন এটি ৪৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এ মাসেই এটি ৪৫ বিলিয়ন ডলার হবে। আমরা আশা করি আগামী অর্থবছর নিঃসন্দেহে এটা ৫০ বিলিয়ন ডলার টাচ করবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নো পারফরমিং লোন অনেক কমে আসছে, এখন ৭ দশমিক ৬৬ আছে। গত বছরের জুনে ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। পুঁজিবাজারে গত বছরের জুনে ৩ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছিল। এখন সেটা বেড়ে ৪ লাখ ৯৫ হাজার হয়েছে। আমাদের জাতীয় রাজস্ব নিয়ে সবসময় বিচলিত থাকি, সেই জাতীয় রাজস্ব এপ্রিল পর্যন্ত গ্রোথ ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আপনাদের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে স্বীকার করতে হবে আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো করছি। ভালো করার পেছনে যুক্তি হলো প্রধানমন্ত্রী সময় উপযোগী, সময়মতো এবং প্রণোদনা দিয়েছেন যা প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছেছে। যারা চাকরি হারিয়েছেন, যারাক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অটিস্টিক সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। সে কারণেই টাকার সাপ্লাই এখন বেশি। বিশেষ করে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেক ভালো। আমাদের ইমপোর্ট আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে।
এসএমই খাতের বরাদ্দের টাকা দেয়া যায়নি, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা সিস্টেমে নিয়ে দিচ্ছি এটা। কোনো মিডলম্যান ব্যবহার করছি না। মিডলম্যান ব্যবহার করলে যাদের টাকা দিচ্ছি তারা পেত না। সেজন্য যাদের একাউন্ট নাম্বার নেই তাদের যার যে মাধ্যম আছে সেটি দেখে-শুনে দেয়া হচ্ছে। ১০ টাকা দিয়ে একাউন্টের বিষয়টি আনা হয়েছিল, যাতে তারা ব্যাংকমুখী হয়। সেটি করে আমরা তাদের ব্যাংকে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করেছি। আমরা সাহায্য ব্যাংকে দেব বলেই তাদের ব্যাংকমুখী করা হয়েছে।
সভায় করোনা সংক্রমণ রোধে জরুরি বিবেচনায় চীনের সিনোফার্মের তৈরি সার্স-কোভ-টু ভ্যাকসিন সরাসরি ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ২টি এবং জরুরি প্রয়োজনে টেবিলে একটি প্রস্তাবসহ মোট তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তিনটি প্রস্তাবেরই নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ চীন থেকে করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবটি হচ্ছে জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনা সংক্রমণ রোধে জরুরি বিবেচনায় চীনের তৈরি সার্স-কোভ-টু ভ্যাকসিন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাব। প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এটা ভ্যাকসিন ক্রয়ের একটি প্রস্তাব। এটা সিনোফার্মের ভ্যাকসিন। এখানে কী পরিমাণ, কতো দিনের মধ্যে আনা হবে এসব কিছু বলা হয়নি। শুধুমাত্র চীনের সিনোফার্ম থেকে সার্স-কোভ-টু ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রস্তাব ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর স্বীকৃতি দিয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ চীন থেকে টিকা সংগ্রহ করার অনুমোদন দিয়েছে। কী পরিমাণ সংগ্রহ করা হবে এবং কত টাকা লাগবে সেটা জানা যাবে যখন এ সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব কমিটির সভায় উপস্থাপন হবে। গত ১১ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা চীন থেকে ৪ থেকে ৫ কোটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবো। ইত্যোমধ্যে আমরা তাদের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। এছাড়া গত ১২ মে চীন থেকে উপহার হিসেবে করোনা ভাইরাসের ৫ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসেছে।
এছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বিসিআইসি থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ইউরিয়া সারের যোগান অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে (১) মুনতাজাত-কাতার হতে ৫ লাখ টন, (২) সাবিক-সউদী আরব হতে ৫ লাখ টন এবং (৩) ফার্টিগ্লোব-ইউএই হতে ২ লাখ ৮০ হাজার টনসহ সর্বমোট ১২ লাখ ৮০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।