Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈদে মেঘ-বৃষ্টি-রোদের আভাস

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২১, ১:১৭ পিএম

পবিত্র ঈদুল ফিতর আগামীকাল শুক্রবার। ঈদের দিনে আবহাওয়ার মতিগতি কেমন থাকবে? এ নিয়ে স্বভাবতই সবার মাঝেই কমবেশি আছে কৌতূহল। করোনা মহামারী সংক্রমণ বৃদ্ধির বর্তমান খারাপ পরিস্থিতিতে ঈদগাঁহে কিংবা খোলা মাঠে-ময়দানে ঈদের জামাত হচ্ছে না, ঈদ জামাত মসজিদে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে- সরকারের নির্দেশনায় তা-ই বলা হয়েছে। ঈদে বেড়ানো, ঘোরাফেরা হচ্ছে না তেমন। হলেও তা নিকটাত্মীয়-স্বজনদের গÐির মাঝেই থাকবে সীমিত। এ অবস্থায় আবহাওয়া কেমন যাবে?

আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট চ্যানেল সূত্রে আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, শুক্রবার ঈদের দিনে মেঘ-বৃষ্টি আর রোদ থাকবে দেশের বিভিন্ন এলাকা তথা বিভাগ-জেলা ভেদে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা আছে। বজ্রবৃষ্টি, বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। সার্বিকভাবে ঈদে মিশ্র রকমের আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক সময়েই বাস্তবে তেমন মিলছে না আবহাওয়ার পূর্বাভাস।
এদিকে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান বেশি থাকায় অনেক জায়গায় ভ্যাপসা গরম পড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল ৮৬ শতাংশ। শুক্রবারও এ অবস্থা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা। তবে সারা দেশে সার্বিক তাপমাত্রা সহনীয় আছে।

গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চাঁদপুরে ৩৬ এবং সর্বনিম্ন তেঁতুলিয়ায় ১৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার পারদ ছিল সর্বোচ্চ ৩৩.৫ এবং সর্বনি¤œ ২৫.২ ডিগ্রি সে.। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় তেঁতুলিয়ায় ২৯ মিলিমিটার। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টি হয় দমকা হাওয়াসহ।

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, দেশের সবক’টি বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ এবং বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার শেষ দিকে বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
অনাবৃষ্টি-খরা কাটছে

বৈশাখ মাসের একেবারে শেষের দিকে এসে দেশের প্রায় সর্বত্র কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে গত তিন-চার দিনে। এরফলে ধীরে ধীরে অসহনীয় তাপদাহ, অনাবৃষ্টি-খরা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গত মঙ্গলবার প্রায় সারাদেশে বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির ধারা অব্যাহত আছে। এরমধ্যে কোথাও কোথাও মৃদু কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে।
তবে মাত্র কয়েকটি দিন ব্যতিক্রম ও বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু জায়গায় ছাড়া প্রায় পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় এবার কালবৈশাখী ঝড় হয়নি। ফলে কালবৈশাখীর সঙ্গে ‘স্বাভাবিক’ যে বৃষ্টিপাত তাও হয়নি। বঙ্গোপসাগরে এখন পর্যন্ত কোন লঘুচাপ-নিম্নচাপের ঘনঘটাও নেই।
আবহাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, টানা ছয় মাস যাবত দেশ এবার খরার কবলে পড়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ মাসে সারাদেশে গড়ে ৯১ শতাংশই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত তথা খরা-অনাবৃষ্টি চলেছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা ও পূবালী বায়ুপ্রবাহের প্রভাব বা সংযোগ কম থাকায় এ বছর দীর্ঘ সময়জুড়ে খরা-অনাবৃষ্টি অথবা অল্পস্বল্প বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গেল এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসে সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৭৯ শতাংশই কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও গত মার্চ মাসে ৭৯ দশমিক ৬ শতাংশ কম, গত ফেব্রæয়ারিতে ৯৯ শতাংশ কম, গত জানুয়ারি মাসে ৯৭.৭ ভাগ কম এবং ডিসেম্বর মাসে ৯৮.৮ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়। এপ্রিলে দেশে দিনের সর্বোচ্চ ও রাতের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে যথাক্রমে ১.৭ এবং ০.২ ডিগ্রি সে. বেশিই ছিল। ২৫ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪১.২ এবং রাজধানী ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সে.। যা গত সাত বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভঙ্গ।
আসছে ফের তাপদাহ

দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি মে মাসে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঊর্ধ্বে) বয়ে যেতে পারে। তাছাড়া সারাদেশে মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দু’টি নি¤œচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের আভাস দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ