Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত ফরিদগঞ্জ পৌরবাসী বর্ষায় বেহাল সড়কে চলা দায়

দীর্ঘ এক যুগেও হয়নি পরিবর্তন

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বয়স প্রায় এক যুগ। যুগ ফেরিয়ে গেলেও পৌরসভাটি ভৌগোলিক চিত্র একটি অবহেলিত ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার চেয়েও খারাপ। পৌর নাগরিকরা বাহিরের মানুষের সাথে পৌর নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে দ্বিধা করে। কারণ এখানে নাগরিকরা পৌর সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। গত এক যুগে পৌরসভাটির ভাগ্যে চোখে পড়ার মতো কোনো বড় ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। তবে ভাগ্যের উন্নয়ন বা পরিবর্তন হয়েছে এখানকার জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন কর্মকর্তার। অনেকে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। দীর্ঘ ১৯ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভার রাস্তা-ঘাটের চিত্র দেখলে মনে হবে না এটা একটি খ-শ্রেণীর পৌরসভা। তার উপর পৌর এলাকার পল্লী বিদ্যুতের আচরণে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। মিনিটের মধ্যে কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া বা ভয়ঙ্কর লোডশেডিং-এর ফলে মানুষের বাসা-বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্সসামগ্রী প্রতিনিয়ত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ না থাকার ফলে সন্ধ্যার পূর্বেই দোকানপাট বন্ধ করে চলে যাওয়ায় সন্ধ্যার পর পৌরবাজার এক ভূতুড়ে পরিবেশে রূপ নেয়। কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও পেশাধারী দালালদের ভয়ে সাধারণ মানুষ পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহসও পাচ্ছে না। পাশাপাশি দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি কিংবা নেতারাও এ বিষয়ে কথা বলছেন না। ফলে এক নাজুক পরিবেশে পৌরবাসী জীবনযাত্রা অতিবাহিত হচ্ছে। সরেজমিনে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার চিত্র, ১৯ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটারের পৌরসভাটিতে গত পাঁচ বছরে মূল সড়কসহ মাত্র ৮শ’ মিটার রাস্তা রিপেয়ারিং ও কার্পেটিং করা হয়। বাকি বেশকিছু রাস্তার অবস্থা বেহাল। সাবেক মেয়র নির্বাচনের কয়েক দিন পূর্বে উন্নয়নের নামে তড়িঘড়ি করে বেশ কয়েকটি রাস্তা খুঁড়ে রাখলেও এখন সেই কাজ বন্ধ। ফলে দারুণ ভোগান্তিতে ভোগছে ওই এলাকার পৌর নাগরিকরা। এছাড়াও পৌরসভার মূল সড়কসহ তার শাখা-উপশাখার রাস্তার বেশকিছু অংশ জনচলাচলের প্রায়ই অনুপোযোগী। পৌর এলাকার প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে টিএন্ডটি মোড় পর্যন্ত প্রায় দুশ’ মিটার রাস্তার অবস্থা বর্ষার এই ভারি মৌসমে বর্তমানে ছোট-খাট খালে রূপ নিয়েছে। এই রাস্তায় মানুষের চলাচল করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়ত রাস্তাটিতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। অপরদিকে থানার মোড় থেকে কালিরবাজার রাস্তা বৃষ্টির আগে কিংবা পরে জনচলাচল প্রায়ই অনুপোযোগী। এই রাস্তাটি বর্তমানে খানাখন্দকে ভরপুর। রাস্তাটি দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচল করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও পৌর এলাকার কেরোয়া, মিরপুর, চরবসন্ত, ভাটিরগাঁ, সাফুয়া, বড়ালী এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর চিত্র খুবই ভয়ঙ্কর। এসব এলাকার বাড়িঘরগুলোতে প্রবেশের ছোট-খাট রাস্তাগুলো বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। সাবেক মেয়রের আমলে পৌর এলাকার কিছু রাস্তা ইটের সলিং করা হয়েছে। তা সময়মত সংস্কার না করায় এখন জনচলাচলের দারুণভাবে বেঘাত ঘটছে। সাফুয়াসহ কয়েকটি রাস্তার উন্নয়ন কাজ অনেক আগে টেন্ডার হলেও আজও সংস্কার হয়নি সেইসব রাস্তা। এছাড়াও আর্সেনিকযুক্ত পানির এলাকা ফরিদগঞ্জ পৌরসভা। এখানে গত পাঁচ বছরে মাত্র একশ’ ডিপটিউবওয়েল বসানো হয়েছে। যার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে এখন আর পানি ওঠে না। পৌর এলাকার প্রায় অর্ধেকেরও বেশি পরিবারের লোকজন আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করেন। পৌরসভার মাছ চাষকৃত চর, ঝিল বা পুকুর এলাকার পাশের রাস্তাগুলোর চিত্র আরো খারাপ। এসব এলাকায় রাস্তার পাশ্বে গাইড ওয়াল হয়েছে মাত্র ৪শ’ মিটার। বাকি আছে কয়েক হাজারেরও বেশি মিটার রাস্তা। পৌর এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। ডাকাতি নদী কোল ঘেঁষে পৌর এলাকা হলেও বর্ষা মৌসমে পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের বাড়িগুলোতে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়ে আছে। যার ফলে সৃষ্টি হয় দীর্ঘমেয়াদি ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। আর এই জলাবদ্ধতার ফলে অনেকের ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি নানা রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। তাছাড়া পানি সরবরাহের জন্য পরিকল্পনা মাফিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে প্রতি বছরই পৌরবাসী। তাছাড়া পৌর এলাকায় মরা ডাকাতিয়া নদীসহ ছোট-বড় খাল-বিলের নালাগুলো বন্ধ করে অপরিকল্পিত বাড়ি-ঘর নির্মাণ করায় পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পৌর অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুরো পৌরসভায় গত পাঁচ বছরে ড্রেন হয়েছে মাত্র ১.১০ কিমি। এ ড্রেনের অবস্থা বর্তমানে অচল। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন করায় ময়লা-আবর্জনায় ড্রেনটি বন্ধ হয়ে আছে। ড্রেন দিয়ে স্বাভাবিক পানি চলাচল হচ্ছে না। ফলে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে পৌরবাজারবাসী অতিষ্ঠ। পৌরবাজারসহ তার আশপাশে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাই বললেই চলে। বাজারসংলগ্ন কেরোয়া ব্রিজের কাছে পৌরসভার উদ্যোগে পাবলিক টয়লেট করা হলেও প্রয়োজনীয় পরিচর্যার অভাবে এখন তা পরিত্যক্ত। পর্যাপ্ত পরিমাণের স্ট্যাস্ট্রেট লাইটের অভাবে রাতের আঁধারে বাজারসহ পুরো পৌর এলাকা ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গত কয়েক বছরে অপরিকল্পিতভাবে সামান্য কিছু স্ট্যাস্ট্রেট লাইটের ব্যবস্থা করলেও তা এখন প্রায়ই বন্ধ। বর্তমান পৌর পরিষদ দায়িত্ব পাওয়ার এ সময়ের মধ্যেও এর কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র মাহফুজুল হকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পৌরসভার অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এডিপির বরাদ্দের বাহিরে পৌরসভার উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পৌর শাখায় বেশ কয়েকটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া পৌর এলাকায় নতুন পাঁচটি সড়কের পাকাকরণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষপর্যায়ে। যে কোনো সময় এর কাজ শুরু হবে। পৌরসভার সচেতন নাগরিকদের মেয়র মাহফুজুল হকের কাছে দাবি, পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর মধ্যে জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য সুপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বেহাল গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর উন্নয়ন, নাগরিক চলাচলের জন্য নতুন রাস্তা নির্মাণ, আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের জন্য ডিপটিউবওয়েল স্থাপন, পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে। পৌর এলাকার একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পৌর সুবিধা নিশ্চিত করে, পৌর নাগরিকদের পৌরকর বৃদ্ধি কিংবা নির্ধারণ করার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত ফরিদগঞ্জ পৌরবাসী বর্ষায় বেহাল সড়কে চলা দায়
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->