Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাছ নিয়ে টানাটানি বনবিভাগ ও ইউপি চেয়ারম্যানের

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাতের আঁধারে লাখ টাকার সরকারি গাছ কর্তন করলো দুষ্কৃতকারীরা
সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা

সীতাকুন্ডে মধ্যরাতে হানা দিয়ে লাখ টাকার সরকারি গাছ কেটে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। সোমবার উপজেলার সুলতানা মন্দির-খান্দানীপাড়া-আরবি টেক্সটাইল সড়ক থেকে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। খবর পেয়ে বনবিভাগের লোকজন পুলিশ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। পরে বন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে কাটা গাছগুলো নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনুমানিক ৩০/৪০ জন দুষ্কৃতকারী একযোগে কুমিরা রেঞ্জের অধীন সুলতানা মন্দির-খান্দানীপাড়া-আরবি টেক্সটাইল সড়কে উপস্থিত হয়ে ওই সড়কের পাশে লাগানো সরকারি ১০টি বড় গাছ কেটে ফেলে। এ খবর জানতে পেরে কুমিরা বনবিটের অফিসার এমএম কামাল উদ্দিন পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কামাল উদ্দিন তাদের সাথে সেখানে পৌঁছান। এদিকে পুলিশ ও বন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে গেলেও কাটা গাছগুলো ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। কুমিরা বিট অফিসের বিট কর্মকর্তা এমএম কামাল উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, মগপুকুর এলাকায় অবস্থিত জিপিএইচ কারখানার লোকজন তাদের ফ্যাক্টরির আয়তন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মধ্যরাতে বৃষ্টির মধ্যে ভাড়াটিয়া ৩০/৪০ জন লোক লাগিয়ে গাছগুলো কেটে ফেলে। এ খবর পেয়ে আমি পুলিশ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও আমাদের লোকজন ঘটনাস্থল পাহারা দিয়ে রাখলে মঙ্গলবার সকালে আমি অধিকাংশ কাটা গাছ উদ্ধার করে নিয়ে আসি। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের অধীন দাবি করে অবশিষ্ট গাছ নিয়ে যায়। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কাটা গাছগুলোর অধিকাংশই অর্জুন গাছ। এছাড়া ইউক্লিপটাস, আকাশ মণি, জারুল প্রভৃতি প্রজাতির গাছও রয়েছে। এতে গাছ কাটায় অন্তত ১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে আমাদের একটি বৈঠক হবে। বৈঠকে গাছ বনবিভাগেরর প্রমাণিত হলে আমরা সব গাছ নিয়ে আসব আর ইউনিয়ন পরিষদের হলে তারা নিয়ে যাবে। তবে তিনি দাবি করেন, ২০০১-০২ অর্থবছরে কুমিরা রেঞ্জের অধীনে ৬ কিলোমিটার সড়কে ৬ হাজার গাছ রোপণ করেছিল অভ্যন্তরীণ বন বিভাগ। এই ৬ কি.মি. এর মধ্যে সুলতানা মন্দির-আরবি টেক্সটাইল সড়কটিও ছিল। সেখানে ১০ জন উপকারভোগীকে গাছগুলো দেওয়া হয়। সেসময় এ বিষয়ে বনবিভাগ প্রথম পক্ষ ও এলজিইডি চট্টগ্রামের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে চুক্তি করে। তাই এ গাছগুলো যে বন বিভাগের তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে তার অভিমত। কুমিরা বিট কর্মকর্তা কামাল আরো বলেন, বৈঠকের পর জিপিএইচ ইস্পাত কারখানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। এদিকে সরকারি গাছ কাটা বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরী প্রতিবেদককে বলেন, আমার জানামতে যেখান থেকে গাছগুলো কাটা হয়েছে সে রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের। বনবিভাগ সেখানে গাছ রোপণ করলে ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নিয়েছে কিনা সেটা দেখার আছে। এ কারণে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে কিছু গাছ নিয়ে এসেছি। যদি কাগজপত্রে গাছগুলো বনবিভাগের হয় তাহলে তাদের দিয়ে দেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গাছ নিয়ে টানাটানি বনবিভাগ ও ইউপি চেয়ারম্যানের
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ